37 C
আবহাওয়া
৯:৫৫ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-১২

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-১২

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩৪

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কতিপয় উগ্রবাদী সেনা সদস্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করে।হত্যাকারিরা ক্ষমতাসীন হয়ে ওই বছর ২৬ সেপ্টেম্বর ‘ ইনডেমনিটি ‘ অডিন্যান্স জারি করে। যা পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে সেটিকে আইনে পরিণত করেন। হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে  ক্ষমতাসীন হয় আওয়ামী লীগ।

বাতিল করে ‘ইনডেমনিটি অ্যাক্ট’। এরপর ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকা জেলা দায়রা জজ আদালত ১৮ আসামির মধ্যে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। আসামিরা আপিল করেন। ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টে বিভক্ত রায় প্রকাশ হয়। পরে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকে।

কীভাবে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা মামলার বিচার হয়েছিল তা নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছে অজানা! বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি(বিএনএ) বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে।

আজ প্রকাশিত হল পর্ব-১২

(৩)আসামী লে. কর্ণেল মহিউদ্দিনের (আর্টিলারি)লিখিত বিবৃতি:

(২য় কিস্তি)

তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বলেন যে, তাহার কথামত ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কাগজে সই করিলে আমাকে আর পুলিশ রিমান্ডে আনা হইবে না। আমাকে মামলার সাক্ষী করিয়া ছাড়িয়ে দেয়া হইবে। আমাকে ২৭-১১-৯৬ তারিখে তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জনাব হাবিবুর রহমানের নিকট তাহার রুমে বেলা দেড়টার সময় নিয়ে যায়। সি.আই.ডি. অফিসার সমীর বাবু ও আরো কতক পুলিশ ঐ সময় ম্যাজিস্ট্রেটের রুমের আশেপাশে ছিল। তখন আমার হাতে হ্যান্ডকাফ দেওয়া ছিল। তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে ১টি লিখিত কাগজ দেন। উহা দেখিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব আব্দুল কাহার আকন্দ ও সমীর বাবুর উপস্থিতিতে অন্য কাগজে লেখে।

ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের রুমের মধ্যে একপাশে আমাকে হাতকড়া অবস্থায় আছরের নামাজের পর পর্যন্ত একটা চেয়ারে বসাইয়া রাখা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব যখন লিখতেছিলেন তখন আব্দুল কাহার আকন্দ ও উক্ত সি.আই.ডি. অফিসার সমীর বাবু ম্যাজিস্ট্রেটের সামনের চেয়ারে বসা ছিল। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবের লেখা শেষ হইলে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব আমাকে উহাতে স্বাক্ষর করিতে বলেন। সাথে সাথে কাহার আকন্দ সাহেবও উহাতে স্বাক্ষর করিতে আমাকে বলেন। আমি পুলিশ রিমান্ডের নির্যাতনের ভয়ে এবং সাক্ষী হইয়া খালাশ পাইব বলে মনে করিয়া ম্যাজিস্ট্রেটের লিখিত উক্ত কাগজে স্বাক্ষর করি যাহা আমার স্বেচ্ছাকৃত নহে।

উক্ত কাগজের লেখা আমার কোন বক্তব্য নহে এবং উহা সত্যও নহে। উহা পুলিশ অফিসারের মনগড়া লেখা। উহাতে কি লেখা ছিল তাহা আমাকে পড়িয়া শোনানো হয় নাই এবং আমাকে উহা পড়িতেও দেয়া হয় নাই। পরে তখন বুঝিতে পারিলাম যে, আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে আমার স্বাক্ষর লওয়া হইয়াছে। তখন ২০-৭-৯৭ইং তারিখে ঐ ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমানের সামনে আমাকে হাজির করা হইল, আমি মৌখিকভাবে তাহার কর্তৃক পূর্বের ঐ লিপিবদ্ধ কথিত জবানবন্দী বাতিল করতে বলি।

ঐ কথিত স্বীকারোক্তি আমার স্বীকারোক্তি নহে এবং উহা সত্য নহে। পরবর্তীতে লিখিতভাবে আমার নিযুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে কথিত স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে দরখাস্ত করা হইয়াছে। আমি ঐ মিথ্যা ও আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথিত স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করিয়াছি এবং এখনও প্রত্যাহার করিতেছি। এই মামলায় আমাকে মিথ্যাভাবে জড়িত করা হইয়াছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সমর্থনে যে সকল সাক্ষী আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়াছে উহা তদন্তকারী কর্মকর্তার শিখানো মতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়াছে। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।

আরও পড়ুন :

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-১১

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-১০

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৯

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৮
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৭
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৬
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-৫ম পর্ব

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-৪র্থ পর্ব

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-৩য় পর্ব

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পুর্ণাঙ্গ রায়-২য় পর্ব
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পুর্ণাঙ্গ রায়-প্রথম পর্ব

গ্রন্থনা: ইয়াসীন হীরা, সম্পাদনায়: এইচ চৌধুরী

Loading


শিরোনাম বিএনএ