তাহাকে কেন মেরেছে জিজ্ঞাসা করিলে ক্যাপ্টেন হুদা কোন উত্তর দেয় না তারপর সিঁড়ির কয়েক ধাপ উঠিয়া বঙ্গবন্ধুর মৃতদেহ দেখে হতভম্ভ হইয়া যায়। বুকে, পেটে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে পড়িয়া থাকিতে দেখে, দেশের প্রেসিডেন্টকে কেন এভাবে মারলেন জিজ্ঞাসা করলে, উত্তরে ক্যাপ্টেন হুদা বলেন, “আমি যখন দলবলসহ বঙ্গবন্ধুর কাছে যাই সে তখন বলে, তোমরা কেন আমার বাসায় এসেছ, কে তোমাদেরকে পাঠিয়েছেন? শফিউল্লাহ কোথায়- এই বলিয়া আমাকে ধাক্কা মারে তখন আমি পড়ে যাই। ইহার পর আবার বঙ্গবন্ধুকে গুলি করি।”
তারপর বঙ্গবন্ধুর বেডরুমের দরজায় বেগম মুজিবকে গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত লাশ দেখে বঙ্গবন্ধুর বেডরুমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত অবস্থায় আরো ৪টি মৃতদেহ পড়িয়া থাকিতে দেখে।
কেন এদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন? জিজ্ঞাসা করিলে ক্যাপ্টেন হুদা বলেন, “সশস্ত্র সৈনিকরা আউট অব কন্ট্রোল হইয়া এদেরকে হত্যা করিয়া লুটপাট করিয়াছে।” ক্যাপ্টেন হুদা আরো জানায়, কর্ণেল জামিলকে বাহিরে মারিয়া তাহার মৃতদেহসহ গাড়ী বাড়ীর ভিতর পিছনে রাখা হইয়াছে।
ইতিমধ্যে এতগুলি মৃতদেহ দেখে আমরা মানবিকভাবে বিপর্যস্ত হইয়া কর্ণেল জামিলের মৃতদেহ দেখার জন্য যাই নাই। এরপর ইউনিটে ফিরিয়া লে. কর্ণেল মতিউর রহমানকে মৌখিকভাবে ঘটনার কথা ও ক্যাপ্টেন হুদার বক্তব্য বিস্তারিতভাবে জানাই।
তথ্যসুত্র: বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায়, গ্রন্থনা ও সম্পাদনা- রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী। পৃষ্ঠা নং-৫৭ (চলবে)
পড়ুন আগের পর্ব :
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩৮
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩৭
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩৬
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩৫
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩৪
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩৩
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩২
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩১
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়-পর্ব-৩০
সম্পাদনায়: এইচ এইচ চৌধুরী, গ্রন্থনা: ইয়াসীন হীরা