29 C
আবহাওয়া
৯:৪১ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রাবিতে পুড়ছে গাছপালা, কেউ নেই দেখার

রাবিতে পুড়ছে গাছপালা, কেউ নেই দেখার


বিএনএ, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে পুড়ানো হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। পরিকল্পনা ছাড়াই বর্জ্য আগুন দিয়ে পুড়ানোর ফলে বড় কয়েকটি গাছের কাণ্ড পুড়ে গেছে। শুধু তাই নয়, কিছু ছোট গাছও পুড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে পরিবেশ বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের আওতাভুক্ত —বোটানিক্যাল পেস্টিসাইড রিসার্চ ফিল্ডের পাশেই যত্রতত্র পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। বর্জ্যের স্তুপে যেন এক ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে গবেষণা ফিল্ডের চারপাশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাড়ায় রয়েছে বেশ কয়েকটি ছাত্রী হল এবং শিক্ষকদের আবাসিক বাসভবন। দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে একটি রাস্তা রয়েছে যা সংযুক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সঙ্গে।

যে জায়গাটিতে পুড়ানো হচ্ছে এসব বর্জ্য ঠিক তার পাশেই রয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের স্থাপিত ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন’।

এসব ময়লা-আবর্জনা কার নির্দেশে পুড়ানো হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে সেকেন্ডারি স্টেশনের একজন কর্মচারী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এসব পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের এখানে ৬টি ভ্যান থেকে ক্যাম্পাসের ময়লা আসে, আমরা সেগুলোকে যথাযথভাবেই নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করি।”

বোটানিকাল পেস্টিসাইড রিসার্চ ফিল্ডের’ ফিল্ড ওয়ার্কার মো. আব্দুর রাকিব বলেন, “আবর্জনার স্তুপে এখানে যাতায়াত করাটাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এসব কার্যক্রমের ফলে মেহগনিসহ বেশ কয়েকটি বড় গাছ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেখতেই পাচ্ছেন, ছোট ছোট কিছু গাছ পুড়ে একদম ছাই হয়ে গেছে। ‘’

মো. আব্দুর রকিব আরও জানান, “অফিসের সময় শেষ হওয়ার পর আমরা তো এখানে থাকি না। গবেষণা ফিল্ডটিতে নিরাপত্তার দায়িত্বেও কেউ থাকে না’’

মতিহারের সবুজ চত্বর হিসেবে পরিচিত এই সুবিশাল ৭৫৩ একরে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পের বৃক্ষ শুমারির তথ্য অনুযায়ী, এই ক্যাম্পাসে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩০ হাজার ১৯১ টি বৃক্ষ রয়েছে। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার জন্য রয়েছে কৃষি প্রকল্প এবং বৃক্ষরোপণ ও সৌন্দর্যবর্ধন কমিটি। কিন্তু সবার আড়ালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা মাঠের পাশেই পুড়ছে পরিবেশ বন্ধু হিসেবে পরিচিত এসব বৃক্ষ। শুধু তাই নয়, কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এভাবে ময়লা-আবর্জনা পুড়ানোর ফলে পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এসব কর্মকাণ্ড।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সাবরিনা নাজ এই প্রসঙ্গে বলেন, “পেস্টিসাইড রিসার্চ ফিল্ডের সামনে বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে ময়লা-আবর্জনা অনেক দিন ধরেই জমে আছে। এগুলো অপসারণ করা যাচ্ছে না, কারণ সেকেন্ডারি স্টেশন পর্যন্ত যে রাস্তাটি রয়েছে, সেটি সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে আমাদের ক্যাম্পাসের ভ্যানগুলো ঠিকমতো যাতায়াত করতে পারছে না। আমি নিশ্চিত নই, তবে সম্ভবত স্টুয়ার্ড শাখা থেকে আবর্জনাগুলো পুড়িয়ে ফেলার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা থাকতে পারে”

সরাসরি বর্জ্য পুড়ানোটা বায়ু দূষণের পাশাপাশি পরিবেশের বিপর্যয় ঘটায় উল্লেখ করে অধ্যাপক সাবরিনা বলেন, “এটি এমন একটি জায়গায় হচ্ছে যেখানে আমাদের গবেষণা মাঠ রয়েছে। এই গবেষণা ফিল্ডে আমরা বেশ কিছু সংবেদনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। ফলে আমাদের গবেষণা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।”

গাছগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া প্রসঙ্গে বৃক্ষরোপণ ও সৌন্দর্যবর্ধন কমিটির এই সদস্য সচিব বলেন, “যতটুকু দেখেছি বড় কয়েকটি গাছ, যেগুলো বছরের পর বছর ধরে নানা প্রাকৃতিক যুদ্ধের মাধ্যমে বড় হয়েছে, সেগুলোর কাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিছু গাছের কাণ্ড এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে এগুলোর মূল কাণ্ডটাই ঝুঁকিতে চলে গিয়েছে।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, “এই রাস্তাটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। কিছু গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। কৃষি প্রকল্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে সমস্যাটির সমাধান করা হবে।”

বিএনএ/সাকিব,ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ