বিএনএ,ঢাকা: অভ্যন্তরীন নৌযান চলাচলে সনদধারী ড্রাইভার ও মাস্টার এর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে নৌ যানচলাচলে বিরাজ করছে এক ধরনের স্থবিরতা। কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার পর প্রায় দেড় বছর ধরে ড্রাইভারশিপ ও মাস্টারশিপ পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
সুত্র জানায়, অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অধ্যাদেশ (আইএসও) ১৯৭৬ অনুযায়ী, নৌযানে চালক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের দুই ধরনের যোগ্যতা নির্ধারণী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নৌযান পরিচালনার জন্য মাস্টারশিপ ও ইঞ্জিন পরিচালনার জন্য ড্রাইভারশিপ পরীক্ষা দিতে হয়। এ দুই ক্যাটাগরির প্রত্যেকটিতে পর্যায়ক্রমে তৃতীয় শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণি ও প্রথম শ্রেণি- এই তিন ধাপের পরীক্ষা নেওয়া হয়। মাস্টারশিপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা মূল চালক (মাস্টার) এবং ড্রাইভারশিপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ইঞ্জিন- চালক (ড্রাইভার) পদে নিয়োগ পান। সরকারি- বেসরকারি সকল নৌযানের ক্ষেত্রে এই বিধান অপরিহার্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, প্রত্যেক শ্রেণির পরীক্ষা বছরে অন্তত পাঁচবার নিয়ে থাকে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর। এই হিসেবে মাস্টারশিপ ও ড্রাইভারশিপ- দুই ক্যাটাগরিতে বছরে অন্তত ৩০ বার পরীক্ষা হয় এবং প্রতিপরীক্ষায় গড়ে ৮০ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। সব মিলিয়ে যোগ্যতা নির্ধারণী পরীক্ষায় বছরে আড়াই হাজার পরীক্ষার্থী পাস করেন।
সূত্র জানায়, আগামী ১২ অক্টোবর মাস্টার তৃতীয় শ্রেণির মাস্টারশিপ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ড্রাইভারশিপ পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে তা কেউ জানে না। ফলে অভ্যন্তরীণ নৌযানে সম্প্রতি যে ড্রাইভার সংকট তৈরী হয়েছে তার আশু সমাধানের সম্ভাবনা নেই।
এ অবস্থায় নৌযান মালিকরা সনদধারি মাস্টার ও ড্রাইভার ছাড়া জাহাজ চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষের ম্যাজিস্ট্রেট সনদধারি মাস্টার ও ড্রাইভার না পেয়ে মোটা অংকের জরিমানা করে যাচ্ছে।একই সঙ্গে সনদধারি মাস্টার ও ড্রাইভার ছাড়া নৌযান না চালানোর জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন। ফলে জরিমানা ও জাহাজ জব্দ থেকে রক্ষা পেতে অনেক নৌযান অলস বসে আছে। ফলশ্রুতিতে নৌযান মালিকদের লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে একই সঙ্গে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
অভিযোগ আছে, বঙ্গোপসাগর ও দেশের নদী বন্দর সমূহে চলাচলরত নৌযানগুলোর মাস্টার ও ড্রাইভারগণ তাদের সনদ নবায়নে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ঢাকাস্থ নৌ পরিবহণ অধিদপ্তর কতিপয় নানা অজুহাতে তাদের সনদ নবায়নে গড়িমসি করছে।ফলে সনদ নবায়ন না থাকায় মাস্টার ও ড্রাইভারগণকে ম্যাজিস্ট্রেটের জরিমানার কবলে পড়তে হচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইছা মিয়া বলেন, পর্যাপ্ত মাস্টার ও ড্রাইভার না পেয়ে অনেক জাহাজ মালিক নিরুপায় হয়ে সনদ ছাড়া মাস্টার ও ড্রাইভার দিয়ে জাহাজ চালাচ্ছে। তিনি দ্রুত এহেন সংকট নিরসনে নৌ পরিবহণ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে নৌ পরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর আবু জাফর মো: জালাল উদ্দিন (সি) পিসিজিএম, এনডিসি, পিএসসি, বিএন এর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিএনএনিউজ২৪, ওয়াই এইচ, এসজিএন