30 C
আবহাওয়া
৮:০৩ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ল্যাম্বরগিনি স্পোর্টস কার তৈরী করলেন গ্যারেজ মিস্ত্রি

ল্যাম্বরগিনি স্পোর্টস কার তৈরী করলেন গ্যারেজ মিস্ত্রি


বিএনএ, ময়মনসিংহ : ইউটিউবে ভিডিও দেখে ল্যাম্বরগিনি অ্যাভেন্টেডর এলপি-৭০০ মডেলের মতো দেখতে হুবুহু স্পোর্টস কার তৈরি করে হৈইচই ফেলে দিয়েছে গ্যারেজ মিস্ত্রি আব্দুল আজিজ। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা মানুষজন গাড়িটি একনজর দেখতে ভীড় করছেন।

কেউ সেলফি তুলছেন তো কেউ আবার গাড়িতে উঠে দেখছেন। আবার কেউ গাড়িতে চড়তে বায়নাও ধরছেন।

আব্দুল আজিজ ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকায় শাহাদত মোটর ওয়ার্কশপে মিস্ত্রীর কাজ করেন। তিনি জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলার নিলক্ষীয়া ইউনিয়নের জাকনীপুর গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে। তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত ওয়ার্কশপে মিস্ত্রীর কাজ করে আসছেন।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজেই গাড়ি বানানোর পরিকল্পনা করেন। পরে মোবাইল ফোনে ইউটিউবে ভিডিও দেখে বিশ্বখ্যাত স্পোর্টস কার ল্যাম্বরগিনি অ্যাভেন্টেডর এলপি-৭০০ মডেল’র গাড়ি তৈরির কাজে হাত দেন এই গ্যারেজ মিস্ত্রি। গাড়িটির বাহ্যিক দিকের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলেও ভেতরে এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। গাড়িটি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম।

আজিজ জানান, ২০২১ সালের শেষের দিকে টয়োটা স্টারলেট পুরোনো গাড়ি সংগ্রহ করেন। সেই গাড়ির বাইরের অংশ বাদ দিয়ে ল্যাম্বরগিনি মডেলের গাড়ি তৈরীর কাজ শুরু করেন। এরপর দীর্ঘ ১৫ মাসের প্রচেষ্টায় গাড়টি বাস্তবে রূপ নেয়। তবে, গাড়িটি বাস্তবে রুপ দিতে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মাঝে ১১ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

আজিজ আরও বলেন, এই গাড়িটি দেশে চালানোর অনুমতি নেই। সরকার যেন তার গাড়িটি চলাচলের অনুমতি দেয়। দীর্ঘ ১৫ মাস শ্রম দিয়ে একটা গাড়ি তৈরি করে যদি এটাকে রাস্তায় না চালাতে পারি তাহলে আমার পরিশ্রম বৃথা। তাছাড়া, গাড়িটি তৈরীর করতে ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছি। সরকার যদি আমাকে সহায়তা না করে তাহলে আমি পথে ফকির হয়ে যাব। সরকার সহায়তা করলে আমি কোনো ব্র্যান্ডের আদলে নয়, আমাদের নিজস্ব ডিজাইনের গাড়ি তৈরি করতে পারবো।

নগরীর শেওরা মুন্সিবাড়ি থেকে ব্যবসায়ী নাছির সোহেল চৌধুরী টিংটু তার ছেলেকে নিয়ে গাড়িটি দেখতে আসছেন। তিনি বলেন, আমার ছেলে মোবাইলে গেম খেলার কারণে এই গাড়িটির সাথে পরিচিত। গাড়ি তৈরীর ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ভাইরাল হওয়ায় দেখতে এসেছি। গাড়িটি দেখে আমার মনে হয়েছে। আব্দুল আজিজের মেধা আছে। তিনি সুযোগ পেলে আরও ভাল কিছু করে দেখাতে পারবেন। আমি বলব, আব্দুল আজিজকে যেন সরকার সহায়তা করে। তাহলে হয়তো দেশেই এমন গাড়ি তৈরী করা সম্ভব হবে।

মাসকান্দা আমিরাবাদ থেকে গাড়িটি দেখতে এসেছেন খোকন মিয়া নামে একজন। তিনি বলেন, গতকাল থেকেই গাড়িটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও টিভিতে দেখেছি। এমন গাড়ি তো দেশে তৈরী হয় না। তাই, গাড়িটি দেখতে এসেছি।

জেলার ত্রিশাল উপজেলা থেকে গাড়িটি দেখতে এসেছেন সাদ্দাম হোসেন নামে এক যুবক। তিনি বলেন, গাড়িটি বাস্তবে দেখা ও উঠার ইচ্ছা ছিল। তাই, ত্রিশাল থেকে এসে গাড়িটি দেখে গেলাম। আমি মনে করি, আব্দুল আজিজ একজন মেধাবী মানুষ। তাকে সরকারের সুযোগ দেয়া উচিৎ।

শাহাদত মোটর ওয়ার্কশপেে মালিক শাহাদাত হোসেন বলেন, আব্দুল আজিজ দীর্ঘদিন যাবত আমার গ্যারেজে কাজ করে আসছেন। তার এই গাড়ি তৈরীতে আমি আর্থিক সহায়তা করতে না পারলেও তাকে উৎসাহিত করেছি। এখন সরকারের কাছে আমাদের দাবি, সরকার যেন গাড়িটির রোড পারমিট ও তাকে সহায়তা করে। তাহলে সে আরও উন্নত মানের গাড়ি তৈরী করতে পারবে।

বিএনএনিউজ/হামিমুর রহমান/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ