29 C
আবহাওয়া
৮:৫৯ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চট্টগ্রামাবাসীর প্রাণের দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন 

চট্টগ্রামাবাসীর প্রাণের দাবিগুলো বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন 

বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি

চট্টগ্রাম: বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন, জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা, ভরাট, দখল ও দূষণ থেকে কর্ণফুলী নদী রক্ষা, চট্টগ্রামে পরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প গ্রহণ,চট্টগ্রামে দুটি বড় স্টেডিয়াম নির্মাণ, চট্টগ্রাম মহানগরে তিনটি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় একটি ও দক্ষিণ জেলায় একটি করে ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ, চট্টগ্রামকে বানিজ্যিক রাজধানী ঘোষণার পরিপুর্ণ বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করে বাণিজ্যিক রাজধানীর বিল পাস করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট দাবি জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরকে উপলক্ষ করে শনিবার(৩ ডিসেম্বর) সকালে সংগঠনের  স্থায়ী পরিষদের সভায় দাবিসমূহ পূণ:ব্যক্ত করা হয়।

সংগঠনের স্থায়ী পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দৈনিক পূর্বকোণ কার্যালয়ে সংগঠনের মহাসচিব আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শাকুর এর সঞ্চালনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ডাক্তার শেখ শফিউল আজম, স্থায়ী পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম নুরুল হক, স্থায়ী পরিষদের সদস্য লায়ন মুহাম্মদ নুরুল আলম।

সভায় বৃহত্তর উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির  স্থায়ী পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব আমার কাঁধে, ‘আমার মন চট্টগ্রামে পড়ে থাকে’, চট্টগ্রামের জন্য আমার মন কাঁদে’ তখন আমরা আমরা চট্টগ্রামবাসী আশান্বিত হই। তারই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের মত সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তাছাড়া দেশের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করে আরেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ উদ্যোগ নিয়েছেন। এসব জনগণের প্রতি ভালবাসা ও দেশপ্রেমের বহিপ্রকাশ। আপনার এমন সাহসিকতাপূর্ণ উন্নত মানসিকতা দেখে আমরা গর্ব এবং আশায় আস্থা রাখি। কিন্তু ঘাপটি মেরে বসে থাকা একটি অসাধু চক্র সব সময় সক্রিয় থাকে। ফলে আপনার সদিচ্ছা থাকা সত্বেও নেপথ্য ষড়যন্ত্রের কারণে চট্টগ্রামের কাঙ্খিত কিছু উন্নয়ন আলোর মুখ দেখছে না।

সভায় বক্তাগন বলেন, ষড়যন্ত্রের কারণে কালুরঘাট সেতু এখনও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। টানেলের মাধ্যমে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের যে সুফল  উঁকি দিচ্ছে, কেবল কালুরঘাট সেতুর অভাবে সে সুফল শতভাগ ভোগ করা নিয়ে সংশয় দেখা দেবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় চট্টগ্রাম নগরের দীর্ঘদিনের অভিশাপ খ্যাত জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কিন্তু অতি জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নেও ধীরগতি এবং দীর্ঘসূত্রীতা ভর করেছে। ব্যয় ও মেয়াদ দুটিই বাড়লেও কাজ কখন শেষ হবে, তা নিয়ে অন্ধকারে আছে নগরবাসী। অথচ এ প্রকল্পের সঙ্গে নগরবাসীর জলাবদ্ধতামুক্ত নাগরিক জীবনের সম্পর্ক। তাই আমরা চাই, প্রকল্পটি কাজের সঠিক মান বজায় রেখে বাস্তবায়ন করা হোক।

তাছাড়া, আমরা সবাই জানি, দেশের অর্থনীতির হৃৎপিন্ড চট্টগ্রাম বন্দর। এই বন্দরের প্রাণ কর্ণফুলী নদী। অথচ সেই কর্ণফুলী নদীরই এখন নাভিশ্বাস ওঠেছে। প্রতিনিয়ত ভরাট, দখল ও দূষণের কবলে পড়ে এটি এখন মরতে বসেছে। পরিণত হয়েছে শিল্প কারখানা-বাণিজ্য ও আবাসিক বর্জ্যরে ভাগাড়ে। তাছাড়া, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিতে ক্যাপিটেল ড্রেজিংয়ের কথা শুনা গেলেও তার দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন  কিংবা সুফল দেখা যাচ্ছে না। ফলে নাগরিক সংশয় আরো তরান্বিত হয়।

অন্যদিকে, পরিকল্পিত নগরায়নের কথা আমরা নগরবাসী শুনতে শুনতে এখন হয়রান। নেই পরিকল্পিত আবাসন প্রকল্প। অথচ দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর হিসাবে চট্টগ্রাম নগরকে বাসযোগ্য, আধুনিক ও বিশ্বমানের শহরে পরিণত করা এখন সময়ের দাবি।

তাছাড়া, যানজট নিরসন ও পরিস্কার পরিছন্ন নগর বাস্তবায়ন নগরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা হলেও তা এখনও অধরা। পক্ষান্তরে, চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয়। কিন্তু এই নগরে নেই শিশুদের জন্য খেলার পর্যাপ্ত মাঠ ও পাবলিক স্টেডিয়াম। চট্টগ্রামে দুটি বড় স্টেডিয়াম নির্মাণ আমাদের প্রাণের দাবি।

চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশার কী করুণ চিত্র, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস তা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। চট্টগ্রামে এখনও নেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা। ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালই এখনও বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রায় চার কোটি মানুষের নির্ভরতার প্রতীক। স্বাধীনতার পর ৫২টি বছর পার হলেও আরেকটি সরকারি হাসপাতাল চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠা হয়নি। এটি বড় পরিতাপের। তাই আমাদের দাবি, চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা, বন্দরে একটি, অক্সিজেন, বহদ্দারহাট একটি, বায়জিদ এক্সেস রোড, ফৌজদার হাট এলাকায় একটি সহ মহানগরে তিনটি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় একটি ও দক্ষিণ জেলায় একটি করে ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ করার পাশাপাশি বর্তমান সরকারী, বেসরকারী হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্ত আই সি ইউ বেড বৃদ্ধি করা, একই সঙ্গে দাবি করছি, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার।

পাশাপাশি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীয়করণ ও রাজধানী ঢাকার উপর চাপ কমাতে চট্টগ্রাম সহ পুর্বতন চার বিভাগকে প্রদেশ ঘোষণা করা, চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলাকে পৃথক জেলা ঘোষণা করে হাইকোর্টের বেঞ্চ চট্টগ্রাম স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করে চট্টগ্রামকে বানিজ্যিক রাজধানী ঘোষণার পরিপুর্ণ বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদে বিল উত্থাপন করে বানিজ্যিক রাজধানীর বিল পাস করে পরিকল্পিত অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বানিজ্য মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সচিবালয় চট্টগ্রাম স্থাপন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্ণর চট্টগ্রাম নিয়োগ দিয়ে ব্যাংক বিমা সহ বিভিন্ন ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে স্থাপন বা স্থানান্তর করে বানিজ্যিক রাজধানীর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির দাবীগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করে চট্টগ্রাম বাসীর প্রানের দাবী বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন করবেন।

বিএনএনিউজ২৪,জিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ