31 C
আবহাওয়া
১১:৪২ অপরাহ্ণ - মে ৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে নামছেন জেলেরা

মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে নামছেন জেলেরা


বিএনএ, রাঙ্গামাটি : টানা চার মাস ১২ দিনের দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ (বৃহস্পতিবার) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণে নামছেন জেলেরা। দীর্ঘদিন পর জেলে পল্লী ও ফিসারি ঘাটে চলছে হ্রদে নামার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এবার দীর্ঘকাল হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় প্রত্যাশা অনুযায়ী মাছ ধরা পড়বে বলে মনে করছেন জেলে ও ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, ৭২৫ বর্গ কিলোমিটারের কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করা, অবমুক্ত করা পোনা মাছের বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হয়। তবে এবার হ্রদে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় ১ মে এর পরিবর্তে ২০ এপ্রিল থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত তিন মাসের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু এর মধ্যেও কাপ্তাই হ্রদে প্রত্যাশিত পরিমাণ পানি না থাকায় দুই দফায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়। তবে ১ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হচ্ছে হ্রদে মৎস্য আহরণ।

জেলে পল্লীতে সরেজমিনে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সংবাদে জেলে পল্লীগুলোতে চলতে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। এখন অনেকটাই হাসিমুখ তাদের। ইতোমধ্যে জেলেরা তাদের নৌকার আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করে রেখেছে হ্রদের পাড়ে। কেউবা মাছ পরিবহনের বোটে রং লাগানোর কাজে ব্যস্ত দিন পার করছেন। বসে নেই নারীরাও, পুরুষের পাশাপাশি ঘরে বাইরে চলছে জাল সেলানোর কাজ। পুরাতন জাল সংস্কার বা নতুন জাল তৈরিতে ব্যস্ত তারা।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন সূত্র জানায়, কাপ্তাই হ্রদে ১০৫ এমএসএল (মিনস সী লেভেল) পানি থাকলেই অবমুক্ত করা পোনা বেড়ে উঠতে ও মা মাছগুলো প্রাকৃতিক প্রজননের পর্যাপ্ত সুযোগ পায়। তবে এবার কাপ্তাই হ্রদে কম বৃষ্টিপাত ও ভারতের মিজোরাম থেকে পানি না আসায় হ্রদের পানি প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়েনি। স্বাভাবিক সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং বর্ষার শেষ মুহূর্তে বৃষ্টিপাত হওয়ায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও অবমুক্ত করা পোনা সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারেনি। এই কারণে হ্রদে অবমুক্ত করা পোনা মাছগুলো বেড়ে উঠার যথেষ্ট পানি না পাওয়ায় জেলা প্রশাসন কাপ্তাই হ্রদে আরো দুই মেয়াদে ১ মাস ১২দিন মাছ আহরণের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ায়।

কয়েকজন জেলে জানান, তিন মাসের স্থানে প্রায় সাড়ে চার মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে মধ্যরাত থেকে মাছ আহরণের জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন। দীর্ঘ সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অনেকে কষ্টে ছিলেন এবার কষ্ট দূর হবে। দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার পর্যাপ্ত মাছ আহরণ করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।

পুরান জেলে পাড়ার বাসিন্দা সজল দাশ বলেন, তিন মাসের ভিজিএফ ২০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র দুই মাস পেয়েছি। আমাদের চলতে কষ্ট হচ্ছে। তবে খুলে দেওয়ার খবরে আমরা খুবই আনন্দিত।

রাঙামাটি জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া বলেন, এবার প্রায় সাড়ে চার মাস হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ ছিল। তাই আশা করছি, এবার মাছের আহরণ ভালো হবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। বর্ষার শেষ দিকে বৃষ্টিপাতের পর মাছ বৃদ্ধিতে কিছুটা সময় পাওয়ায় মাছের সাইজও বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমাদের প্রস্তুতি সেরে নেয়া হয়েছে। পল্টুন মেরামত, মাছের অবতরণ ঘাটগুলো পুনঃসংস্কারসহ নানান কার্যক্রম শেষ হয়েছে। মাছের অবতরণ সময় নির্ধারণসহ ব্যবসায়ীদের সাথে সভা করে আমাদের প্রস্তুত সেরে নিয়েছি। যেহেতু এবার দীর্ঘ সময় হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ ছিল আশা করছি ভালো পরিমাণ মাছ আহরণ হবে। এতে সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।

বিএনএনিউজ/কাইমুল ইসলাম ছোটন/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ