39 C
আবহাওয়া
৩:১৮ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল : সংসদীয় আসন-৬ (দিনাজপুর-১) (ভিডিও)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল : সংসদীয় আসন-৬ (দিনাজপুর-১) (ভিডিও)



বিএনএ, ঢাকা:
বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ(১২তম) জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনী হালচাল প্রকাশ করছে। আজ(১৯ মার্চ ২০২৩) থাকছে সংসদীয় আসন-৬(দিনাজপুর-১) আসনের হালচাল।

 

১৩টি উপজেলা নিয়ে গঠিত দিনাজপুর জেলা

বাংলাদেশের উত্তরের জেলা দিনাজপুর। উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বিভাবে বিস্তৃত দিনাজপুর জেলার উত্তরে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট, পূর্বে নীলফামারী ও রংপুর জেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। ১৩টি উপজেলা নিয়ে দিনাজপুর জেলা গঠিত হলেও জাতীয় সংসদের আসন রয়েছে ৬টি।

YouTube player

প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন

দিনাজপুর- ১ সংসদীয় আসনটি বীরগঞ্জ ও কাহারোল নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ৬ নম্বর আসন। ১৯৭৩ সালের ৭ই মার্চ অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি রংপুর- ৬ নামে পরিচিত ছিল। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ১২ হাজার ২শত ৪১ জন। ভোট প্রদান করেন ৫১ হাজার ২ শত ৪ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কমর উদ্দিন আহাম্মদ বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৫ হাজার ২৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ন্যাপ মোজাফফর এর আব্দুস সালাম। কুঁড়েঘর প্রতীকে তিনি পান ৩ হাজার ৩ শত ৬৪ ভোট।

দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন

১৯৭৯ সালের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি দিনাজপুর -৬ নামে পরিচিত ছিল। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৪ শত ১২ জন। ভোট প্রদান করেন ৫৫ হাজার ৫ শত ৪৪ জন। নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম রহমান শাহ। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২৫ হাজার ৯ শত ১০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এটিএনএম আমিনুল ইসলাম। তিনি পান ১৯ হাজার ৭ শত ৯০ ভোট।

তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন

১৯৮৬ সালের ৭মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি দিনাজপুর-১ নামকরণ হয়। নির্বাচনে ৭৫ হাজার ৩ শত ৬০ জন ভোট প্রদান করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল মালেক সরকার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৬ হাজার ৫ শত ৯৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির আমিনুল হক রিজু। তিনি পান ১৮ হাজার ২শত ৬৭ ভোট। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি।

চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ চতুর্থ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পার্টির আনিসুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৭১ হাজার ১৭ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রার্থী কাজিরুল ইসলাম। তিনি পান ৮ হাজার ৮ শত ৫৬ ভোট। আওয়ামীলীগ, বিএনপিসহ রাজনৈতিক দল গুলো এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি।

 

৫ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন

এরশাদ সরকারের পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮২ হাজার ১ শত ২৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৩শত ৫৯ জন। আওয়ামী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫৭ হাজার ১ শত ৯১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়েত ইসলামী প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কাফি। দাঁড়ি পাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৩৫ হাজার ৫ শত ৯৮ ভোট।

 

সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ৮ শত ১৯ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮ শত ৯৩ জন। মহাজোট প্রার্থী আওয়ামী লীগের আব্দুর রৌফ চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬০ হাজার ৬ শত ৮১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির সৈয়দ আহমেদ রেজা হোসেন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৩২ হাজার ৪ শত ৩৭ ভোট।

৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ২ লাখ ৩১ হাজার ৬ শত ৫৫ জন। চার দলীয় জোট সমর্থিত জামায়েত ইসলামী প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কাফি বিজয়ী হন। দাঁড়িপালা প্রতীকে তিনি পান ৮৮ হাজার ৬ শত ৬৯ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের আব্দুর রৌফ চৌধুরী। তিনি পান ৬০ হাজার ১ শত ৯৭ ভোট।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ৯ শত ৫৮ জন। মহাজোট সমর্থিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপাল বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৭ ভোট। চারদলীয় জোট সমর্থিত জামায়েত ইসলামীর প্রার্থী দাড়িপালা প্রতীকে পান ১ লাখ ৭ হাজার ১ শত ৬৮ ভোট।

 

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৩ লাখ ৮ হাজার ৯ শত ৭৩ জন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় থাকা বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী এবং তাদের সমমনা দলগুলো অংশ নেয় নি। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি এবং তাদের সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়। এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোরঞ্জন শীল গোপাল বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২৩ হাজার ৯ শত ৬৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ওয়ার্কাস পার্টির আব্দুল হক। হাতুড়ি প্রতীকে তিনি পান ২৫ হাজার ৪৩ ভোট।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং বিএনপি সমর্থিত জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টসহ নিবন্ধিত সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়।
নৌকা প্রতীকে মনোরঞ্জন শীল গোপাল, ধানের শীষ প্রতীকে মোহাম্মদ হানিফ, নাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির শাহিনুর ইসলাম, হারিকেন প্রতীকে মুসলিম লীগের সৈয়দ মনজুর উল করিম, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলনের আশরাফুল আলম, হুক্কা প্রতীকে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির আরিফুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

দিনাজপুর-১ আসনে ২০১৮ সালে মনোরঞ্জন শীল গোপাল বিজয়ী হন

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোরঞ্জন শীল গোপাল বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭ শত ৯২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির মোহাম্মদ হানিফ। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৮৭ হাজার ৯ শত ২৮ ভোট। কারচুপির অভিযোগে ফলাফল প্রত্যাখান করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই জয়ী হন। শুধু চতুর্থ সংসদে জাতীয় পার্টি ও অষ্টম, সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর দখলে ছিল এই আসনটি।

দ্বাদশ(১২তম) জাতীয় সংসদ নির্বাচন

মাঠ পর্যায়ের জরিপে দেখা যায় দিনাজপুর-১ সংসদীয় আসনে সাংগঠনিক দিক থেকে এগিয়ে আছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপিরও রয়েছে শক্ত অবস্থান। দ্বাদশ(১২তম) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে হবেন, দিনাজপুর-১ আসনের জনপ্রতিনিধি? তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত।

১২ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন(সরকারি ভোট) কবে হবে

জাতীয় সংসদ সূত্রে জানা যায়,  ২০২৩ সালের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশের দ্বাদশ(১২ তম )জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে(সরকারি ভোট ) নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করছে। এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনএনিউজ২৪/ শিরীন সুলতানা, রেহেনা ইয়াসমিন , ওয়াইএইচ

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ