32 C
আবহাওয়া
৯:৫৮ অপরাহ্ণ - মে ১৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ১ নভেম্বর থেকে পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচল শুরু

১ নভেম্বর থেকে পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচল শুরু


বিএনএ, ঢাকা: পদ্মা সেতু দিয়ে ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হবে আগামী ১ নভেম্বর থেকে। নতুন রুটটি এখন যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু হয়ে ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করেছেন। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হচ্ছে শিগগিরই।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে সংযোগ স্থাপনের পাশাপাশি এই প্রকল্প দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। এই রেল সংযোগ সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে গেলে এটি ঢাকা থেকে যশোর, খুলনা এবং অন্যান্য জেলার মধ্যে যাতায়াতের সময় অর্ধেক কমিয়ে আনবে, দেশের রেল যোগাযোগকে এটি বড় ধরনের উৎসাহ দিতে সহযোগিতা করবে। এই রেল সংযোগ দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে, কারণ দেশের ৬৪টি জেলাকে পর্যায়ক্রমে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায়ও আনা হবে।

তিনি বলেন, এই রুট দিয়ে প্রথম ধাপে সুন্দরবন, বেনাপোল ও মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। মধুমতি এক্সপ্রেস পদ্মা উত্তর পাড়ি দিয়ে ভাঙ্গা হয়ে রাজশাহী যাবে। সুন্দরবন এক্সপ্রেস পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা যাবে এবং বেনাপোল এক্সপ্রেস পদ্মা সেতু হয়ে যশোরের বেনাপোল যাবে।

এদিকে প্রথম প্রস্তাবনায় ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে।

প্রথম প্রস্তাবনায় ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে মেইল ট্রেনে ১২০ টাকা, কমিউটার ট্রেনে ১৪৫ টাকা, আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারে ৩৫০ টাকা, এসি চেয়ার ৬৬৭ টাকা, এসি সিট ৮০৫ টাকা ও এসি বার্থ ১২০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

সংশোধিত প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মেইল ট্রেনে ৮০ টাকা, কমিউটার ট্রেনে ১০০ টাকা, শোভন চেয়ার ২৩০ টাকা, এসি চেয়ার ৪৪৩ টাকা, এসি সিট ৫২৯ টাকা ও এসি বার্থ ৭৯৪ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (সিসিএম) নাজমুল ইসলামকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়। রেল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রস্তাবনায় বলছে, ট্রেনের ভাড়া বাড়ার পেছনে প্রধান দুটি বিষয় উঠে এসেছে। একটি পদ্মা সেতু অপরটি গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথ।

এই পথের জন্য অতিরিক্ত পথ যোগ করে ভাড়া বেশি ধরা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুকে ১৫৪ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।

অন্যদিকে গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। প্রায় ২৩ কিলোমিটার উড়ালপথকে ১১৫ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ জন্যই ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও রেলওয়ে পদ্মা সেতু ও কেরানীগঞ্জের উড়ালসেতুর জন্যে দূরত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫৩ কিলোমিটার।

ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ১০টি স্টেশন রয়েছে এবং স্টেশনগুলোর আধুনিকায়ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন তলা বিশিষ্ট দেশের বৃহত্তম ভাঙ্গা রেলস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই স্টেশনটি ১২টি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে গঠিত একটি হাব এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত ধরণের ব্যবস্থা রযেছে। স্টেশন ভবনের নিচতলা দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে।

ভাঙ্গা নতুন রেলওয়ে স্টেশনটি অত্যাধুনিক কম্পিউটার ভিত্তিক ইন্টারলিঙ্ক সিস্টেমে সজ্জিত করা হয়েছে, যা ট্র্যাকের ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ট্রেন চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

ইতোমধ্যে মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশনের ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ঢাকা-মাওয়া অংশের ৮৫ শতাংশ এবং ভাঙ্গা-যশোর সেকশনের ৮০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে এবং ৮৫ শতাংশের বেশি কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি কাজ আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই রেলওয়ে প্রকল্পে ২০টি স্টেশন রয়েছে। স্টেশনের সব কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ঢাকা-ভাঙ্গা সেকশনের ১০টি স্টেশনই ১ নভেম্বর থেকে চালু হবে। যাত্রীসেবার জন্য লিফট ও এসকেলেটরের কাজসহ যাত্রীসেবার জন্য কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।

বিএনএ নিউজ/এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ