28 C
আবহাওয়া
১২:০৬ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন অফিসে হয়রানি, সুব্রত ধরাছোঁয়ার বাইরে

চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন অফিসে হয়রানি, সুব্রত ধরাছোঁয়ার বাইরে

চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন অফিসে হয়রানি, সুব্রত ধরাছোঁয়ার বাইরে

বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সুব্রত দত্তের হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। তিনি আইডিইএ প্রকল্পের অধীনে আউটসোর্সিং কর্মচারী হলেও সরকারি কর্মকর্তার ভাব নেন। ওই অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন (এনআইডি), বিতরণ ও ভোটার রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কাজ করতে প্রতিদিন হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে। এসব সেবাপ্রার্থীদের জিম্মি করে তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ টাকা। তাকে টাকা না দিলে  মাসের পর মাস ওই অফিসে ঘুরেও কাজ হয়না। । একবার থেকে দুই বার তার কাছে কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষেপে যান।

অভিযোগ রয়েছে, সুব্রত দ্ত্ত জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দিয়ে অফিসের বাইরে যোগাযোগ করতে বলেন। অফিসের বাইরে তাদের সঙ্গে লেনদেন করেন। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে এ অফিসে কর্মরত রয়েছেন তিনি। ফলে রোহিঙ্গাদের ভোটার ও এনআইডি জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে সুব্রত।

২০১৯ সালে রোহিঙ্গাদের ভোটার ও এনআইডি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত জয়নাল আবেদিনসহ চক্রের সদস্যরা ধরা পড়ে। গ্রেফতার জয়নাল আবেদিনসহ ৩ কর্মচারীর তথ্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের চট্টগ্রাম জোনের ২৭ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নাম বেরিয়ে আসে। পরে তাদের গ্রেফতারের অনুমতি চেয়ে নির্বাচন অফিসে চিঠি পাঠায় (সিটিইউ) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এরপর আরও ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে অন্তত ২৫ জন। এ জালিয়াত চক্রের সঙ্গে জড়িত সুব্রত দত্তও অধরা রয়েছেন।

শুধু মাত্র সুব্রত নয় আইডিইএ প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে ৩৯ জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর রয়েছে। আউটসোর্সিং’র মাধ্যমে নিয়োগকৃত এসব কর্মচারী সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি করেন।  তারা রোহিঙ্গাদের ভোটার ও এনআইডি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। নির্বাচন কমিশন অফিসে যাবতীয় অপকর্ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মুলহোতা এসব আউটসোর্সিং কর্মচারী।

মো. রেজাউল করিম নামে এক ভুক্তভোগি জানান,  ২০১৫ সালে নগরীর কাজেম আলী হাইস্কুলে ভোটার হন তিনি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তিনি হাতে পায় নি। তার এনআইডি কার্ডের বিষয়ে জানতে ১ মাস ধরে তিনি চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন অফিসে আসা-যাওয়া করছেন। কেউ তাকে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিচ্ছেন না। গত সপ্তাহে ১০৬ নম্বর কক্ষের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর সুব্রত দত্তের স্মরণাপন্ন হন। তিনি এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় কোতোয়ালী থানা নির্বাচন অফিসার তানজিদা ইয়াসমিনের কাছে যান তিনি। তিনি সুব্রতকে এ বিষয়ে তথ্য দিতে বলেন। পরে সুব্রত সার্ভার দেখে বলেন, এখানে তার কোনো তথ্য নেই। এই কাজটি তার করতে সময় লেগেছে দুই মিনিট। ওই দিন রেজাউলকে জন্মনিবন্ধন ও তার বাবা-মার এনআইডি কার্ড নিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন সুব্রত।

আজ এসব কাগজপত্র নিয়ে সুব্রত দত্তের কাছে গেলে তিনি খুব ব্যস্ত জানিয়ে পরের সপ্তাহে আসতে বলেন। শেষ পর্যন্ত জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে যান তিনি। তিনি নিবন্ধন স্লিপে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখে দেন। এটি দেখার পর সুব্রত সার্ভার দেখে লিখে দেন ‘পাওয়া যাচ্ছে না (এনএফ)’। এ কাজটি করতে তার সময় লেগেছে তিন মিনিট। এভাবে প্রতিনিয়ত মানুষকে হয়রানি করছেন সুব্রত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুব্রত দত্ত বলেন,  এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসেন। এসেই আমার কক্ষে ঢুকেন। সব কাজতো আমি করতে পারি না। এতে হয়তো কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে এসব কথা বলছে। আমি কোনো প্রকার অনিয়ম- অপকর্মের সঙ্গে জড়িত নই।

চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,  এখানে কোনো প্রকার অপকর্মের সুযোগ নেই। কারও বিরুদ্ধে সুনিদির্ষ্ট অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিএনএনিউজ২৪.কম/আমিন, ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ