36 C
আবহাওয়া
২:৪৬ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » লঞ্চে আগুন, প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নৌ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি

লঞ্চে আগুন, প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নৌ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি

লঞ্চে আগুন, প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নৌ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি

বিএনএ ঢাকা: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় লঞ্চটির চার মালিক, মাস্টার ও ড্রাইভারদের দায়ী করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি। মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেন কমিটির আহ্বায়ক ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. তোফায়েল ইসলাম।

তদন্ত প্রতিবেদনে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে ২৫ দফা সুপারিশ ও করণীয় উল্লেখ করা হয়েছে।

সদরঘাটে কর্মরত নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা করেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, অভিযান-১০ লঞ্চটি চাঁদপুর ঘাট অতিক্রম করার পর ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেয়। ইঞ্জিনের ত্রুটি সারাতে ব্যর্থ হওয়ায় লঞ্চটি আর না চালিয়ে নিরাপদ কোনও ঘাটে আগেই ভেড়ানো উচিত ছিল। অনেক যাত্রী লঞ্চটি ভেড়ানোর অনুরোধও করেছিলেন। কিন্তু এই বিষয়ে কর্ণপাত না করে ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চটি চালাতে থাকেন মাস্টার ও ইঞ্জিন ড্রাইভার। লঞ্চে লাগা আগুন নেভানোর কোনও চেষ্টা করা হয়নি। আগুন লাগার পর লঞ্চটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় আনুমানিক ১৫ মিনিট চলার পর ঝালকাঠির ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চর বাটারাকান্দা গ্রামে নদীর পাড়ে ভিড়ে লঞ্চটি। এখানেই লঞ্চের প্রথম শ্রেণির ইঞ্জিন ড্রাইভার মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় শ্রেণির ইঞ্জিন ড্রাইভার আবুল কালাম ও কর্মরত গ্রিজাররা (ইঞ্জিনকক্ষের সহকারী) পালিয়ে যান। নোঙর করা বা লঞ্চটি বাঁধার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া সত্ত্বেও সে চেষ্টা করা হয়নি।

লঞ্চটি প্রথম যেখানে ভিড়েছিল, সেখানে নোঙর না করায় বা বেঁধে না রাখায় জোয়ারের কারণে সেটি পুনরায় মাঝনদীতে চলে যায়। পুড়তে পুড়তে লঞ্চটি প্রায় ৪০ মিনিট পর নদীর অপর পাড়ের দিয়াকুল গ্রামে ভিড়ে। ওই সময়ে অনেক যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হন। জীবন বাঁচাতে অনেকে নদীতে লাফ দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হলে; লঞ্চটি চর বাটারাকান্দায় নোঙর করলে হয়তো আগুনের তীব্রতা এত বৃদ্ধি পেত না। এত যাত্রীর প্রাণহানি ঘটতো না। লঞ্চের ইঞ্জিন থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

মালিকদের দায় উল্লেখ করে করে তদন্ত কমিটি বলছে, নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী লঞ্চটির দুইটি ইঞ্জিনের মোট ক্ষমতা ছিল ১১০০ অশ্বক্ষমতার (বিএইচপি)। কিন্তু  নৌপরিবহন অধিদফতরের অনুমতি না নিয়ে সনদের শর্ত ভেঙে অন্য জাহাজের পুরনো ৩০৩৬ বিএইচপির ইঞ্জিন সংযোজন করে মালিকরা। পরিবর্তিত ইঞ্জিন লঞ্চটির জন্য উপযুক্ত কিনা, তা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষা করানো হয়নি।

অভ্যন্তরীণ জাহাজ বিধিমালা অনুযায়ী, কোনও নৌযানে ১০২০ কিলোওয়াট বা ১৫০১.৯২ বিএইচপির চেয়ে বেশি ক্ষমতার ইঞ্জিন সংযোজন করলে লঞ্চে ইনল্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ার (আইএমই) নিযুক্ত করতে হয়। কিন্তু লঞ্চটিতে এই পদের কেউ ছিলেন না।

নৌপরিবহন অধিদফতরের অনুমতি না নিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ডকইয়ার্ডে লঞ্চটিতে পুরনো ইঞ্জিন সংযোজন করার কারণে ডকইয়ার্ডের মালিককেও এই ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।

এদিকে, কম লঞ্চ চালিয়ে বেশি মুনাফা অর্জনের রোটেশন প্রথা বন্ধের সুপারিশ করেছে কমিটি। মালিকদের এই ধরনের কৌশলের কারণে প্রয়োজনের তুলনায় কম লঞ্চ থাকে। এই সুযোগে লঞ্চে গাদাগাদি করে যাত্রী তোলা হয়। এতে দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে বলে উল্লেখ করা হয়।

বিএনএনিউজ/আরকেসি

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ