24 C
আবহাওয়া
৫:০০ পূর্বাহ্ণ - মার্চ ২৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রমজানেও গুনাহ না ছাড়ার পরিণতি কী

রমজানেও গুনাহ না ছাড়ার পরিণতি কী

রমজান

ধর্ম ডেস্ক: মাহে রমজান মুমিন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। এই মাস রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস। গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য মোক্ষম এক সুযোগ লাভ হয় রমজানে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় রমজানের রোজা পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত (নামাজ) আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ বুখারি: ১৮৮৭)

রাসুলুল্লাহ (স.) আরও ইরশাদ করেছেন, ‘রোজা ঢালস্বরূপ, যতক্ষণ না তা ত্রুটিযুক্ত করা হয়।’ (সুনানে নাসায়ি: ২২৩৩)
এই মাসে যারা আল্লাহকে ভয় করে না, গুনাহের কাজ পরিত্যাগ করে না, তারা নিতান্তই হতভাগা। তাদের রোজার গুরুত্ব আল্লাহর কাছে নেই। এজন্যই রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও তদনুযায়ী আমল করা বর্জন করেনি, তার এই পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (সহিহ বুখারি: ১৮০৪)

অপর হাদিসে এসেছে, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, যাদের রোজা পালনের সার হলো তৃষ্ণার্ত আর ক্ষুধার্ত থাকা।’ (সুনানে তিবরানি: ৫৬৩৬)
অথচ ক্ষমা লাভের জন্য চমৎকার একটি সুযোগ পবিত্র রমজান। কেননা এই মাস হলো তাকওয়া অর্জনের মাস। তাকওয়ার মূল কথা হলো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার মূল কারণই হলো তাকওয়া অর্জন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া (আল্লাহভীতি) অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)

সুতরাং পবিত্র মাসে গুনাহ পরিত্যাগ করার বিকল্প নেই। এছাড়াও পবিত্র রমজানে বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে বান্দা দোয়া করলেই আল্লাহ কবুল করেন এবং গুনাহ ক্ষমা করেন। স্বয়ং রোজাও পাপ মার্জনার মাধ্যম। কেননা রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোজা পালন করবে, আল্লাহ তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন।’ (সহিহ বুখারি: ১৯০১)

তাই রমজানে গুনাহ মাফ করাতে না পারাটা দুর্ভাগ্যজনক। এক বর্ণনায় মহানবী (স.) বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তির নাক ধুলোধূসরিত হোক, যে রমজান পেল এবং তার গুনাহ মাফ করার আগেই তা বিদায় নিল।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৪৫)
রমজানে যারা গুনাহ ক্ষমা করাতে পারে না তারা অভিশপ্ত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (স.) মিম্বরে উঠলেন এবং বলেন—আমিন, আমিন, আমিন। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি মিম্বরে উঠছিলেন এবং বলছিলেন, আমিন, আমিন, আমিন। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই জিবরাইল আমার কাছে এসেছিল। সে বলল, যে রমজান পেল অথচ তাকে ক্ষমা করা হলো না, সে জাহান্নামে যাবে এবং আল্লাহ তাকে দূরে সরিয়ে দেবেন—বলুন আমিন। আমি বললাম আমিন। যে তার মা-বাবা উভয়কে পেল অথবা তাদের একজনকে পেল অথচ তাদের মাধ্যমে সে পুণ্যের অধিকারী হতে পারল না এবং সে মারা গেল, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং আল্লাহ তাকে দূরে সরিয়ে দেবেন—বলুন আমিন। আমি বললাম আমিন। যার কাছে আপনার নাম উচ্চারিত হলো অথচ সে আপনার প্রতি দরুদ পাঠ করল না এবং মারা গেল, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং আল্লাহ তাকে দূরে সরিয়ে দেবেন—বলুন আমিন। আমি বললাম আমিন।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ১৮৮)

তাই আসুন, গুনাহ পরিত্যাগ করি। রমজানের অবশিষ্ট দিনগুলোতে আমরা নিজেদের গুনাহ মাফের চেষ্টা করি। আল্লাহর কাছে তাওবা করি। আল্লাহ তাওবাকারীকে ভালোবাসেন। নবী-রাসুল ও আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহপ্রাপ্ত বান্দারা ছাড়া বেশির ভাগ মানুষই গুনাহ করে থাকে। তবে পাপ করার পর যারা আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ফিরে যায় এবং তাওবা করে, তখন সে আল্লাহর প্রিয় বান্দায় পরিণত হয়। পবিত্র রমজানে নিজেদের গুনাহ ক্ষমা করানোর মতো আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ