18 C
আবহাওয়া
১১:৩১ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » প্রদীপ একাই ১৬১ জন! পর্ব-১৫

প্রদীপ একাই ১৬১ জন! পর্ব-১৫

প্রদীপ একাই ১৬১ জন!

।।ইয়াসীন হীরা।।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, টেকনাফে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৯৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৯৪ জন। সিনহা হত্যার পর নিহত হয়েছেন ২জন। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ১৬১ জনকে বন্দুক যুদ্ধে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে মাদক ব্যবসায়ি ছাড়াও নিরীহ কিছু লোকও ছিল। অভিযোগ আছে টাকা না পেলে সে অন্য জায়গা থেকে ধরে নিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ি তকমা লাগিয়ে হত্যা করতো!

বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোটা অংকের চাঁদা না পেয়ে অথবা প্রতিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ওসি প্রদীপ এসব মানুষকে হত্যা করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি ঘটনা খুবই নির্মম ও চাঞ্চল্যকর। বন্দুকযুদ্ধের নামে একই পরিবারের তিন ভাই, দুই ভাই, বাবা-ছেলে, ভায়রা-ভগ্নিপতিকে একসঙ্গে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা বেশ আলোচনায় ছিল।

আমিনুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুক (৩৭) ও আজাদুল ইসলাম আজাদ (২৩) নামে দুই ভাইকে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থেকে ধরে টেকনাফে এনে কথিত ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। আজাদুল ইসলাম আজাদ ঘটনার মাত্র ১০ দিন আগে বাহরাইন থেকে দেশে এসেছিলেন।

দুইভাইকে হত্যায় মামলা

২০১৮ সালের ১৩ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চন্দনাইশের কাঞ্চননগর রৌশন হাট ফকিরপাড়ার সামনে রাস্তা থেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুই ভাইকে ধরে নিয়ে যায়। দুইদিন পর ১৫ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়। ওই দিন রাত ১টার দিকে তাদের মায়ের কাছে ফোন করে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। প্রদীপের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলার এজাহারে এ বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশের শেষ ‘ক্রসফায়ার’

প্রদীপ কুমার দাশের কথিত বন্দুকযুদ্ধের আরেকটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ইউপি সদস্য উখিয়ার বখতিয়ার উদ্দীনের মৃত্যু। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার মাত্র এক সপ্তাহ আগে এ ঘটনা ঘটে। এটি ছিল ওসি প্রদীপ কুমার দাশের শেষ ‘ক্রসফায়ার’। বখতিয়ার উদ্দীনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে টেকনাফে নিয়ে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করা হয়েছিল। তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় তার বাড়ি থেকে ৫১ লাখ টাকা লুট করেছিল ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও উখিয়া থানার তৎকালীন ওসি মর্জিনা আকতার।

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকান্ডের পর সারাদেশে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি’র মাদক বিরোধী অভিযান নিয়ে হৈ চৈ সৃষ্টি হয়। থেমে যায়, কথিত বন্দুকযুদ্ধ। গ্রেপ্তার হয় ওসি প্রদীপ। পুরো কক্সবাজারের প্রেক্ষাপট বদলে যায়।

প্রদীপের কথিত বন্দুক যুদ্ধ থেকে প্রাণ বাঁচাতে যারা আত্মগোপন করেছিল তারা ফিরে আসতে শুরু করে। অন্যদিকে জামিনে মুক্ত হয়ে যায়, আত্মসমর্পণকারি ইয়াবা ব্যবসায়িরা! ফিরে যায় পুরানো পেশায়। যা এখনও অব্যাহত রেখেছে।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর টেকনাফের হ্নীলার দমদমিয়া এলাকায় কেরামত উল্লাহ ও কোরবান আলী নামে দুজন বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। সব মিলিয়ে টেকনাফে ১৯৬ জন ইয়াবা ব্যবসায়ি নিহত হয়েছে।

নিয়ন্ত্রণে আসেনি ইয়াবা ব্যবসা

এরপরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি ইয়াবা ব্যবসা। তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ি ও তালিকায় নেই এমন ইয়াবা ব্যবসায়িদের বেশীর ভাগই আবারো ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আটকের ঘটনা বৃদ্ধি তারই সাক্ষ্য বহন করে।

বাংলাদেশে ইয়াবা আগ্রাসন নিয়ে আরও পড়ুন 

সাংবাদিকতার সাইনবোর্ডে ইয়াবা ব্যবসা! পর্ব-১৪

মোবাইল চোর থেকে ইয়াবা গডফাদার! পর্ব-১৩

আমিন হুদা ও নিকিতা উপাখ্যান পর্ব- ১২

পবিত্র কোরআন, হেলিকপ্টার ও নারীর যৌনাঙ্গে ইয়াবা পাচার!-পর্ব ১১

টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ি কারা? পর্ব-১০

আত্মসমর্পণকারিরা ফের ইয়াবা ব্যবসায়! পর্ব-৯

বদির ৫ ভাইসহ ২৫ স্বজন ইয়াবা ব্যবসায়ি! পর্ব-৮

বদি নম্বর ওয়ান!- পর্ব ৭

রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ ও সাংবাদিকের সঙ্গে ইয়াবা ডন সাইফুলের সখ্য! পর্ব- ৬

সিআইপি সাইফুল ও বাংলাদেশে ইয়াবার আগমন! পর্ব-৫

টেকনাফের ৮০ শতাংশ মানুষ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত! পর্ব-৪

টেকনাফের অর্ধশত রুটে আসে ইয়াবা!- পর্ব- ৩

মডেল-নায়িকা-শিল্পী ও শিক্ষার্থীরা কেন সেবন করে ইয়াবা? পর্ব-২

‘ইয়াবা’ কেন জনপ্রিয় মাদক? পর্ব-১

বিএনএনিউজ২৪ এআর,জিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ