বিশ্ব ডেস্ক : জান্তাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় এমপিসহ চার কারাবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় মিয়ানমারের রাজধানী ইয়াঙ্গুনের প্রধান কারাগারসহ সারাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সোমবার(২৫জুলাই) তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘোষণার পরপরই দেশ বিদেশে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো শুরু হয়।
মঙ্গলবার দেশটির জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদপত্র মিয়ানমার নাও জানায়, দন্ডপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে গত বছর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিলিশিয়াদের সাহায্য করার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
রাজধানী ইয়াঙ্গুনের প্রধান কারাগার ইনসেইনে চার রাজনৈতিক কারাবন্দির মৃত্যুদণ্ড প্রদানের খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাতে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে বন্দীরা। সেখানে বিক্ষোভ থামাতে অনেক বন্দীকে পিটিয়ে আহত করে কারা পুলিশ। কারাগারটিতে বাইরে থেকে লোকজনের প্রবেশ ও বাহির হবার সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান। আহত বন্দীদের অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
চার কারাবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কে কেন্দ্র করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন। এমনকি দেশটির কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি বন্ধে এবং ঋণসহায়তা না দিতে অন্যান্য দেশের প্রতিও আহ্বানও জানান মুখপাত্র তিনি।
জাতিসংঘে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতিবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রু বলেন, ”মিয়ানমারের দেশপ্রেমিক এবং মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়নদেরকে ফাঁসি কার্যকরের ঘটনায় তিনি ক্ষুব্ধ ও বিধ্বস্ত।
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি মিয়ানমার সরকারের এই পদক্ষেপকে দেশটিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে আরও আলাদা করে ফেলবে বলে মন্তব্য করেছেন।
রেডিও ফ্রি এশিয়াকে এক সাক্ষাতকারে কো জিমির স্ত্রী Nilar Thein বলেন, জেলারের একজন প্রতিনিধি বাড়িতে এসে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার তথ্যটি জানিয়েছে। তিনি মরদেহ ফেরত চাইলে বলা হয়, মরদেহ ফেরত দেবার কোন নিয়ম নেই।
মায়ানমার খুনিদের দ্বারা শাসিত একটি জাতি। প্রতিবাদকারীদের মাথায় গুলি করার জন্য স্নাইপার ব্যবহার করে এবং পুরো গ্রাম নিশ্চিহ্ন করার জন্য বিমান হামলা এবং স্থল আক্রমণ করে এমন একটি শাসনব্যবস্থা বর্ণনা করার অন্য কোনো উপায় নেই; যেটি বন্দীদের মৃত্যুতে নির্যাতন করে এবং প্রতিরোধের শক্ত ঘাঁটিতে তাণ্ডব চালানোর সাথে সাথে ইচ্ছামতো হত্যা করে। এটি এমন একটি দেশ যার বর্তমান শাসনব্যবস্থা যা ক্ষমতায় থাকার জন্য যেকোনো পরিমাণ রক্ত ঝরাতে প্রস্তুত ।
প্রায় দেড় বছর ধরে এই নরহত্যা চলছে দেশটিতে।প্রবীণ কর্মী কো জিমি এবং প্রাক্তন এমপি ফিও জায়ার থাও সহ চার রাজনৈতিক বন্দীর ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার খবরে দেশের মানুষ হতবাক।
দি অ্যাসিসটেন্ট এসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস ২২ জুলাই জানায়, এক বছরে সামরিক আদালতে এ পর্যন্ত ১১৭জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। News Source: Protests break out inside Insein Prison following activists’ execution
বিএনএনিউজ,এসজিএন