37 C
আবহাওয়া
৮:২৪ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ঝিনাইদহে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য ধ্বংসের চেষ্টা!

ঝিনাইদহে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য ধ্বংসের চেষ্টা!

ঝিনাইদহে অতিথি পাখির অভয়ারণ্য ধ্বংসের চেষ্টা!

বিএনএ, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের আশুরহাট গ্রামের অতিথি পাখিরা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। ২০০৭ সালে আসা এই অতিথি পাখিরা এখন আর ‘অতিথি’ হয়ে থাকতে পারছে না। পাখিদের আশ্রয় হিসেবে বেড়ে ওঠা গাছগুলো বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে রাতে নিধন করা হচ্ছে পাখি। ফলে যে কোন মুহুর্তে গ্রাম ছাড়তে পারে শামখোল এই পাখির দল।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ১৬ বছর আগে শৈলকুপার আশুরহাট গ্রামটিতে হঠাৎ ঝাঁকে ঝাঁকে শামখোল (শামুক ভাঙ্গা) পাখি আসা শুরু করে। স্থায়ী কোন বাসা না করায় পাখিগুলো যায়-আসে। এরপর কেটে যায় কয়েক বছর। ২০১৩ সালে স্থায়ীভাবে বাসা বেঁধে বসবাস শুরু করে হাজার হাজার পাখি। ১০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে পাখির অভয়ারণ্য। যা রক্ষার্থে স্থানীয়ভাবে পাহারাদারের ব্যবস্থাও করা হয়। তখন থেকেই আশুরহাট গ্রামটি লোকমুখে ‘পাখির গ্রাম’ হিসেবে পরিচিতি পেতে থাকে। যা বর্তমানে সকলের মুখে মুখে ছড়িয়েছে।

২০১৩ সালেই তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন এই এলাকাকে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে। প্রতিবছরের মতো গ্রামের মধ্যপাড়ার আব্দুর রাজ্জাক ও গোপাল চন্দ্র বিশ্বাসের পুকুর পাড়ে শিমুুল, জাম, মেহগনী গাছের ডালে ডালে বাসা বাঁধে হাজার হাজার পাখি। উপযুক্ত আবহাওয়া ও খাবারের জোগান থাকায় পাখিগুলো আশ্ররহাট গ্রামে জায়গা করে নেয়।

অভিযোগ উঠেছে, অভয়ারণ্য তৈরির শুরু থেকেই নানারকম হুমকির মুখে পড়েতে হয় অতিথি পাখিদের। রাতের আধারে পাখি নিধন, নিরাপত্তা ও আশ্রয়স্থল চরম সংকটে পড়ে। বর্তমানে নতুন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কেটে ফেলা হচ্ছে পাখির অভয়ারণ্যের গাছ। গাছ কেটে ফেলার কারণে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন অতিথি পাখি আসা বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সাথে পাখিশূন্য হয়ে পড়বে উপজেলার একমাত্র এই পাখি অভয়ারণ্য।

আশুরহাট পাখি সংরক্ষণ সমিতির সদস্যরা অভিযোগে জানান, কয়েক দিন আগে গ্রামের মকররম আলীর ছেলে নইমুদ্দিন ও বদরউদ্দিনের ছেলে শফি উদ্দিন এই পাখি অভয়ারণ্যের গাছ কেটেছে। আরও কেউ কেউ গাছ কাটার পাঁয়তারা করছে। এভাবে গাছ কেটে ফেললে পাখিশূন্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গাছ কাটার ব্যাপারে অভিযুক্ত শফি উদ্দিন বলেন, আমার মালিকানাধীন জমির গাছ কেটেছি। আমি কোনো দোষ করিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা সফর আলী জানান, জমির মালিকেরা মাঝে মধ্যেই গাছ কাটেন। এভাবে গাছ কাটার কারণে পাখিদের আবাসন সংকট দেখা দেবে। সেই সঙ্গে পাখিশূন্য হয়ে পড়বে গ্রামটি।

আশুরহাট পাখি সংরক্ষণ সমিতির সভাপতি আ. রাজ্জাক বলেন, এভাবে গাছ কাটলে অতিথি পাখিরা কোথায় এসে দাঁড়াবে? আমি জেলা প্রশাসক ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। এই মুহূর্তে গাছ কাটা বন্ধ না করতে পারলে সামনে অতিথি পাখিসহ অন্যান্য পাখি এই এলাকায় আসবে না। পাখিশূন্য হয়ে পড়বে উপজেলার একমাত্র অভয়ারণ্য।

উপজেলা বন কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, গাছ কাটার কথা আমি শুনেছি। এভাবে গাছ কাটলে পাখি অভয়ারণ্য হুমকির মধ্যে পড়বে। সেই সঙ্গে এলাকা পাখিশূন্য হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন, পাখির অভয়ারণ্যের গাছ কাটার খবর পেয়েছি। পাখিদের আবাসস্থল সুনিশ্চিত করতে এবং পাখি অভায়ারণ্য যাতে হুমকির মধ্যে না পড়ে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিএনএ/ আতিক রহমান/ বি এম

Loading


শিরোনাম বিএনএ