20.7 C
আবহাওয়া
৪:৩০ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৩ (চট্টগ্রাম-১৬)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৩ (চট্টগ্রাম-১৬)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল সংসদীয় আসন-২৯৩ (চট্টগ্রাম-১৬)

বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর।

আজ থাকছে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের হালচাল

চট্টগ্রাম-১৬ সংসদীয় আসনটি পাহাড় ও সাগরবেষ্টিত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের নৈসর্গিক লীলাভূমি বাঁশখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৯৩ তম আসন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি চট্টগ্রাম-১৫ নামে পরিচত ছিল। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের সীমানা পুন:নির্ধারণের পর আসনটি চট্টগ্রাম-১৬ নামে পরিচয় বহন করছে।

YouTube player

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের সুলতানুল কবির বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৯০ হাজার ৮ শত ৬২ জন। ভোট প্রদান করেন ৯২ হাজার ৩ শত ১৯ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সুলতানুল কবির বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২৯ হাজার ৭ শত ৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি পান ২৯ হাজার ৭৮ ভোট।

ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন: বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি, ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। নির্বাচনে বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬ শত ৮০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৫ শত ৭৫ জন। নির্বাচনে বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৫ হাজার ৩ শত ৯২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সুলতানুল কবির। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৪ হাজার ৭৬ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিজয়ী হন

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২১ হাজার ৮ শত ৪১ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৩ শত ২২ জন। নির্বাচনে বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৮ শত ৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সুলতানুল কবির। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫৬ হাজার ৩ শত ১৪ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৭ হাজার ৯ শত ৮১ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৯৪ হাজার ৯ শত ৮০ জন। নির্বাচনে বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৯৯ হাজার ৮ শত ৯৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সুলতানুল কবির। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৯১ হাজার ৮ শত ৭০ ভোট।

দশম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩ শত ৬৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টি জেপির আ আ ম হায়দার আলী চৌধুরী। বাইসাইকেল প্রতীকে তিনি পান মাত্র ৬ হাজার ৮ শত ৪৮ ভোট।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে র্নিবাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৩ হাজার ১ শত ২৩ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৩ শত ১৪ জন।

নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৯ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এইচ এম ফরিদ আহম্মদ, কুড়েঁঘর প্রতীকে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ ন্যাপ’র আশীষ কুমার শীল, বেঞ্চ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বজল আহমদ, মোমবাতি প্রতীকে ইসলামী ফ্রন্টের মনিরুল ইসলাম, আপেল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জহিরুল ইসলাম এবং চেয়ার প্রতীকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মহিউল আলম চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৭৫ হাজার ৩ শত ৫৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান মাত্র ২৬ হাজার ৩ শত ৭৭ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদে বিএনপি এবং পঞ্চম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।

দৈবচয়ন পদ্ধতিতে জরিপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর চট্টগ্রাম-১৬ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-১৬ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৪৮.৩৭% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩২.১৮%, বিএনপি ৯.৭৯%, জামায়াতে ইসলামী ২৩.০৪%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৩৪.৯৯% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৬৭.৬৮% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৮.৫০%, বিএনপি ৩৭.৯৬%, জাতীয় পার্টি ১৫.৫৮%, জামায়াতে ইসলামী ১৫.১১%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ২.৮৫% ভোট পায়।

২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭২.৭২% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৪.৯১%, ৪ দলীয় জোট ৬২.৫২%, জাতীয় পার্টি ২.১৮%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.৩৯% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৫.৫২% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৪৭.১২%, ৪ দলীয় জোট ৫১.২৩%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ১.৬৫% ভোট পায়।

চট্টগ্রাম-১৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন। নানা কারণে বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বির্তকিত। ফলে নির্বাচনে এবার তার মনোনয়ন নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ছাড়াও মনোনয়ন চাইবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম অ্যাডভোকেট সুলতানুল কবির চৌধুরীর বড় সন্তান দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপি, প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু’র ভাগিনা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ কবির লিটন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেহ্ উদ্দীন মনছুর এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম মোকাম্মেল হক চৌধুরী (আলাল)।

জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা হলে সেক্ষেত্রে এই আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে পারে।

বিএনপি নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখান করে এক দফার সরকার পতন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। দলটির নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে নির্বাচনে গেলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য, মন্ত্রী প্রয়াত জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর পুত্র জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, উপজেলা বিএনপি’র সদস্য মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, বাঁশখালী বিএনপির দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র কামরুল ইসলাম হোছাইনী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা ও আইনজীবী ইফতেখার মহসিন মনোনয়ন চাইবেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে গেলে মনোনয়ন চাইবেন বাঁশখালী উপজেলা আমীর ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মওলানা মো. জহিরুল ইসলাম।

নির্বাচনী ভাবনায় বর্তমান বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বাঁশখালীর মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। তিন হাজার কোটি টাকার বেশি উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। আবারও নৌকার মাঝি হয়ে বাঁশখালী মানুষের জন্য কাজ করতে চান বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী বলেন, বাঁশখালী আসনের প্রতিটি ইউনিয়নে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তিনি নিরলস পরিশ্রম করেছেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাঁশখালীর মানুষের ঘরে ঘরে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের বার্তা পৌছে দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা যদি তাকে মনোনয়ন দেন তাহলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন এবং তার বাবা সুলতানুল কবির চৌধুরীর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তাবায়ন করবেন।

নির্বাচনী ভাবনায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন আর রাজনীতিতে তিনি কয়েক দশক ধরেই মানুষের পাশে ছিলেন। সে অভিজ্ঞতার আলোকে এবার বাশখালীর মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চান। এ আসনে মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা অ্যাডভোকেট ইফতেখার মহসিন বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশনের একতরফা নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখান করেছেন। ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন করে যাবে বিএনপি। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলে মনোনয়ন চাইবেন এবং জিতবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অ্যাডভোকেট ইফতেখার মহসিন।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে জানা যায়, জাতীয় সংসদের ২৯৩তম সংসদীয় আসন (বাঁশখালী) ১৯৭১ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শাহ-ই- জাহান চৌধুরী, ১৯৭৯ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে এবং ১৯৮৬ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে অ্যাডভোকেট সুলতানুল কবির চৌধুরীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৮ বছর পর আসনটি পুনরুদ্ধার করে। কিন্তু ৫ বছর পর ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ ও সপ্তম সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে বিএনপির টিকেটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এক সময়ের জাসদ নেতা জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। পরবর্তীতেও তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে ২০০৮ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেননি। ফলে খুব সহজে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান বিজয়ী হন। যার ধারা ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনেও অব্যাহত থাকে।

এক সময় এই আসনটি বিএনপি জামায়াতের ঘাটি হিসেবে পরিচিত ছিল। দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতা বলয়ের বাহিরে থাকার কারণে এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুর পর বাঁশখালী সংসদীয় আসনে বিএনপি সাংগঠনিক দিক থেকে অনেকটা দুর্বল। অন্যদিকে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতাসীন থাকা এবং ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক দিক থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। কিন্তু দলটিতে রয়েছে অন্তত: চারটি গ্রুপ। ব্যক্তি নির্ভর এই আসনে গ্রুপিং রাজনীতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই আসনে জাতীয় পার্টির হেভিয়েট প্রার্থী থাকলেও সাংগঠনিক কার্যক্রম তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত নয়। আওয়ামী লীগের সমর্থন ছাড়া দলীয় প্রার্থী এককভাবে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া বেশ কঠিন। জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক তৎপরতা দৃশ্যমান না হলেও নিবন্ধনহীন দলটির প্রচুর ভোট রয়েছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে এবং বিএনপি অংশ নিলে জাতীয় সংসদের ২৯৩ তম (চট্টগ্রাম-১৬) সংসদীয় আসনটিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাডি লড়াই হবে। বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে সহজে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯২ (চট্টগ্রাম-১৫)

বিএনএনিউজ/ শাম্মী/ রেহানা/ বাবর/ ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ