27 C
আবহাওয়া
১০:১৫ অপরাহ্ণ - মার্চ ২৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » প্রতি ৮ দরিদ্র মানুষের একজন শিশু: গবেষণা

প্রতি ৮ দরিদ্র মানুষের একজন শিশু: গবেষণা

বিশ্বব্যাংক

বিএনএ ডেস্ক, ঢাকা: সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে শহরের দরিদ্ররা উপেক্ষিত থাকছে। দেশের প্রতি আট দরিদ্র মানুষের একজন শিশু। শহরাঞ্চলে প্রতি পাঁচজনে একজন দরিদ্র মানুষ রয়েছে, এদের ৫৭ শতাংশই সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা পায় না। সরকারের দৃষ্টি গ্রামের দরিদ্রদের দিকেই বেশি। গ্রামে দরিদ্র মানুষের বাইরেও অনেকে এ কর্মসূচির সুফল ভোগ করছে।

এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ‘বাংলাদেশ সোশ্যাল প্রোটেকশন পাবলিক এক্সপেনডিচার রিভিউ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

বাংলাদেশের চলমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ও প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং সেগুলোকে কীভাবে আরও গতিশীল করা যায় সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে প্রতিবেদনে। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলোতে আরো জোর দিলে বাংলাদেশের দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্য হারে দূর করতে পারে বলে এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস আয়োজিত এক ওয়েবিনারে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়েছে, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে গ্রামীণ অঞ্চলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও শহর এলাকায় প্রতি পাঁচজনে একজন দরিদ্র এবং শহরবাসীর অর্ধেক দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে রয়েছে। গ্রামীণ ও শহর এলাকার মধ্যে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ‘ভারসাম্য রাখা প্রয়োজন’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, শহর এলাকায় প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ সামাজিক সুরক্ষায় আছে যদিও ১৯ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে ২৬ শতাংশ মানুষ দরিদ্র যদিও ৩৬ শতাংশ মানুষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় রয়েছে।

ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, সার্বিকভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিয়ে আমরা ইতিবাচক মূল্যায়নই পাই। এ নিয়ে কিছু দুর্নীতির অভিযোগও আছে। এসব অস্বীকার করা যাবে না।

বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বেড়েছে। দেশের ১০টি পরিবারের মধ্যে ৩টি পরিবার এখন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আছে। কিন্তু এর কার্যকারিতা এখনো আশানুরূপ নয়। অন্তর্ভুক্তির সংখ্যা বাড়লেও দারিদ্র্যের হার আনুপাতিক হারে কমেনি। এসব কর্মসূচির নানা প্রক্রিয়াগত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা রয়ে গেছে। ফলে আখেরে এর কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত দরিদ্ররা এ সুবিধা পাচ্ছে না।

গবেষণায় বলা হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তির সংখ্যা বাড়লেও দারিদ্র্যের হার আনুপাতিক হারে কমেনি। দেশের প্রতি আট দরিদ্র মানুষের একজন শিশু। কিন্তু এসব শিশুর জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ ব্যয় হয়। দুর্যোগকালে এ কর্মসূচির আওতায় মানুষের জন্য থোক বরাদ্দ বেড়েছে। এখন পর্যন্ত মোট বরাদ্দের মাত্র ৩ শতাংশ দুর্যোগকালীন।

সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলোর মধ্যে খাদ্যসহায়তা ও নগদ অর্থ দেওয়ার কর্মসূচি অপেক্ষাকৃত ভালোভাবে চলে। কিন্তু মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, গ্রামীণ টেস্ট রিলিফ এবং শহুরে বয়স্ক ভাতার (ওএএ) কর্মসূচির পরিচালন মান উন্নত নয়। খাদ্যসহায়তা ও নগদ অর্থপ্রাপ্তির কর্মসূচিতে আছে এমন ৪৯ থেকে ৬৬ শতাংশ মানুষই দরিদ্র নয়। এমন বেশ কিছু কর্মসূচিতে সুবিধাভোগীদের মান কী হবে, তা নির্ধারণ করা হয়নি। শহুরে বয়স্ক ভাতা ও অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে (ইজিপিপি) যথাক্রমে ২০ ও ৩৮ শতাংশই দরিদ্র না হয়েও সুবিধা নেয়।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, ১৩০টি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মধ্যে ৩০টিতে মোট বরাদ্দের ৯০ শতাংশ ব্যয় হয়। ছোট আকারের ১০০টিতে বরাদ্দ মাত্র ১০ শতাংশ। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ খুবই কম। এর মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সাড়ে ৮ শতাংশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আড়াই শতাংশ এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মাত্র ১ শতাংশ ব্যয় করে। ফলে তাদের গ্রহণ করা কর্মসূচির কার্যকারিতা কম হচ্ছে।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ