31 C
আবহাওয়া
১:৪৭ পূর্বাহ্ণ - মে ৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ‘এক উপজেলায় এক যুগ’, চিকিৎসা দেন অবৈধ হাসপাতালেও

‘এক উপজেলায় এক যুগ’, চিকিৎসা দেন অবৈধ হাসপাতালেও

‘এক উপজেলায় এক যুগ’, চিকিৎসা দেন অবৈধ হাসপাতালেও

বিএনএ, সাভার: ঢাকার ধামরাইয়ে একই উপজেলায় এক যুগ ধরে বিভিন্ন পদে কর্মরত আছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আহমেদুল হক তিতাস নামে এক চিকিৎসক। একই এলাকায় থাকার সুবাদে অবৈধ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও চাকরি করেছেন তিনি।

নিয়মানুযায়ী কোনো সরকারি কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি থাকতে পারবেন না। সরকারের এমন নিয়ম থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না এই কর্মকর্তার ক্ষেত্রে। ১৪ বছরের চাকরিজীবনের প্রায় এক যুগই তিনি কাটিয়ে দিয়েছেন এ এক উপজেলায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী সাভার উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা ডা. আহমেদুল হক তিতাস সরকারি চাকরিতে যোগ দেন ২০১০ সালের ১ জুলাই। দুই বছর পর তিনি ধামরাই উপজেলার ভাড়ারিয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ২০১৫ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত একই উপজেলার মহিশাষী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র এরপর আবারও মহিশাষী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২০১৬ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।

এরপর ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল তিনি ভাড়ারিয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগ দেন। সবশেষ একই উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে গত তিন বছর ধরে সেখানেই কর্মরত তিনি।

তথ্য বলছে, সাভারের বাসিন্দা তিতাসের মা ডা. রওশন আক্তারও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কর্মরত ছিলেন। সাভারে তাদের মালিকানাধীন হাসপাতালে দেখভাল করতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ধামরাই উপজেলাতেই পদায়ন নেন ডা. তিতাস। তার স্ত্রী ডা. সাদিয়া শারমিন হকও একই উপজেলায় মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত।

অভিযোগ রয়েছে, ধামরাইয়ের একটি পোশাক কারখানায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়মিত প্রাকটিস করেন তিনি। এছাড়া বৈধ-অবৈধ হাসপাতালে রোগী দেখেন তিনি।

আশুলিয়ার বিসমিল্লাহ ফার্মেসি, ধামরাই বাজার এলাকার আজহার ফার্মেসি, সাভারে হ্যাপি ফার্মেসি, নিউকিউর ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাব এইডসহ বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাকটিস করায় তার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর লিখিত অভিযোগ করেন আতিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তি।

সাভারের শিমুলিয়া এলাকায় হ্যাপি ফার্মেসি নামে একটি প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মের অভিযোগেও ডা. তিতাস ও তার মায়ের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ করা হয়।

২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর মহিশাষী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ডা. তিতাসকে তার কর্মস্থলে পাননি ঢাকা জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন। বিষয়টি নিয়ে শারীরিক অসুস্থতা দাবি করে নিঃশর্ত ক্ষমা চান তিনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বিপুল পরিমাণ অর্থ রোজগারের কারণেই ডা. তিতাস ধামরাই ছাড়তে চান না। এছাড়া নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিভিন্ন অবৈধ হাসপাতালে প্র্যাকটিস করেন।

ডা. আহমেদুল হক তিতাস বলেন, “মহসিন মেডিকেলে দুই বছর আগে করতাম। এখন যাই না। স্নোটেক্সেও এখন চাকরি করি না। এখন যে পোস্টে আছি, সেটায় তিন বছর ধরে আছি। বাকি অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।”

আরও পড়ুন: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৮৭ (চট্টগ্রাম-১০)

ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান বলেন, “একই পদে নূন্যতম তিন বছর থাকতে হয়। তবে অনেকেই বেশি থাকে। তার বিষয়ে জানা নেই।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. শামিউল ইসলাম সাদী বলেন, “অফিস টাইমে প্রাকটিস করেন কি না, একইসঙ্গে একাধিক চাকরি করেন কি না। এমন কোনো অভিযোগ থাকলে বলতে পারেন। আমরা ব্যবস্থা নেবো।”

প্রসঙ্গত, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার স্বাস্থ্য সার্ভিসে কর্মরত সরকারি চিকিৎসকদের বদলি/পদায়ন সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২২ এ বলা হয়, নিয়মিত বদলির ক্ষেত্রে পদায়ন করা চিকিৎসকের সাধারণ কর্মকাল দুই বছর। তবে কোনো অভিযোগ পেলে আগেই প্রত্যাহার/বদলি করা যাবে।

বিএনএনিউজ/ ইমরান খান/ বিএম

Loading


শিরোনাম বিএনএ