বিএনএ বিশ্ব ডেস্ক( ঢাকা), ১১ সেপ্টেম্বর : মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীদের গত ২দিনের তীব্র সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর একজন মেজরসহ ২২জনের বেশি নিহত হয়েছে। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আত্মরক্ষায় গণ বিপ্লবের ডাক ঘোষণা দেয়ার পর মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র সংঘর্ষ চলছে।হতাহতের ঘটনার পাশাপশি যুবক ও তরুণদের ব্যাপক হারে গ্রেপ্তার করছে সেনা বাহিনীর সদস্যরা।খবর মিয়ানমার টুডে ও রয়টার্স।
বিবিসি বার্মিজ সার্ভিস জানিয়েছে, ৯সেপ্টেম্বর ইয়াঙ্গুনের সানচাং টাউনশিপে একটি সামরিক গাড়ির ওপর গেরিলা বোমা হামলায় একজন মেজরসহ দুই সেনা নিহত হয়েছে। জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী ও প্রতিরোধবাহিনীর হামলায় নিহত বলে দুটি গেরিলা গোষ্ঠী দাবি করেছে। একটি ব্যস্ত বাজারের পাশে এই হামলা হয়েছে কিন্তু দায় স্বীকারকারী গোষ্ঠী দাবি করেছে ঘটনায় কোন বেসামরিক নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
আরও পড়ুন : মিয়ানমারের জঙ্গলে গণ কবর ও যত্রতত্র মরদেহ
তাছাড়া একই দিন বৃহস্পতিবার থেকে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) সদস্যদের সঙ্গে সেনা বাহিনীর সদস্যদের মগওয়ে অঞ্চলের মিন থর এলাকায়ও সংঘর্ষ শুরু হয় এবং পরদিন শুক্রবার দিনভরও তা চলে।এ দুটি বড় ঘটনায় ২২জনের বেশি নিহত ও কমপক্ষে ৫০জন আহত হয়েছে।
বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর সেনা সদস্যরা বিদ্রোহীদের সম্ভাব্য চলাচলের পথে মাইন পুতে রাখছে এবং গ্রামের বাড়িগুলোতে অগ্নিসংযোগ করছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্সের(সিডিএফ)
মিয়ানমারের চিন প্রদেশেও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সাথে চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্সের(সিডিএফ) গত কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষ চলছে।ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) সমর্থিত সিডিএফ সদস্যরা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ও কনভয়গুলোর ওপর চোরাগুপ্তা হামলা চালালে থানল্যাং এলাকায় মফস্বল শহরটিতে সেনাবাহিনীর অধিক সৈন্য মোতায়েন করা হয়।চিন প্রদেশে গত জুন ও জুলাই মাসে কয়েকদফা বড় ধরনের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মিয়ানমার সৈন্য নিহত হয়।সেখানে সিডিএফ এর প্রায় ২০জন সদস্যকে হত্যা করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
কো সালাই নামক সাবেক এক সাংবাদিক জানান, চিন প্রদেশে চিনল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্সের তীব্র প্রতিরোধের মুখে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দিনের বেলায় গ্রামগুলোতে সরকার বিরোধীদের সন্ধানে অভিযান চালায়। কোসালাই( যার প্রকৃত নাম নয়) বলেন, তিনিসহ অনেক তরুণ সাংবাদিক যারা অনলাইন মিডিয়ায় কাজ করতো গত ১ফেব্রুয়ারির আগে , তারাই সেনাদের প্রথম টার্গেট।১ফেব্রুয়ারি জান্তা ক্ষমতা দখল করার পর সরকার বিরোধীদের সাথে এই সব সাংবাদিকদের আটক করা হয়েছে।অনেকে পালিয়ে জঙ্গলে আশ্রয় নেন।চিন প্রদেশে ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন ব্যবহার খুব সীমিত করে দিয়েছে জান্তা সরকার। কো সালাই বলেন, সরকার বিরোধী বিদ্রোহীদের সংবাদ যখন করতেই হয়, তখন তাদের সাথে যোগ দেয়াটাকে উত্তম, মনে করেছি।
চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট
১৯৮৮সালে সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় চিন-ভারত সীমান্তে চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট গঠিত হয়। সমগ্র চিন প্রদেশের প্রায় ৪হাজার তরুণ সম্প্রতি সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। সাগাইং ও মগওয়ে প্রদেশের অনেকে সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বলে কো সালাই তথ্য প্রকাশ করেন।
সালাই জানান, তার দাদাও এক সময় জাপানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। জাপান হেরে যায়। বার্মার জয় হয়। এবারও মিয়ানমারে সরকার বিরোধীদের জয় হবে। সে দিন বেশি দূরে নয়।
পিপলস ডিফেন্স ফোর্স(পিডিএফ)
পিপলস ডিফেন্স ফোর্স(পিডিএফ) নেতা চঅং গণমাধ্যমকে বলেন, যেখানে সরকার বিরোধী আন্দোলন,মিছিল হচ্ছে সেখানে রাতের বেলায় জান্তা সরকারের বাহিনী অভিযান চালিয়ে সাধারণ মানুষদের ওপর অত্যাচার করছে। বাড়ি ঘর ছেড়ে পালানোর সময় তাদের ওপর গুলি ছোড়া হয়। মনিওয়ে এবং পাইয়িটকোনে বুধবার গুলি চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে মিয়ারমার সেনা সদস্যরা।
বিএনএ বাংলা খবর(bnanews24.com), জিএন