বিএনএ, ঢাকা: গত ৮ মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ওপর তিন শতাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনার পেছনে ছিল, বিক্ষুব্ধ জনতা ‘মব’ তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার প্রবণতা। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার ঘটনাগুলো নজরকাড়া মাত্রায় পৌঁছেছে, যেখানে পুলিশ সদস্যদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে কেবলমাত্র আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে।
সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি ঘটে খিলক্ষেতে। ধর্ষণের অভিযোগে এক কিশোরকে জনতা আটকে রাখে। পুলিশ আসামিকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের গাড়ি আটকায় উত্তেজিত জনতা। ছিনিয়ে নেয় আসামিকে এবং বাধা দিলে থানার ওসি ও অন্যান্য কর্মকর্তাকে মারধর করে। এতে ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন।
এর আগেও ২৫ ফেব্রুয়ারি কারওয়ান বাজারে মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। ১৫-২০ জনের একটি দল চাপাতি দিয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে আহত করে এবং আসামিকে ছিনিয়ে নেয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে পুলিশকে লক্ষ্য করে এমন হামলার সংখ্যা তিনশ’র বেশি। আইন বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের হামলা শুধু পুলিশের মনোবলই ভেঙে দেয় না, বরং দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ যদি নিরাপদ না থাকে, তাহলে রাষ্ট্রব্যবস্থাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।”
সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছ থেকে কঠোর অবস্থান কামনা করে বলেন, “এখনই পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও কঠিন হয়ে যাবে।”
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি ইনামুল হক সাগর জানান, ভবিষ্যতে যেকোনো দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে জনগণের কাছ থেকেও সহযোগিতা কামনা করেছে বাহিনীটি।
বিএনএনিউজ/ আরএস/শাম্মী