বিএনএ ডেস্ক : পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হবে । তাই রাত জেগে পড়তে হবে। এটা কোন যুক্তি নয়। অনেক শিক্ষার্থী তাদের জন্য অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতিকেই আপন করে নিয়েছে। তারা রাতে জাগে,আর দিনে ঘুমায়। রাত আর দিনের পার্থক্য বুঝে না, বুঝতেও চায় না। তাদের ‘যুক্তি’ একটাই- পড়ালেখা করলেই হলো; সেটা দিন হোক কি রাত । কিন্তু এতে তাদের অভ্যাস আর স্বাস্থ্য দুটোই খারাপ হচ্ছে।
এবার আসা যাক তাদের যুক্তি প্রসঙ্গে- ‘পড়া পড়লেই হলো, সারা রাত পড়ি কি দিনের বেলায়, সেটা কোনো বিষয় না’। আসলে ব্যাপারটা এমন নয়।
বিজ্ঞানের আলোকে কিংবা স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করি- রাতে একটানা ঘুমিয়ে আমরা সকালে যখন উঠছি তখন ব্রেনটা থাকছে ফ্রেশ, পরে নাস্তা খেয়েও পাচ্ছি এনার্জি। তখন পড়তে ভালো লাগে। এটা দুপুর ১২টা-১টা পর্যন্ত বহাল থাকছে। এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম, ঘুম নয়। কেউ বা একটু ঘুমিয়েও নেন। পরে বিকেলের নাশতা খেয়ে একটানা পড়া এবং রাতের খাবার খেয়ে একটু বিনোদন বা আবার একটু লেখা পড়া করে ঘুমোতে যাওয়া।
কিন্তু কেউ হয়তো চিন্তা করছে সে রাত জাগবে-আর ঘুম দিনের বেলায় পূরণ করার চেষ্টা করবে। তবে দিনের ঘুম আর রাতের ঘুমের মধ্যে অনেক পার্থক্য। প্রাকৃতিকভাবেই, দিন কোলাহলপূর্ণ আর রাত প্রশান্তিময়, নীরব…।
‘তিনি তোমাদের জন্য তৈরি করেছেন রাত, যাতে তোমরা প্রশান্তি লাভ করতে পারো… নিঃসন্দেহে এতে নিদর্শন রয়েছে সেসব লোকের জন্য যারা শ্রবণ করে’ (সূরা ইউনুস, আয়াত-৬৭)।সৃষ্টি কর্তা রাত সৃষ্টি করেছেন বিশ্রামের জন্য।
সুতরাং উল্টো নিয়মে প্রকৃত তৃপ্তি পাওয়া যায় না। আর অনেকেই রাত জাগতে গিয়ে কাপের পর কাপ চা-কফি গিলতে থাকে; ফলে তারা মারাত্মক গ্যাস্ট্রিকের রোগী হয়ে যান। ঘটে স্বাস্থ্যহানি। কখনো রাত জাগার অভ্যাসটা হয়ে যায় একেবারে স্থায়ী। প্রকৃতি আর শরীর কখনো অনিয়ম পছন্দ করেনা।
অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের এমন লাইফস্টাইলে বাধা দিলেও ওরা কথা শোনে না। বরঞ্চ উত্তেজিত হয়ে আস্বাভাবিক আচরণ করে। আবার অনেক পরিবারে সন্তানের পাশাপাশি মা-বাবারাও ঘুম থেকে বেলা ১১টা-১২টায় ওঠেন। নাশতা খেতে খেতে ভাতের সময় হয়ে যায়। আর ভাত খেতে খেতে বিকেলের নাশতার সময়। নাশতা খেতে খেতে রাত সাড়ে ৮টা বা ৯টা, আর রাতে ভাত খেতে খেতে ১২টা। এসব পরিবারে ধর্মীয় ইবাদতও হয়না। অতএব, সম্ভাবনাময় জীবন গড়তে আমাদের এবং আমাদের পরিবারের অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করতে হবে। সন্তানদের বোঝাতে হবে। যেটা সঠিক, সেটাই প্রয়োগ করতে হবে, যাতে দুনিয়ার কাজ ও তার পাশাপাশি ইবাদতও ঠিক থাকে।
বিএনএনিউজ/রেহানা/এইচ.এম।