24 C
আবহাওয়া
৬:৫১ পূর্বাহ্ণ - মে ৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কোথায় ছিলেন অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার ?

কোথায় ছিলেন অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার ?


বিএনএ, বান্দরবান: বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দীনকে অপহরণের পর কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সশস্ত্র সদস্যরা ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ছয়বার স্থান বদল করেছিল। কখনও পাহাড়ি পথে, কখনও ঝিরির পথ ধরে হেঁটে ও মোটরসাইকেলে সশস্ত্র পাহারার মধ্যে তাঁকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নেওয়া হয়।

YouTube player

কেএনএফের জিম্মিদশা থেকে ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর মুক্তি পান নিজাম উদ্দীন। এরপর তিনি র‌্যাবের কাছে তাঁর বন্দী অবস্থার এমন বিবরণ দিয়েছেন। শুক্রবার বান্দরবান জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

অস্ত্রের মুখে ধরে নেওয়ার পর সন্ত্রাসীরা নিজাম উদ্দীনকে চোখ বেঁধে বেথেলপাড়ার পাশ দিয়ে ঝিরির পথে নিয়ে যায়। কিছুদূর নিয়ে চোখ খুলে দিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা হেঁটে এক নির্জন জঙ্গলে নিয়ে তাঁকে ঘুমাতে দেওয়া হয়। পরদিন বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় নাশতা খাইয়ে পাহাড়ি ঝিরি ধরে এবং পাহাড় অতিক্রম করে আরেকটি ঝিরিতে নেওয়া হয়।
গভীর খাদে ওই ঝিরিতে ৩০-৩৫ জন অস্ত্রধারীর সামনে তাঁকে কলাপাতায় মোড়ানো গরম ভাত, ডাল ও ডিমভাজি খাওয়ানো হয়। খাওয়া শেষে আবার হাঁটা শুরু হয়।

আরেকটি জায়গায় নিয়ে বিশ্রাম করার জন্য ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় দেয়। সেখান থেকে বুধবার রাত আটটার দিকে তাঁকে টংঘরে নিয়ে নুডলস খেতে দিলে তিনি খাননি। ওই টংঘরে পাঁচজন অস্ত্রধারীর সঙ্গে রাতে তাঁকে ঘুমাতে দেওয়া হয়। পরদিন সেখান থেকে এক ঘণ্টা পায়ে হেঁটে আরেক জায়গায় নিয়ে রাখা হয়। এক ঘণ্টা বিশ্রামের পর মোটরসাইকেলে করে আরেকটি নতুন জায়গায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে উদ্ধার করে র‌্যাব।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, কেএনএফের সন্ত্রাসীরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দীনকে পরিবারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার সুযোগ দিয়েছে। তারা এ বিষয়ে প্রশাসনের কাউকে না জানানোর জন্য সতর্ক করে। ওই সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রুমা বাজার ও বেথেলপাড়ার মধ্যবর্তী স্থান থেকে নিজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে নিজাম উদ্দিনকে পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে নিয়ে গেছে। র‍্যাবের গাড়িতে করে তাঁকে পৌঁছে দেওয়া হয়।

গত ২ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কেএনএফের শতাধিক অস্ত্রধারী সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখায় অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় তারা ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুট করার চেষ্টা চালায়। তারা ব্যাংকের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্য এবং অন্য লোকজনকে জিম্মি করে। পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে দুটি সাব–মেশিনগানসহ ১৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় তারা । ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুটের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দীনকে অপহরণ করে।

রুমার হামলার ১৭ ঘণ্টার মধ্যে ৩ এপ্রিল দুপুরে থানচিতেও দুটি ব্যাংকের শাখায় হামলা, অস্ত্র ও টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে থানচি থানা লক্ষ্য করে গুলি করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ ও বিজিবি। এক ঘন্টায় উভয়পক্ষে অন্তত: ৫ শ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। এই অবস্থায় শুক্রবার থেকে কেএনএফ এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সাড়াশি অভিযানে নেমেছে।

বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ