বিএনএ, ডেস্ক: সকলেই চায় হাসিখুশি দাম্পত্য জীবন। চাহিদা মত সন্তান, পরিবার। অনেক সমস্যার কারণে তা অনেক সময় হয়ে উঠেনা। সন্তান না হওয়ার নানা কারণ থাকতে পারে। সেটা তাদের অনিচ্ছা, দম্পতির মতের মিল-অমিল এবং সবচাইতে বড় ব্যাপার হচ্ছে শারীরিক সমস্যার কারণে হতে পারে। তাই বলে সবকিছু ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে হতাশ হয়ে গেলে চলে না!
সন্তান না হওয়া যদি অবশ্যম্ভাবী হয় তাহলে তার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়াই শ্রেয়। কারণ সন্তান না হওয়া মানেই দাম্পত্য জীবনের শেষ নয়! সন্তান ছাড়াই আপনি আপনার সঙ্গীর সাথে জীবন কাটাতে পারেন। তাই এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে এবং পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে নিঃসন্তান দম্পতি কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন সেটাই আজ আপনাদের জানাবো। আজ শেষ পর্ব…
৫. নেতিবাচক আবেগ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখুন।
এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে হতাশা ঘিরে ধরবে এইটাই স্বাভাবিক। তাই আগে থেকে সাবধান হওয়াই ভালো। দাম্পত্যের শুরুতে বা মাঝামাঝি হতাশা ঘিরে ধরলে খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কখনো ভাববেন না আপনি ব্যর্থ। কেবল মাত্র সন্তান হলেই সফল হবেন এই ধরনের চিন্তা ভাবনা মাথায় আনার মানে নেই। তার পাশাপাশি রাগ, ভয় এই ধরনের অনুভূতিগুলোও সরিয়ে রাখুন। কারণ রাগের মাথায় নেওয়া কোনো সিদ্ধান্তই কখনো ভালো হয় না। এছাড়া ইনসোমনিয়া অরুচি, মাথাব্যথা এই ধরনের শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
৬. বন্ধু-বান্ধবের সাথে সময় কাটান।
আপনার এই সময়টাতে বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে সময় কাটানো অনেকটাই জরুরি। এতে আপনার মধ্যে থাকা একাকীত্ব, হতাশাজনক অনুভূতিগুলো অনেকাংশেই কমে যাবে। তবে যারা জাজমেন্টাল কমেন্ট করে বা অযথা কথাবার্তা শোনায়, তাদের থেকে দূরে থাকুন। যদি মনে হয় আপনি আর নিতে পারছেন না তাহলে সবার সাথে মেশার পাশাপাশি মেন্টাল কাউন্সেলিং অথবা মেডিটেশন করতে পারেন। চাইলে ধর্মীয় অনুশাসনও মানতে পারেন। এতে আপনার ভেতরে প্রশান্তি আসবে।
৭. যদি সামর্থ্য থাকে, তাহলে কোনো অনাথ শিশুর দায়িত্ব নিন।
সন্তান জন্ম দিলেই পিতামাতা হওয়া যায় এমন ভাবার কোন কারণ নেই। সেক্ষেত্রে নিঃসন্তান দম্পতি যদি চান তাহলে অনাথ শিশুদের প্রতিষ্ঠান থেকে সন্তান দত্তক নিতে পারেন। তবে যদি তা না চান তাহলে শিশুদের কাছাকাছি থাকার আরো পথ আছে। আপনার বন্ধু বা আত্মীয়-স্বজনের বাচ্চাদের সাথে সময় কাটান কিংবা এমন কোথাও কাজ করতে পারেন যেখানে শিশুদের সরাসরি যোগাযোগ আছে যেমন কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও শিশু বিষয়ক সামাজিক প্রতিষ্ঠান। আর যদি মনে হয়, এগুলো থেকে দূরে থাকবেন, তাহলে সেভাবে লাইফ গোল সেট করুন। ক্যারিয়ার বা পরিবারের কাজে মন দিন।
৮. সবশেষে নিজেকে সময় দিন।
চাইলে ক্যারিয়ারে মনোযোগ দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করতে পারেন যেমন অনলাইন বুটিক হাউজ, কেক শপ এই ধরনের। বাগান করতে পারেন, বই পড়তে পারেন। এতে আপনি ব্যস্ত থাকবেন। মনে রাখবেন, জীবন থেমে থাকে না। সন্তান থাকার পরও কিন্তু শেষ বয়সে এসে অনেকে সন্তানকে কাছে পায় না, তাই সন্তান না থাকলে জীবন বৃথা এসব চিন্তা মাথায় আনবেন না। আপনি নিজের মতো করে জীবন উপভোগ করুন।
সন্তান জন্ম না দিতে পারা একটি দুঃখের বিষয়। কিন্তু তাই বলে নিজের জীবন এই জন্য ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার মানে নেই। জীবন একটাই, নিজেকে শক্ত করুন ও আত্মবিশ্বাস আনুন। সঙ্গীর সাথে সুখী জীবনযাপন করুন। দিনশেষে নিজের খেয়াল কিন্তু নিজেকেই রাখতে হয়, তাই নিজের মতো বাঁচুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
বিএনএনিউজ/ রেহানা/ বিএম