40 C
আবহাওয়া
৫:৪৫ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » পবিত্র আখেরি চাহার সোম্বা বুধবার

পবিত্র আখেরি চাহার সোম্বা বুধবার

আখেরি চাহার সোম্বা

বুধবার(৬অক্টোবর) পবিত্র আখেরি চাহার সোম্বা ১৪৪৩ হিজরি পালিত হবে।হিজরী সালের সফর মাসের শেষ বুধবার মুসলিম বিশ্বে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ স্মারক দিবস হিসেবে পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা পালিত হয়।  আখেরি চাহার শোম্বা হলো ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পালিত অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি স্মারক দিবস। আখেরি চাহার শোম্বা একটি আরবী ও ফার্সি শব্দ-যুগল; এর আরবী অংশ আখেরি, যার অর্থ “শেষ” এবং ফার্সি অংশ চাহার শোম্বা, যার অর্থ “বুধবার”।

হজরত আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনা থেকে জানা যায়, সফর মাসের শেষ বুধবার হযরত মুহাম্মদ (সা.) হঠাৎ সুস্থ হয়ে ওঠেন। যদিও দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতে নামতে হযরত মুহাম্মদ (সা.) আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু ওই ঘটনাকে আজও মুসলিমরা প্রতিবছর স্মরণ করেন। সফর মাসের শেষ বুধবার ওই ঘটনা ঘটে বলে এর নামকরণ হয় আখেরি চাহার শোম্বা।

প্রত্যেক নবীই ওই শেষ বিকল্প বেছে নিয়েছেন

মৃত্যুর আগে প্রত্যেক নবী জানতেন তার পরকালে পাড়ি দেওয়ার সময় সমাগত। কারণ, মৃত্যুর আগে আল্লাহ দূত প্রেরণ করে প্রত্যেক নবীকে দুটি বিকল্পের (দুনিয়ায় দীর্ঘ জীবন, ধন-সম্পদ, ভোগবিলাস অথবা মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আল্লাহর দিদার লাভ, তাৎক্ষণিক বেহেশতের স্বাদ গ্রহণ) একটি বেছে নিতে বলেছেন। প্রত্যেক নবীই ওই শেষ বিকল্প বেছে নিয়েছেন। মৃত্যুর মাধ্যমে পরকালে পাড়ি দেওয়াকে শ্রেয় মনে করেছেন।

ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনেও উল্লিখিত ঘটনার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইবনে ইসহাক তার সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) গ্রন্থে বলেছেন, সফর মাসের শেষ কী রবিউল আউয়াল মাসের শুরুতে মোহাম্মদ (সা.)-এর আল্লাহর সম্মানজনক সান্নিধ্যে অন্তিমযাত্রার অসুখ শুরু হয়। ওই সময়ে এক মধ্যরাতে তিনি গিয়েছিলেন বাকিউল গারকাদের কবরস্থানে। সেখানে মৃত ব্যক্তিদের জন্য তিনি মোনজাত করেন। ভোরে ঘরে ফিরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওই অসুখ যে তার মৃত্যুযাত্রার সূচনা, তা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। মোহাম্মদ (সা.) ও তার মুক্ত ক্রীতদাস আবু সওয়ায় হিবার কথোপকথন থেকে বিষয়টি স্পষ্ট বোঝা যায়। মোহাম্মদ (সা.) যখন মধ্যরাতে বাকিউল গারকাদের কবরস্থানে যান, তখন হিবাও সেখানে গিয়েছিলেন। হিবা বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাকে দেখে বললেন, ‘আমাকে দুটো বিকল্পের একটি পছন্দ করতে বলা হয়েছে—এই জগতের সব সম্পদের মালখানার চাবি ও দীর্ঘজীবন অথবা বেহেশত, আমার আল্লাহর দিদার এবং তাৎক্ষণিক বেহেশত।’ হিবা বলেন, ‘আমি বললাম, আপনি প্রথমটি পছন্দ করেন।’ তিনি বললেন, ‘আমি দ্বিতীয়টি পছন্দ করেছি।

 

ইতিহাস

১১ হিজরির শুরুতে হযরত মুহাম্মদ (সা.) গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, নামাজের ইমামতি পর্যন্ত করতে পারছিলেন না। ২৮ সফর বুধবার মহানবী (সঃ) সুস্থ হয়ে ওঠেন। দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার।

এই দিন কিছুটা সুস্থবোধ করায় হযরত মুহাম্মদ (সা.) গোসল করেন এবং শেষবারের মত নামাজে ইমামতি করেন। মদীনাবাসী এই খবরে আনন্দ-খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলেন এবং দলে দলে এসে নবী (সঃ) কে একনজর দেখে গেলেন। সকলে তাদের সাধ্যমতো দান-সাদকা করলেন, শুকরিয়া নামাজ আদায় ও দোয়া করলেন। নবীর রোগমুক্তিতে তার অনুসারীরা এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে, তাদের কেউ দাস মুক্ত করে দিলেন, কেউবা অর্থ বা উট দান করলেন; যেমনঃ আবু বকর সিদ্দিক (রা) ৫ হাজার দিরহাম, উমর (রা)৭ হাজার দিরহাম, ওসমান ১০ হাজার দিরহাম, আলী (রা) ৩ হাজার দিরহাম, আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) ১০০ উট দান করেন।

উল্লেখ্য যে, ২৯ সফর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার মাত্র ২ দিন পর ১ লা রবিউল আউয়াল ইন্তেকাল করেন সর্বশেষ নবী ও সর্বশ্রেষ্ঠ পয়গম্বর হযরত মোহাম্মদ (সঃ)।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

পবিত্র আখেরি চাহার সোম্বা উপলক্ষ্যে  বাদ জোহর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ সাহানে আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন সাবেক পেশ ইমাম ও ওয়াপদা ওয়াকফ স্টেট কওমি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি মাওলানা রফিক আহমেদ। সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব মোহাম্মদ আবদুল কাদের শেখ (উপ-সচিব)।

বিএনএ নিউজ ২৪ ডটকম, এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ