40 C
আবহাওয়া
৩:৪২ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কাতার থেকে ১৮ লাখ টন এলএনজি কিনছে বাংলাদেশ

কাতার থেকে ১৮ লাখ টন এলএনজি কিনছে বাংলাদেশ

এলএনজি

বিএনএ ডেস্ক: কাতারের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদে সরকার ১৮ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কেনার চুক্তি সই করেছে। বৃহস্পতিবার কাতারের দোহায় এই চুক্তি সই হয়। এর আগে ২০১৮ সালে দেশটির সঙ্গে ১৭ লাখ টন এলএনজি কেনার চুক্তি হয়েছিল। নতুন করে ১৮ লাখ টন এলএনজি কেনার চুক্তি করায় বছরে কাতার এখন বাংলাদেশকে ৩৫ লাখ টন এলএনজি দেবে। দীর্ঘমেয়াদি এই চুক্তিতে কেনা এই এলএনজির দাম স্পট মার্কেট বা ভাসমান মার্কেট থেকে কম হবে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপ রাশিয়া থেকে গ্যাস কেনা বন্ধ করায় আন্তর্জাতিক বাজারের স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়ে যায়। এ সময় বাংলাদেশ স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ রেখেছিল। কাতারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করার ফলে দেশের গ্যাস সংকটের অনেকটাই লাঘব হবে বলে মনে করছেন সরকারের দায়িত্বশীলরা।

এর আগে সম্প্রতি কাতার সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র মনে করছে, এটি সরকারের কূটনীতির বড় বিজয়। অবশ্য কাতার থেকে দীর্ঘমেয়াদে এলএনজি আমদানির জন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বেশ কয়েকমাস ধরেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ৩৬০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে দৈনিক সরবরাহ করা হয় ২৬০ কোটি ঘনফুট। গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র, সারকারখানা পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন করতে পারছে না। বেসরকারি কলকারখানার চাহিদামত গ্যাস সরবরাহও করা সম্ভব হয় না। বাসাবাড়িতে গ্যাসের স্বল্প চাপ তো রয়েছেই। দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র নতুন করে আর আবিষ্কার করতে না পারলে বর্তমান মজুদ দিয়ে ১০/১২ বছর চলবে। এ পরিস্থিতিতে সরকার বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি শুরু করে।

দেশে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল দিয়ে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়, আর দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে আসে ১৬০ কোটি ঘনফুট। সব মিলিয়ে ২৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দেশের চাহিদার তুলনায় কম। কাতারের কাছ থেকে নতুন করে বছরে ১৮ লাখ টন এলএনজি আমদানি জ্বালানি সংকট সামাল দিতে বড় ভূমিকা পালন করবে বলে সরকারের দায়িত্বশীলরা মনে করছেন।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে অনেক ধনী দেশ ডলার নিয়ে বসে আছে, তারা দামও বেশি দিতে চাচ্ছে কিন্তু এলএনজি মিলছে না। এরকম পরিস্থিতিতে আমরা কাতারের কাছ থেকে বছরে ৩৫ লাখ টন এলএনজি আনছি দীর্ঘ মেয়াদে। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন নতুন করে চুক্তি করা হলো। এটি সরকারের কূটনীতির বড় জয়।

নসরুল হামিদ বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সকল প্রকার জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। বাড়তি জ্বালানি যোগান দিয়ে দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করতে গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানির চাহিদা বাড়ছে। প্রয়োজনীয় জ্বালানি সঠিক সময়ে সরবরাহের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে।

কাতারের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন সেরিদা আল কাবি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশে বৃহত্তম এলএনজি সরবরাহকারী দেশ হতে পেরে আমরা গৌরবান্বিত। বার্ষিক ৩৫ লাখ টন এলএনজি সরবরাহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থাসহ সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।

কাতারের প্রতিষ্ঠান কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি বছরে ১৮ লাখ টন এলএনজি দেবে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের পক্ষে পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান জ্ঞনেন্দ নাথ সরকার ও কাতার এনার্জি ট্রেডিংয়ের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ আহমাদ আল হোসাইনি চুক্তিতে সই করেন। ১ জুন হতে ২০৪০ সাল পর্যন্ত ১৫ বছর এই চুক্তি বলবৎ থাকবে। এই চুক্তি অনুসারে বছরে কাতার এনার্জি ট্রেডিং ১৮ লাখ টন এলএনজি দেবে।

এর আগে বছরে ১৭ লাখ টন এলএনজি আনার চুক্তিটি হয়েছিল কাতারের রাস গ্যাসের সঙ্গে ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর।
প্রথম চুক্তি অনুযায়ী রাস গ্যাস বছরে ৪০ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করে। নতুন চুক্তি অনুযায়ী ২০২৬ সাল পর্যন্ত বছরে সর্বোচ্চ ২৪ কার্গো করে এলএনজি সরবরাহ করবে তারা। এটি ২০২৭ সালে গিয়ে ঠেকবে বছরে ৩৬ কার্গো এলএনজিতে।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ