36 C
আবহাওয়া
৬:৪০ অপরাহ্ণ - মে ৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল :সংসদীয় আসন-৪৯ (নওগাঁ-৪)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল :সংসদীয় আসন-৪৯ (নওগাঁ-৪)


বিএনএ, ঢাকা:বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ৫ম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক দল গুলোর আসন ভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম।

নওগাঁ-৪ আসন

আজ থাকছে নওগাঁ-৪ আসনের হালচাল।নওগাঁ-৪ সংসদীয় আসনটি মান্দা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ৪৯ নাম্বার আসন। নওগাঁ জেলার সবচেয়ে বড় আসন এটি।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: জামায়াতে ইসলামীর নাছির উদ্দিন বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নওগাঁ-৪ আসনে ভোটার  ছিলেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭ শত ৬৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ২০ হাজার ১ শত ৫৪ জন। নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর নাছির উদ্দিন বিজয়ী হন। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৫৯ হাজার ৮ শত ১ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৫ হাজার ৭ শত ৯৪ ভোট।

৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: বিএনপির সামশুল আলম প্রামানিক বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির শাসনামলে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপি, ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এতে বিএনপির সামশুল আলম প্রামানিক বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪২ হাজার ৯ শত ১৪ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রাথী মীর আহমেদ আলম।  তিনি পান মাত্র ৬ হাজার ৪৪ ভোট ।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন বর্জন করে।  এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম  সংসদ নির্বাচন: বিএনপির সামশুল আলম প্রামানিক বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ই জুন সপ্তম  সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৭৩ হাজার ১ শত ১০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯ শত ৮৬ জন। নির্বাচনে বিএনপির সামশুল আলম প্রামানিক বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬৯ হাজার ৯ শত ১৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের ইমাজউদ্দিন প্রামানিক। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৫২ হাজার ৫ শত ৯৬ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির সামশুল আলম প্রামানিক নির্বাচিত

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন  ২ লাখ ৯ হাজার ২ শত ৭ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮ শত ২৮ জন। নির্বাচনে বিএনপির সামশুল আলম প্রামানিক বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ১ হাজার ২ শত ৬২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের ইমাজউদ্দিন প্রামানিক। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৮০ হাজার ৭ শত ৯৬ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থী  ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ৩ শত ৫৭ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ২১ হাজার ৩ শত ১৪ জন।

১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ইমাজউদ্দিন প্রামানিককে টানা মনোনয়ন দেয়। পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর কাছে, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর কাছে টানা হেরে যান ইমাজউদ্দিন প্রামানিক। ফলশ্রুতিতে নওগাঁ -৪ আসনে প্রার্থী বদল করে আওয়ামী লীগ। এটি মেনে নিতে পারেনি তিনবারের পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক বিজয়ী হন। কলস প্রতীকে ১ লাখ ১৫ হাজার ৫ শত ৭৫ ভোট পান তিনি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপি সামশুল আলম প্রামানিক । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৯২ হাজার ৯ শত ২৯ ভোট। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল লতিফ শেখ তৃতীয় হন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৯ হাজার ৪ শত ২৭ ভোট।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ৪ টি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তৃতীয় স্থানে ছিলেন। নওগাঁ-৪ মান্দা আসন তার অন্যতম। আওয়ামী লীগের ৩০০ প্রার্থীর মধ্যে আব্দুল লতিফ শেখ সবচেয়ে কম ভোট পান।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক বিজয়ী হন 

২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৬২ হাজার ৬ শত ৭৬ জন।  ভোট প্রদান করেন ৭৭ হাজার ৪ শত ৪৪ জন। নির্বাচনে নবম সংসদের স্বতন্ত্র  প্রার্থী হিসাবে বিজয়ী ইমাজ উদ্দিন প্রামানিককে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় এবং তিনি বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬০ হাজার ৩ শত ৪৯ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পাটি মন্জু’র সাইদুর রহমান। বাইসাইকেল প্রতীকে তিনি পান ৯ হাজার ৯ শত ৬৫ ভোট। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন:  ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক পুনরায় নির্বাচিত

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৮৯ হাজার ২ শত  ৫৫ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ২৮ হাজার ৬ জন। নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৭ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক। ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির সামশুল আলম প্রামানিক। লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এনামুল হক, বাইসাইকেল প্রতীকে জাতীয় পার্টি মঞ্জু’র সাইদুর রহমান. কাস্তে প্রতীকে সিপিবির এস. এম ফজলুর রহমান, হাত পাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শহীদুল আলম, সিংহ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক নির্বাচিত হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৬৮ হাজার ৮ শত ৪৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির সামশুল আলম প্রামানিক। ধানের শীষ  প্রতীকে তিনি পান ৫৩ হাজার ৪৪ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।

নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক। তিনি সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ছিলেন। এবারও দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন তিনি। এ ছাড়া মনোনয়ন চাইবেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ জেলা সভাপতি আবদুল বাকী, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক এস এম ব্রহানী সুলতান মাহমুদ গামা, মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ মোর্শেদ, মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মির্জা মাহাবুব বাচ্চু, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুল মান্নান এবং ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুল লতিফ শেখ।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল মতিন, সাবেক  মান্দা উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকরামুল বারী টিপু।

জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আলতাব হোসেন মণ্ডল।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, নওগাঁ -৪ আসনে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী, ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, নবম সংসদে স্বতন্ত্র প্রার্থী, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হন।

YouTube player

 

দৈবচয়ন পদ্ধতিতে জরিপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও  অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর নওগাঁ -৪  আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭২.৯২% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৮.১১%, বিএনপি ১০.৯০%, জামায়াতে ইসলামী ৪৯.৭৭ %, জাতীয় পার্টি ০.৯৩%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.২৯% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৪.৯১% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৫.৭৮%, বিএনপি ৪৭.৫৭%, জামায়াতে ইসলামী ১৫.২৩%, জাতীয় পাটি ১.২০% স্বতন্ত্র ও  অন্যান্য ০.২২% ভোট পায়।

২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৮.৩৫% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৩.৭১%, ৪ দলীয় জোট ৫৪.৭৯%, জাতীয় পার্টি ১.১৯%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.৩১% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৯৩.৮০% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৪.২৯%, ৪ দলীয় জোট ৪২.২৭%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দল ৫৩.৪৪% ভোট পায়।

তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, নওগাঁ-৪ (মান্দা) উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি প্রতিটি নির্বাচনে ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে। কখনো জামায়াতে ইসলামী, কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়। এক কথায় বলা যায় এ আসনে আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোট বেশি। জামায়াতে ইসলামী নিরব সাংগঠনিক তৎপরতা রয়েছে। জাতীয় পাটির অস্তিত্ব নেই। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে জাতীয় সংসদের ৪৯ নম্বর নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সখ্যতা থাকলে, আওয়ামী লীগ এর আসনটির নেতৃত্ব হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বিএনএ/ শিরীন, ওজি, ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ