29 C
আবহাওয়া
৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বাসের বাক্সে নারীর মরদেহ,৬ বছর পর ধরা পড়ল খুনি

বাসের বাক্সে নারীর মরদেহ,৬ বছর পর ধরা পড়ল খুনি


বিএনএ ডেস্ক:অবশেষে ক্লুলেস এক নারীর হত্যাকারীকে গ্রেফতার করে পিবিআই। ঘটনাটি চিত্রনাট্যকেও হার মানায়। কয়েক দফা হাতবদলের পর তদন্তের দায়িত্ব আসে পিবিআইয়ের হাতে। শেষতক তারা রেজাউল করিম স্বপন নামে ওই ঘাতককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়,২০১৫ সালের ৩ মে। সেদিন ভোরে চট্টগ্রামে এ কে খান মোড়ে ঈগল পরিবহনের কাউন্টারে টিকিট কেটে এক ব্যক্তি একটি ট্রাঙ্ক তুলে দেন বাসের বক্সে। ওই ব্যক্তি বাসের হেলপারকে বলেন, সামনে ভাটিয়ারী কাউন্টার থেকে একজন যাত্রী উঠবেন। এটি তার ট্রাঙ্ক। তিনি এটি বুঝে নেবেন। তবে ট্রাঙ্কটি কেউ বুঝে নেয়নি। বিকালে গাবতলী বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে ট্রাঙ্ক খুলে এক নারীর মরদেহ পাওয়া যায়। এটি শনাক্তের কোনো উপায়ও ছিল না হেলপারের কাছে। হেলপার তাৎক্ষণিকভাবে দারুস সালাম থানায় খবর দেন । মরদেহের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। কেউ বাদী না হওয়ায় দারুস সালাম থানা পুলিশের পক্ষে এসআই জাহানুর আলী বাদী হয়ে আসামি অজ্ঞাত উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।

শনিবার(২৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, হত্যার পর প্রায় তিন মাস পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। থানা পুলিশের পর সিআইডি দীর্ঘ চার বছর তদন্ত করে। কিন্তু মরদেহের পরিচয় শনাক্ত এবং হত্যারহস্য উন্মোচিত না হওয়ায় আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করা হয়। দাখিল করা চূড়ান্ত রিপোর্ট না নিয়ে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে দেন।

তিনি বলেন, মামলাটি হাতে পাওয়ার তদন্তকারী কর্মকর্তা সশরীরে চট্টগ্রামে গিয়ে ২০১৫ সালে এন্ট্রিকৃত ১০-১২টি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার জিডি সংগ্রহ করেন। এদের মধ্যে একটি ছিল শম্পা বেগমের। শম্পার মরদেহ উদ্ধারের কয়েকদিন আগে তিনি চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন।

পিবিআইয়ের তদন্ত দল শম্পা বেগমের বাবা ইলিয়াস শেখের (অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য) সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে, ২০১৩ সালে রেজাউল করিম স্বপন (অবসরপ্রাপ্ত নৌ বাহিনী সদস্য) খুলনার তিতুমীর নৌ ঘাঁটিতে কর্মরত ছিলেন। আর শম্পা স্থানীয় একটি হাসপাতালে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজ করতেন। সেই হাসপাতালে ইলিয়াস শেখ নামে এক নৌ অফিসারের স্ত্রীর চিকিৎসাকালীন শম্পা বেগমের সঙ্গে আসামি রেজাউলের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পরই রেজাউল বদলি হয়ে চট্টগ্রামে চলে যান। শম্পাও কিছুদিন পর চট্টগ্রামে চলে আসেন।

এরপর শম্পা রেজাউলকে নিয়ে ফয়’স লেক এলাকায় একটি হোটেলে কিছুদিন অবস্থান করেন। পরবর্তী সময়ে পাহাড়তলী এলাকার উত্তর গ্রিনভিউ আবাসিক এলাকায় একটি বাসায় সাবলেট নিয়ে থাকতে শুরু করেন। সেখানে তারা প্রায় এক বছর একত্রে বসবাস করেন। স্থানীয়দের কাছে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকলেও তারা প্রকৃতপক্ষে বিয়ে করেননি।এর মধ্যে দুজনের মধ্যে নানা বিষয়ে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এক পর্যায়ে ২০১৫ সালের ২ মে গভীর রাতে শম্পাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন রেজাউল। এরপর তিনি শম্পার মরদেহ গোপন করার জন্য একটি ট্রাংকে করে তুলে দেন। পাশাপাশি শম্পার বাবাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘শম্পাকে খুলনার বাসে তুলে দেয়া হয়েছে।’শম্পা তার বাবার বাড়িতে না পৌঁছালে তার ভগ্নিপতি আব্দুল মান্নান পাহাড়তলী থানায় ওই জিডিটি করেন।

দীর্ঘ তদন্তের পর শুক্রবার রাতে পিবিআই রেজাউল করিম স্বপনকে কুমিল্লা জেলার ইপিজেড এলাকার বাসা থেকে গ্রেফতার করে। শনিবার রেজাউলকে আদালতে পাঠানো হয়। তিনি হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
বিএনএ/ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ