বিএনএ ডেস্ক: দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি বাহিনীকে সক্ষম করে গড়ে তুলছে সরকার। এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (৩০ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এভিয়েশন বহরে দু’টি মেরিটাইম প্যাট্রল এয়ারক্রাফট এমপিএ-৮৩২২ ও এমপিএ-৮৩২৭ সংযোজন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নেভাল এভিয়েশন হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ চাইনা। বহি:শত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে, যাতে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সবসময় ধরে রাখতে পারি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই প্রতিটি বাহিনীকে উপযুক্ত করে তৈরী করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সুশৃৃঙ্খল সশস্ত্রবাহিনী দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত পেশাদার একটি বাহিনী। ২০১০ সাল থেকে ভূ-মধ্যসাগরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে আমাদের যুদ্ধ জাহাজ সার্বক্ষণিকভাবে অংশগ্রহণ করছে। এ ছাড়া দক্ষিণ সুদানেও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। শান্তিরক্ষা মিশন ছাড়াও এ বাহিনী নিয়মিতভাবে বহু জাতীয় এক্সারসাইজ, বঙ্গোপসাগরে কোয়ার্ডিনেটেড পেট্রোল ও কুটনৈতিক সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের মেরিটাইম সিকিউরিটিকে সুসংহত করে চলেছে। কর্মমুখর নৌবাহিনীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের পাশাপাশি সরকার দেশের অথনৈতিক ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। কিন্তু করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমাদের উন্নয়নের গতিটা কিছুটা শ্লথ হয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী উন্নত দেশগুলোও এখন হিমশিম খাচ্ছে। সেই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে। তবে আমরা আমাদের নিজেদের সম্পদ এবং মাটি ও মানুষ দিয়েই এই দেশকে সুরক্ষিত রাখবো, যার যেখানে যতটুকু সুযোগ আছে আমাদের খাদ্য উৎপানে মনেযোগী হতে হবে।
নৌবাহিনীর নতুন এই অভিযাত্রাতে আনন্দ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রীকে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ইতোমধ্যে, এমপিএ ও হেলিকপ্টার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আধুনিক সকল সুবিধা সম্বলিত বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বেশ কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
সাবমেরিন ও অন্যান্য যুদ্ধ জাহাজসমূহকে পোতাশ্রয়ে নিরাপদ জেটি সুবিধা প্রদানে কক্সবাজারের পেকুয়াতে আধুনিক বেসিন সুবিধা সম্বলিত স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও এভিয়েশান সক্ষমতাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে উপকূলবর্তী এলাকায় নৌবাহিনীর জাহাজসমূহের অপারেশানাল ও প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ ‘বানৌজা শের-ই-বাংলা ঘাঁটি’র নির্মাণ কাজও অনেক দূর এগিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনএ/এ আর