বিএনএ, চাঁদপুর: এবারের বন্যায় চাঁদপুরে কৃষিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) জেলা কৃষি কার্যালয়ের সবশেষ ১০ দিনের তথ্যে এই ক্ষয়ক্ষতি প্রকাশ করা হয়।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ সময় জেলায় আবাদি ফসলের মধ্যে ছিল আউশ আবাদ, রোপা আমন বীজতলা, আমন আবাদ, শাকসবজি, পান, আখ ও বোনা আমন। মূলত দীর্ঘ প্রায় ১০ দিনেরও বেশি সময় জলাবদ্ধতায় তলিয়ে থাকায় ইতোমধ্যে অনেক ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে জেলার শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ ও হাইমচরের কৃষি জমি একেবারেই তলিয়ে গেছে। এতে এই চার উপজেলায় ধান, পান শাকসবজিসহ বিভিন্ন সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা সহজ হবে ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এবার চাঁদপুরে ১৪ হাজার ৬০০ কৃষকের আউশ ফসল চাষাবাদে প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ৬ হাজার ১২১ টন আউশের ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমনের বীজতলায় ১২ হাজার ৩২০ জন কৃষকের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকারও বেশি সমমূল্যের ৩০৮ হেক্টর জমিতে প্রাথমিক ক্ষতি হয়েছে। আমন ধান চাষাবাদে ১০ হাজার ৭১০ জন কৃষকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা সমমূল্যের ৪ হাজার ১৪১ টন উৎপাদনে ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার শাকসবজিতে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৮১ হেক্টর জমির ফসল। ফসল উৎপাদনে ৭ হাজার ৬২০ জন কৃষকের প্রায় ২৩ কোটি টাকা সমমূল্যের ৭ হাজার ৬০৫ টন ক্ষতি হয়েছে। জেলায় পান চাষাবাদের উৎপাদনে ১০৮ জন কৃষকের প্রায় ৪ কোটি টাকা সমমূল্যের ৬৩ টন ক্ষতি হয়েছে। জেলায় আখ উৎপাদনে প্রায় ১০০ কৃষকের প্রায় ১৩ কোটি টাকা সমমূল্যের ৭৮০ টন ক্ষতি হয়েছে। বোনা আমনে ১২৭ জন কৃষকের প্রায় ১৯ লাখ টাকা সমমূল্যের ৪৩ টন ক্ষতি হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাফায়াত আহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, জলাবদ্ধতা ও বন্যায় কৃষিতে এটি প্রাথমিক হিসাব হলেও পানি কমার পর পূর্ণ হিসাবে ক্ষয়ক্ষতি আরও বৃদ্ধি পাবে। এখন ক্ষয়ক্ষতির হিসাবসহ ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা করছি। যদি মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দেয় তবে কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।
চাঁদপুরের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, এখন পর্যন্ত জেলার ৬৪টি ইউনিয়নের ১ লাখ ১৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন অন্তত ৬ হাজার ৭২৬ জন মানুষ।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, এ জেলায় উজানের ও বৃষ্টির পানির কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। সে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের কার্যক্রম প্রশাসন হতে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে আর বৃষ্টি না হলে দু’এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বিএনএনিউজ/ রেহানা/এইচ.এম/হাসনা