বিএনএ, চট্টগ্রাম : বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর ১ কোটি ৮৬ লক্ষের বেশি মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বিশ্বে প্রায় ২৫ কোটি হৃদরোগী রয়েছে। যারা এখন কোভিড-১৯ এর কারনে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।এসব রোগী করোনা আক্রান্ত হলে তাদের জটিলতা বৃদ্ধিও আশংকা রয়েছে অনেক বেশি।বর্তমান সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি আমাদের খাদ্যাভ্যাসও পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের লাইফ স্টাইলেও আনতে হবে পরিবর্তন। স্বাস্থ্যবিধি ও খাদ্যবিধি মেনে চললে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার ( ২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ব হার্ট দিবস,২১ উপলক্ষে ‘হার্ট এন্ড ভাসকুলার সেন্টার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতাল’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
হার্ট এন্ড ভাসকুলার সেন্টার এর চীফ কোঅর্ডিনেটর ডা. ইরফান চৌধুরীর সঞ্চলনায় হাসপাতালের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ কে এম ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় চট্টগ্রামে হৃদরোগীর সংখ্যা বেশি।এক সময় চট্টগ্রামের হৃদরোগীরা চিকিৎসার জন্য ঢাকাসহ,দেশের বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন হতো।চট্টগ্রামের রোগী যেন এখানেই স্বল্প খরচে বিশ্বমানের সেবা পায় তার জন্য একমাত্র আমরাই সর্বপ্রথম হার্টের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা চালু করেছি। শুরুতে আমরা অনেক প্রতিকূল অবস্থা অতিক্রম করলেও এখন আমরা চট্টগ্রামবাসীর আস্থা অর্জন করতে পেরেছি।শুধু চট্টগ্রাম নয় দেশে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন এসে হার্টের অপারেশন করছেন। হার্টের অপারেশনসহ সকল ধরণের চিকিৎসায় আমরা আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে চলছি। হৃদরোগীদের সকল ধরণের জরুরী সেবা দিতে ২৪ ঘন্টা রয়েছে আমাদের একদল দক্ষ ও দেশবরেণ্য কার্ডিওলজিস্ট ও কার্ডিয়াক সার্জনসহ পুরো টিম।
সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের চীফ কার্ডিওলজিস্ট ডা. আবদুল মোত্তালিব বলেন, আমরা ঢাকা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ছিলাম। ঢাকা থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের রোগীদের সার্বক্ষণিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের নিয়ে এসেছেন।আমরা ২৪ ঘন্টা রোগীদের যে কোন ধরণের সেবা নিশ্চিত করে আসছি।চট্টগ্রামে নিয়মিতই এখানে হার্টের এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাষ্টি,প্রাইমারী এনজিওপ্লাষ্টি,ডিভাইস ক্লোজার ও আইএবিপি এসিস্ট্যেড এনজিওপ্লাষ্টি পিটিএমসি,পিপিএম ও আইসিডি ইমপ্লেনটেশন করছি।
হাসপাতালের চীফ কার্ডিওভাসকুলার সার্জন ডা. সারওয়ার কামাল বলেন, রক্তনালী ও হৃদরোগীদের সকল ধরণের অপারেশন আমাদের এখানে সম্ভব। আমার বলতে পারি,যে অপারেশন আমাদের এখানে হবেনা সেটা বিশ্বের আর কোথাও হবেনা। আমাদের অত্যাধুনিক সকল যন্ত্রপাতি রয়েছে সেই সাথে রয়েছে একদন দক্ষ কার্ডিয়াক সার্জারী টিম। যে কোন জরুরী অপারেশন জন্য আমাদের সকল ব্যবস্থা রয়েছে।আমরাই কসমেটিক পদ্ধতিতে (এমআইসিএস) হার্টের অপারেশন করে থাকি। আমরা এখানে নিয়মিত হার্টের বাইপাস সার্জারী, ওপেন হার্ট সার্জারী , ভাল্ব প্রতিস্থাপন ,ভাল্ব রিপেয়ার,হার্টের টিউমার অপসারন জন্মগত হার্টের অপারেশান এএসডি,ভিএসডি পিডিএ,টট্রালজি ফেলোট,টিজিএ ,পেরি কার্ডিয়াল ইফিউসান অপাশেন এছাড়া কসমেটিক পদ্ধতিতে (বুকের মাঝ খানে নাকেটে পাশ দিয়ে কেটে) হার্টের সার্জারী করে থাকি।
এছাড়াও নিয়মিত রক্তনালীর সকল অপারেশন আমরা করে থাকি যারা মধ্যে রয়েছে,পায়ের ফুলে যাওয়া আকাবাঁকা রক্তনালী,ধমনী শিরার অস্বাভাবিক সংযোগ অপসারন, হাত ও পায়ের সম্পূর্ন বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্তনালীর অপারেশন,উরুর ধমনীর সাথে পায়ের ধমনীর বাইপাস, উরুর ধমনীর সাথে উরুর ধমনীর বাইপাস সংযোগ ,মহাধমনীর সাথে উরুর ধমনীর বাইপাস সংযোগ, রক্তনালীল টিউমার অপসারন,রক্তনালীর অস্বাভাবিক ফুলে যাওয়া অংশের অপারেশন , জরুরী রক্তনালীর অপারেশন,দুর্ঘটনাজনিত কেটে যাওয়া বা ছিঁড়ে যাওয়া রক্তনালীর পূনসংযোগ স্থাপন , হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্তনালী পুনরায় চালু ও এছাড়াও কিডনী রোগীদের ডাইয়ালাইসিস করার জন্য এভি ফিস্টুলা করে থাকি।
হাসপাতালের ল্যাব ডাইরেক্টর সহকারী অধ্যাপক এম এ হাশেম বলেন, সকল রোগীর সুরক্ষা ও নির্ভুল রিপোর্ট প্রদান আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।আমরা সঠিক ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষণের মাধ্যমে, সর্বনিম্ন সময়ে, নির্ভুল রিপোর্ট, সরকার নির্ধারিত মূল্যে মানুষের হাতে তুলে দিতে বদ্ধপরিকর।আমরা নিয়মিতভাবে কোভিড-১৯ টেস্ট করছি।
এসময় উপস্থিতত ছিলেন সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট কার্ডিওলজিস্ট ডা. আখতার হোসাইন,মেডিকেল ডাইরেক্টর ডা. মুজিবুল হক,ডা. কাওয়সার আলম, ডা. নুরুন্নবী হাসপাতালের ল্যাব পরিচালক এম.এ হাসেম,ফিন্যানেন্স ডাইরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার সিকান্দার,ডিজিএম ফাইন্যান্স আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
বিএনএনিউজ২৪/ আমিন