30 C
আবহাওয়া
১১:৫২ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সাগর উত্তাল : ৭ ট্রলার ডুবি, নিখোঁজ ৭

সাগর উত্তাল : ৭ ট্রলার ডুবি, নিখোঁজ ৭

সমুদ্র বন্দর ৩ নম্বর সংকেত

বিএনএ,চট্টগ্রাম: সাগর উত্তাল। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় লঘুচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুর তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।লঘুচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।দেশের কয়েকটি দ্বীপ ও উপকূল জোয়ারের পানিতে ৪-৫ফুট তলিয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুমী বায়ূ বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।

অন্যদিকে মঙ্গলবার(২৭জুলাই) সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ভাসানচর রুটে প্রতিকূল আবহাওয়ার কবলে পড়ে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সাতটি মাছ ধরার ট্রলার নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সাত জেলে নিখোঁজের খবর জানিয়েছে কোস্টগার্ড।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকালে বিভিন্ন সময়ে এসব ট্রলার ডুবে যায়। নিখোঁজ ট্রলারগুলো হলো- বাঁশখালীর হেফাজুল ইসলামের মালিকানাধীন ‘এফবি মুশফিক’, জব্বার ও নন্না মিয়ার মালিকানাধীন ‘আল্লাহর দান’, মো. কেফাতুল্লার মালিকানাধীন ‘মায়ের দোয়া’, ফোরকান ও হেলালের মালিকানাধীন ‘এফবি মায়ের দোয়া’, আলি নেওয়াজ চৌধুরীর মালিকানাধীন নতুন ও নামবিহীন একটি ট্রলার ও ফারুক ও আব্দুল মালেকের মালিকানাধীন ‘এফবি মোরশেদ আলম’।

বাংলাবাজার ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালীর চাম্বল এলাকার ২০টি ট্রলার মাছ ধরার জন্য মঙ্গলবার ভোর ৪ টায় বাংলাবাজার ঘাট থেকে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পরে সকাল ৯টায় ট্রলারগুলো ঝড়ের কবলে পড়ে মুহূর্তের মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে সমুদ্রের পানিতে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় ফিশিং ট্রলারে থাকা মাঝি-মাল্লারা পানিতে ভাসতে ভাসতে অন্য ফিশিং ট্রলারের সহযোগিতায় প্রাণে রক্ষা পায়। তবে এখনো পর্যন্ত ৭ মাঝি-মাল্লা নিখোঁজ রয়েছেন।

এ ব্যাপারে চাম্বল বাংলাবাজার ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি হেফাজতুল ইসলাম বলেন, আজ ভোর ৪টার দিকে ট্রলারগুলো মাছ ধরার জন্য বঙ্গোপসাগরে গেলে সকাল ৯ টার দিকে ঝড়ের কবলে পড়ে মুহূর্তের মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ফিশিং ট্রালারে থাকা মাঝি-মাল্লারা উপকূলে চলে আসলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৭ মাঝিমাল্লা।

স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, ‘এফবি মুশফিক’ আর ‘এফবি মায়ের দোয়া’ ডুবে গেছে। আর এফবি মায়ের দোয়াতে থাকা বাঁশখালী চাম্বল ১ নম্বর ওয়ার্ডের আহমদুল হকের ছেলে আনিছ মাঝি ও একই এলাকার নুর মিয়ার ছেলে মো. আলী এবং নতুন নাম ছাড়া একটি ট্রলারে থাকা চাম্বল ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. একরাম মারা গেছে।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে বিভিন্ন সময়ে উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন এলাকায় ছয়টি ট্রলার ও শেখেরখিল ইউনিয়ন এলাকায় একটি ট্রলার ডুবে যায়। দুপুরে চাম্বল ইউনিয়ন এলাকায় একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি কোস্টগার্ডকে জানানো হয়েছে। বিকেল থেকে তারা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে।’

চট্টগ্রাম কোস্টগার্ডের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লে. কমান্ডার হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা ট্রলার ডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে কতজন মারা গেছেন তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ট্রলারগুলোতে থাকা অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন জেলেকে আশেপাশে থাকা ট্রলারগুলো উদ্ধার করেছে। এখন আবহাওয়া ভালো নয়, তবুও আমরা নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য জাহাজ পাঠিয়ে দিয়েছি।

এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় লঘুচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুর তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
মৌসুমী বায়ূর সক্রিয় প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী তিন দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।অতি ভারী বর্ষণের ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ী এলাকার কোথাও কোথাও ভুমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়ার সতর্ক বার্তায় বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ স্থানে এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়,  মৌসুমী বায়ূর অক্ষের বাড়তি অংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

বিএনএনিউজ/মনির,এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ