বিএনএ,চট্টগ্রাম: সকাল থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোট উৎসব শুরু হয়েছে। তবে ভোট শুরুর একটু পরেই দুইটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে কিছুটা উত্তেজনা বিরাজ করছে ওই কেন্দ্রগুলোতে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ৮টার দিকে লালখান বাজারে একটি কেন্দ্র এবং চকবাজার বিএড কলেজ কেন্দ্রে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ভোটারদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে কারা এ বিস্ফোরণ ঘটায় তা জানা যায়নি।
জানা যায়, লালখান বাজার শহিদনগর স্কুলের ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল ও দলটির বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী এফ কবির মানিকের সমর্থকদের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, পুলিশ এ ঘটনায় ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমকে থানায় নিয়ে গেছে। এছাড়া বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
অভিযোগ উঠেছে, মানিকের পক্ষ নিয়ে লালখানবাজার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীরা আবুল হাসনাত বেলালের নির্বাচী অফিস ভাঙচুর করতে যায়। তখন বেলালের অনুসারীরা বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রথমে তারা হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। পরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় বেলালের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে বেলাল বলেন, ভোটার স্লিপ দেয়ার কাজে যুক্ত তার এজেন্টদের মারধর করা হয়েছে। আমরা তিনটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে মনে করেছিলাম। এর মধ্যে দুটি কেন্দ্রেই হামলা হয়েছে। শহিদনগর স্কুলের পাশাপাশি পুলিশ লাইন্স ভোট কেন্দ্রে পর্যন্ত হামলা হয়েছে। দুটি ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সে হামলায় অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে। আমাদের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ধারালো অস্ত্রের ব্যবহারও হয়েছে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় দিদারুল আলম মাসুম ও বিএনপি প্রার্থী এক হয়ে হামলা চালিয়েছেন বলে দাবি করেন বেলাল।
এদিকে দুই পক্ষে প্রায় ১৫ মিনিট ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি গিয়ে দুই পক্ষকে ধাওয়া নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এ সময় মাসুমের অনুসারীরা মতিঝর্ণার দিতে সরে যান এবং বেলালের অনুসারীরা চলে যান লালখানবাজারের দিকে। বর্তমানে র্যাব-পুলিশ দুই পক্ষের মাঝখানে অবস্থানে নিয়েছে। ভোটগ্রহণ আবার শুরু হয়েছে।
এছাড়া সকাল ১০ টার দিকে চট্টগ্রামের ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আমাবাগন ইউসেপ স্কুল কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আলাউদ্দিন আলো (২৮) নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
এর আগে সকাল ৮টার দিকে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে (সরাইপাড়া) নির্বাচনী বিরোধকে কেন্দ্র করে আপন ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে আরেক ভাই নিহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবু আছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। কেননা ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪১৬টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অবশ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে।
নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছেন প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মূলত তাদের মধ্যেই।
বিএনএনিউজ/মনির