21 C
আবহাওয়া
৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » শেরেবাংলা মেডিকেলে প্রতিদিন গড়ে ৭ শিশুর মৃত্যু

শেরেবাংলা মেডিকেলে প্রতিদিন গড়ে ৭ শিশুর মৃত্যু


বিএনএ বরিশাল: বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এ হাসপাতালে চলতি বছরের গত পাঁচ মাসে জন্মগ্রহণ করেছে ৩ হাজার ৬৮২ জন শিশু। ঠিক একই সময়ের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে এক হাজার ১২ জন। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ৭ জন এবং মাসে ২০২ জন করে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে বৃহত্তর এই হাসপাতালে। যার মধ্যে জন্মের পর ২৮ জনের মধ্যে শিশু মৃত্যুর হার বেশি। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি, শিশু এবং নবজাতক ওয়ার্ড থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে অপরিণত বয়সে জন্মগ্রহণ, অপুষ্টিজনিত সমস্যা ও নিউমোনিয়ায় বেশি শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। প্রসূতি বিভাগ থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের (২০২৩ সালে) গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট ৩ হাজার ৬৮২ জন শিশু জন্মগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে মৃত অবস্থায় জন্ম নিয়েছে ২৭০ জন। অপরদিকে, নবজাতক ওয়ার্ডে মৃত্যু হয়েছে ৬০১ জনের।
এই বিভাগের দায়িত্বরত জ্যেষ্ঠ নার্সরা জানিয়েছেন, ‘জন্মগ্রহণ করা শূন্য থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সী নবজাতকের চিকিৎসা হয় এই ওয়ার্ডটিতে। যে কারণে অন্যান্য ওয়ার্ডের চেয়ে এই ওয়ার্ডে শিশু মৃত্যুর হারও বেশি। নার্সরা আরও জানিয়েছেন, ‘যেসব শিশু অপরিণত বয়সে জন্মগ্রহণ করে, বা জন্মের সময় কান্না না করা, জন্মের পরে দুগ্ধ পান না করা এবং অসুস্থ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা নবজাতকদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হয় নবজাতক ওয়ার্ডে। যে কারণে এখানে মৃত্যুর হার সব সময়ই বেশি। বিশেষ করে বাহির থেকে যেসব নবজাতক এনে ভর্তি করা হচ্ছে, তাদের মৃত্যু বেশি হচ্ছে।
অপরদিকে, ‘হাসপাতালের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তলার দুটি শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হয় ২৯ দিন থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের। এই ওয়ার্ডটিতে গত পাঁচ মাসে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জন শিশুর। এদিকে, হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ শিশু মৃত্যু হয়েছে জানুয়ারি মাসে। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে ১৯৬ জন, মার্চে ১৯৯, এপ্রিলে ২০৭ এবং মে মাসে মৃত্যু হয়েছে ২০২ জন শিশুর।
এ প্রসঙ্গে শিশু ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আশীষ কুমার হালদার বলেন, ‘নবজাতক এবং শিশু মৃত্যুর বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যার মধ্যে নিউমোনিয়া একটি অন্যতম কারণ। বর্তমানে গরমে শিশু ঘামিয়ে ঠান্ডা লেগে জ্বর, কাঁশি হচ্ছে। এ থেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এছাড়া জন্মগতভাবে হার্টের সমস্যা, অপরিণত বয়সে জন্মগ্রহণ, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, ফুসফুস, কিডনি, খাদ্যনালির সমস্যা যাকে সেপ্টিসেমিয়া বলা হয়। শ্বাসকষ্ট এবং খিচুনির কারণেও নবজাতক এবং শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। আবার প্রসবকালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এবং যন্ত্রণায় জন্মের আগে এবং পরে মৃত্যু হচ্ছে শিশুদের।
এ বিষয়ে ডা. আশীষ কুমার হালদার বলেন, ‘মায়ের স্বাভাবিক প্রসব করালেও অবশ্যই যেন হাসপাতালে করানো হয়। এতে মা এবং শিশু দু’জনই ভালো থাকবে। তাছাড়া শিশুর যাতে ঠান্ডা না লাগে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গরমে ঘামিয়ে গেলে বার বার মোছাতে হবে। শিশুকে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে। তাছাড়া বর্তমানে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করা। এজন্য শিশুদের প্রতি যত্ন শীল হওয়ার পাশাপাশি পরিবারকে তাদের প্রতি আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
বিএনএ/ সাইয়েদ কাজল,ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ