বিএনএ ডেস্ক।। মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতীয় দিবস আজ।বাঙালির জাতীয় জীবনে এক গৌরবোজ্জল সোনালী দিন। বহু বছরের পরাধীনতার গ্লানি আর শেকলভাঙ্গার এই দিনটি বাঙালির জাতীয় জীবনে গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। একাত্তরের এ দিনে বিশ্ব মানচিত্রে দেশমাতৃকার স্বাধীন স্বত্তা ফুটে উঠেছিল। এই দিনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ শুরু হয় এবং এরপর নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্জন করে স্বাধীনতার সোনালী সূর্য।
৭১ এর ২৬ শে মার্চে কোটি বাঙালির হৃদয়ে মুক্তি আকাঙ্ক্ষার যে সশস্ত্র প্রদীপটি জ্বলে উঠেছিল, বিজয়ের মধ্যদিয়ে তারই রক্তস্নাত পূর্ণতা ছিল ১৬ই ডিসেম্বরে।৭১ এর অগ্নিঝরা মার্চ। ২৩ বছরের বঞ্চনার বিরুদ্ধে স্বাধীনতার দাবিতে উত্তাল বাঙালিকে মুক্তির মন্ত্র শোনান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চ লাইটের নামে মধ্য রাতে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর হামলে পরে পাকিস্তানি বাহিনী। গণহত্যায় রক্তে রঞ্জিত হয় সবুজ বাংলার শ্যামল প্রান্তর।
সে রাতে গ্রেফতারের আগে ওয়্যারলেসে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে বাঙালি।শুরু হয় মুক্তির যুদ্ধ। ন’মাসের বিরামহীন সংগ্রাম, আত্মত্যাগ আর বীরত্বগাথায় বাঙালি পেল মুক্তির লাল সবুজ পতাকা। পাকিস্তানীদের শাসন-শোষন থেকে মুক্ত হয় বাঙালি জাতি।
পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে জীবন উৎসর্গ করে যারা লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে এনেছেন, পুরো জাতি সম্মান জানাচ্ছে সেই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ডক্টর শিরিন শারমিন চৌধুরী এবং মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি দলও শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।
এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সামরিক কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক,যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।পরে স্বাধীনতার বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ বেদীতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।
এর আগে, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে মিরপুর সেনানিবাসে ৩৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির একটি চৌকস দল ৫০ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। স্বাধীনতা দিবসে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে যুক্ত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী।এবার তাই উদযাপনেও যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। এর সঙ্গে আর একটি নতুন পালক যোগ হয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ।ফলে তলাবিহীন ঝুড়ি’র তকমা থেকে উন্নতির গতিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে ৫০ বছর পূর্ণ করল বাংলাদেশ।বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ যে গতিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে; তার ধারের কাছেও নেই পাকিস্তান।
বিএনএনিউজ/আরকেসি