27 C
আবহাওয়া
৭:৫৮ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বোয়ালখালীতে আগাম তরমুজ চাষে সাফল্য

বোয়ালখালীতে আগাম তরমুজ চাষে সাফল্য

বোয়ালখালীতে আগাম তরমুজ চাষে সাফল্য

।। বাবর মুনাফ ।।

বিএনএ, চট্টগ্রাম: অসময়ে তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সাংবাদিক আবুল ফজল বাবুল। বোয়ালখালীতে কর্ণফুলী নদীর চর বাকলিয়ায় আগাম তরমুজ চাষ করে গত এক মাসে আয় হয়েছে ৬ লাখ টাকা। পরিত্যক্ত এই চরের প্রায় ৬ একর জায়গায় ১৩শ গর্ত তৈরি করে উন্নত জাতের (আনারকলি) তরমুজ চাষ করে এই সফলতার মুখ দেখেছেন তিনি।

আগাম রসালো ফল তরমুজ বিক্রি করে একজন আলোচিত সৌখিন কৃষক বা উদ্যোক্তার পরিচয় বহন করছেন সাংবাদিক আবুল ফজল বাবুল।

তিনি জানান, গত বছরের নভেম্বর মাসে বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহযোগিতায় তরমুজের বীজ বপন করা হয় চরের বুকে। ১৩০০ মাদা তৈরি করে তাতে ৪ হাজার চারা রোপণ করা হয়েছিল। এরপর দুইমাস পরিচর্যায় কাটে। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ফলন বাজারজাত করতে শুরু করি। প্রতি কেজি ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছি। পাইকাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে ৬ হাজার তরমুজ বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি তরমুজ গড়ে ১০০ টাকা হলে ৬ হাজার তরমুজের দাম দাঁড়ায় ৬ লাখ টাকা। ক্ষেতে আরও প্রায় ৩ হাজার তরমুজ রয়েছে। নতুন করে আরও ফলন আসছে। এপ্রিল মাস পর্যন্ত পাওয়া যাবে ফলন।

সাধারণত ডিসেম্বরে আমন ধান তোলার পর জানুয়ারি থেকে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফলন আসে এপ্রিলে। তার আগেই জানুয়ারিতে রসালো তরমুজের ফলন আসে।

আবুল ফজল বাবুল বলেন, অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল সমন্বিত বাগান গড়ার। চরের বুকে সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছি। তরমুজের পাশাপাশি বাদাম, মিষ্টি আলু, সরিষা, পেঁপে, শশা ও ক্ষীরাসহ নানা ধরনের শাক-সবজির আবাদ করেছি।

জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর মাঝে চর বাকলিয়া স্থানীয়দের কাছে বোয়াইল্ল্যার চর নামে পরিচিত। দীর্ঘ দিন ধরে চরটি অনবাদী হয়ে পড়ে আছে। ঝোপঝাড় আর কাটা লতায় ঢাকা ৫২০ একরের চরটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, বোয়ালখালীর মূল ভূ-খণ্ড নৌকা দিয়ে এই চরে আসতে হয়। নদীতে চলছে ড্রেজিং। ড্রেজিংয়ে বালি বিশাল আকৃতির পাইপ দিয়ে ফেলা হচ্ছে এই চরে। এই চরের ঠিক মাঝে বাবুলের গড়ে তোলা তরমুজ ক্ষেত ড্রেজিংয়ের বালির স্তুপের ওপর থেকে দেখা যায়। মহিষের পাল, গরুর পাল দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে চরের মাটিতে। সেই এক অপূর্ব দৃশ্য।

বোয়ালখালীতে আগাম তরমুজ চাষে সাফল্য
তরমুজ হাতে সাংবাদিক আবুল ফজল বাবুল

সাংবাদিক বাবুল সমন্বিত বাগান করার তাগিদে বেছে নেন এই চর। এইজন্য সংঘবদ্ধ করেন প্রায় শতাধিক সমমনা মানুষকে। শেয়ার করেন বাগান গড়ে চরে ফসল ফলানোর। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহকে জানালে তিনি চরটি পরিদর্শন করেন। এরপর তার আন্তরিক পরামর্শ ও সহযোগিতায় নেমে পড়েন চাষাবাদে। এখন সফল হওয়ার পালা।

জমির মালিকের কাছ থেকে ৪০ একর জায়গা ২০ বছরের জন্য চুক্তিতে নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক চাষাবাদ চলছে সেই জমিতে। ইতিমধ্যে ১৩ লাখ টাকা পুঁজি খাটানো হয়েছে। এর মধ্যে তরমুজ বিক্রি করে আয় হয়ে গেছে ৬ লাখ টাকা। আরও বিক্রি হবে প্রায় ৩ লাখ টাকার তরমুজ। সবমিলিয়ে এই বছরই পুঁজি উঠে আসবে।

তরমুজ ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, আগাম তরমুজের বেশ চাহিদা রয়েছে বাজারে। ক্রেতারা কিনছেন। লাভও হচ্ছে।

তথ্যমতে, তরমুজ হৃদরোগীদের জন্য বেশ উপকারী। টাইফয়েড রোগীরা যদি আধাপাকা তরমুজের রস ২ চা চামচ প্রতিদিন খায় তাহলে উপকার পাবে। তরমুজে পটাশিয়াম আছে, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তরমুজে ক্যারোটিনয়েড আছে, যা চোখ ভালো রাখতে সহায়তা করে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ বলেন, চরে বেলে দোঁয়াশ মাটি তরমুজ চাষের জন্য খুবই ভালো। অনাবাদী জমিকে চাষাবাদের উপযোগী করতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। চর বাকলিয়ায় আগাম তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। আশা করি সমস্ত চর জুড়েই চাষাবাদের আওতায় আসবে।

বিএনএনিউজ টুয়েন্টিফোর/হাসনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ