বিএনএ ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সমন্বয়কদের নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকা তিন উপদেষ্টার নেতৃত্বে আগামী মাসে একটি নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করা হবে। আর সেই রাজনৈতিক দল থেকে ছাত্র নেতারা ভোটের লড়াই করবেন। সরকারের উপদেষ্টা ও সমন্বয়করা এখন তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য- উদ্দেশ্য পৌছে দিতে সারাদেশ চষে বেড়াচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় অন্তর্বর্তী সরকারের দপ্তরবিহীন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও যুক্ত হয়েছেন।
শনিবার তিনি নির্বাচনী শো-ডাউনের আদলে চাঁদপুর ও লক্ষীপুরে পথ সভা ও সভা করেছেন। দুপুরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজারে খোলা জীপে দাড়িয়ে এক পথ সভায় ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যারা বাংলাদেশপন্থী, তাদের মধ্যে নির্বাচন হবে। বাংলাদেশ বিরোধী, আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিবাদীদের কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।
তবে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের মাস্টারমাইন্ড খ্যাত দপ্তরবিহীন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ খান। তিনি বলেন, দল গঠন করার এত খায়েশ যদি থাকে, তাহলে কেন উপদেষ্টা হলেন? শুধু তাই নয়, অন্তর্বর্তী সরকারকে কোমর ভাঙা, অযোগ্যে আখ্যায়িত করে নতুন দল গঠনে প্রধান উপদেষ্টার অবস্থান পরিস্কার করার দাবি জানান।
একইদিন রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান বলেছেন, রাজনৈতিক দল গঠন করতে গিয়ে কেউ যদি রাষ্ট্রীয় কিংবা প্রশাসনিক সহায়তা নেন, সেটি জনগণকে হতাশ করবে। অতীত থেকে বেরিয়ে এসে তরুণরা নতুন পথ রচনা করবেন। তবে কোনো প্রশ্নবিদ্ধ পথ নয়। পথটি অবশ্যই স্বচ্ছ হওয়া উচিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিন উপদেষ্টার নেতৃত্বে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রদের কিংস পার্টি গঠনের এই প্রচেষ্টাকে রাজনৈতিক দলগুলো মুখে স্বাগতম জানালেও, ভেতরে ভেতরে মেনে নিতে পারছে না।
রাজনৈতিক দল গুলো, বিশেষ করে বিএনপি মনে করছে ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠন এবং তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে, বর্তমান সরকার নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করতে গড়িমসি করছে। আর ছাত্রদের এই নতুন রাজনৈতিক দল গঠন ও পৃষ্টপোষকতা প্রদান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে—নতুন এক সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা ও দূরদর্শীতা না থাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও বুঝে ওঠতে পারছেন না, তিনি এখন ঠিক কী করবেন?
সৈয়দ সাকিব