বিএনএ ডেস্ক: পদ্মা-যমুনা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে, টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে কিছু এলাকায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নিচু এলাকা। আবার কোথাও পানি কমায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি ২০২১।
বুধবার(২৫ আগস্ট) যমুনা, পদ্মা, আত্রাই, ধলেশ্বরী, মেঘনা ও গড়াই ৯ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এসব নদীসংলগ্ন এলাকার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামি দুই দিনের মধ্যে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি এবং কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি আরিচায় ৫ সেন্টিমিটার ও মথুরায় বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার পানি গোয়ালন্দে ৫৩, সুরেশ্বরে ২৮ ও ভাগ্যকূলে বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এছাড়া, আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ী পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার, মেঘনার পানি চাঁদপুরে ১৯ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার এবং গড়াই নদীর পানি কামারখালী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পরিস্থিতি ২০২১
পদ্মার পানি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৩ মিটার ওপর দিয়ে বইছে। পাবনায় পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। এক সপ্তাহ ধরে পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ফরিদপুরের চর ও নিম্নাঞ্চলে প্রতিদিন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ফলে ভোগান্তিতে রয়েছেন সেসব এলাকার শতাধিক গ্রামের বাসিন্দারা।
সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে চলনবিলসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামে গঙ্গাধর নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নদীপাড়ের মানুষ।
জামালপুর:
জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র ও দশআনী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়া জেলার অভ্যন্তরীণ ইছামতি, হুরাসাগর, গুমানি, চলনবিলসহ বেশ কিছু নদী-বিলের পানিও বেড়েছে।
কুষ্টিয়া :
পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। খাবারের পাশাপাশি সংকট রয়েছে বিশুদ্ধ পানির। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।
টাঙ্গাইল:
টাঙ্গাইলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। যমুনার পানি টাঙ্গাইল পয়েন্টে স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে ধলেশ্বরী, বংশাই ও পুংলী নদীর পানি। এর মধ্যে ধলেশ্বরীর নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার ও পুংলী নদীর পানি বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জের আরিচা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। পাশাপাশি শাখা নদীগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, গাজীখালী ও ইছামতী নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। শিবালয় উপজেলার নতুনপাড়া গ্রামের শতাধিক বাড়ির আঙিনায় হাঁটু পানি জমে গেছে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামি ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের স্থানগুলোতে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।এতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বিএনএনিউজ২৪.কম/আরকেসি,এসজিএন
