39 C
আবহাওয়া
৫:২০ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে আ.লীগ নেতাসহ নিহত ২

রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে আ.লীগ নেতাসহ নিহত ২

টিপুর শরীরে ৮ টি গুলির ছিদ্র, প্রীতির দেহে ডান পাশে গুলি লেগে বাম পাশে বের হয়

বিএনএ, ঢাকা : রাজধানীর শাহজাহানপুরে ইসলামিয়া হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তের গুলিতে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুসহ দু’জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও একজন। নিহত অপরজনের নাম সামিয়া আরেফিন প্রীতি (২৪)।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত সোয়া ১১টায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

রিকশা যাত্রী ছিলেন প্রীতি

নিহত সামিয়া আরেফিন প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী ছিলেন। সড়কে থাকার রিকশার যাত্রী ছিলেন প্রীতি। তিনি এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন।

গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তির নাম মুন্না। তিনি নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর গাড়িচালক বলে জানা গেছে।

মুন্না জানায়, আমরা গাড়িতে করে বাসায় ফিরছিলাম। শাহজাহানপুর বাগিচা মসজিদের দিকে যেতে ট্রেনের সিগন্যালে দাঁড়াই। হঠাৎ বাঁ পাশ থেকে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। প্রথম গুলিটি ভাইয়ের বাঁ হাতে বাঁ পাজুরে লাগে। দুর্বৃত্তরা সবাই মাস্ক ও হেলমেট পরা ছিল। কাউকে চিনতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, তবে কী কারণে, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। আমার ডান হাতে ও পিঠে গুলি লেগেছে।

১, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ডলির স্বামী।

জাহিদুল ইসলাম টিপুর বন্ধু শাহাদাত ঢালী জানান, তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমিক শাখার গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। টিপু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ডলির স্বামী।

মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস বলেন, ঘটনাস্থল সিআইডি ক্রাইম সিনসহ আমরা পরিদর্শন করেছি। তদন্তের স্বার্থে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা দরকার আমরা তা করেছি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্হায় দুইজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাদেরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এঘটনার পর হাসপাতালে স্হানীয় শত শত নেতা -কর্মীরা এসে বিক্ষোভ করে এবং বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি
ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি

ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলার আসামি

মতিঝিল থানার আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সন্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন বলে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে। এজন্য তিনি জেলও খেটেছেন।

যেভাবে খুন হন মিল্কি

২০১৩ সালের ২৯ জুলাই গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণী বিতানের সামনে খুন হন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কী।

২৯ জুলাই রাতে মাত্র ১৪ সেকেন্ডের মধ্যে মিল্কি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দৃশ্যটি ধরা পড়ে শপার্স ওয়ার্ল্ডের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায়।

চিত্রে দেখা যায়, প্রাইভেটকার থেকে মিল্কি নামার পর সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি ও টুপি পরা এক যুবক বাম কানে মোবাইলে কথা বলতে বলতে মিল্কির সামনে এসে ডান হাতে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে প্রথমে একটি গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ মিল্কি বাম দিকে হেলে মাটিতে পড়ে হামাগুড়ি দিতে থাকেন। ওই সময় ওই যুবক মিল্কিকে লক্ষ্য করে আরো সাত/আটটি গুলি ছোঁড়েন। এরপর পেছন থেকে এক যুবক মোটরসাইকেল চালিয়ে এলে গুলিবর্ষণকারী যুবক ওই মোটরসাইকেলের পেছনে উঠে চলে যান। ওই সময় আরেক যুবককেও গুলি ছুড়তে দেখা যায়।

ভিডিও ফুটেজে সাদা পাঞ্জাবি পরা যে যুবককে গুলি ছুড়তে দেখা যায়, তিনি ছিলেন তারেক। তারেককে মটর সাইকেলে করে পালিয়ে যাওয়া যুবকের নাম সোহেল মাহমুদ বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।

কিলিং মিশনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী একজনের গুলিতে তারেক আহত হন। তার সহযোগীরা গুলিবিদ্ধ তারেককে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময় তারেককে চঞ্চলসহ কয়েকজন পাহারা দিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে ওই হাসপাতাল থেকে তারেককে গ্রেফতার করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আরো পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারেক হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।

আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একইসালের ৩০ জুলাই রাত ১২টার দিকে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়। এ মামলায় যুবলীগ নেতা তারেক, জাহিদুল ইসলাম টিপু, চঞ্চল ও আরিফসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার বিষয়ে মামলার চার্জশিটে বলা হয়, রিয়াজুল হক খান মিল্কীর দ্রুত রাজনৈতিক উত্থান হয় এবং মতিঝিল এজিবি কলোনি এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। একারণে আসামি তারেক ওরফে কিলার তারেকের (ক্রসফায়ারে নিহত) এককভাবে বাংলাদেশ রেলওয়ে, পূর্ব মতিঝিল ডিভিশন, ডিপিডিসি, বিএডিসি, খাদ্য, সিএমএমইউ, ক্রীড়া পরিষদ, কৃষিসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে টেন্ডারগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই মিল্পীকে তারেক একমাত্র পথের কাঁটা মনে করে একাধিকবার হত্যার উদ্যোগ নেন। তবে প্রতিবারই তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় মতিঝিল এলাকার বাইরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কিলার তারেক মিল্কীর ড্রাইভার সাগরের স্ত্রী আসামি লোপার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। লোপার মাধ্যমে মিল্কীর অবস্থান জেনেই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

বিএনএনিউজ/আজিজ/এইচ.এম,এসজিএন।

Loading


শিরোনাম বিএনএ