বিএনএ, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে রাজু ওরফে পিচ্চি রাজু ও ট্রেন যাত্রী গোপাল পাল নিহতের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও ছুরি জব্দ করা হয়।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা গোয়েন্দা শাখা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নগরীর সানকিপাড়া এলাকার নুরুল্লাহ’র ছেলে মো. ইব্রাহিম (২০), হাবিবুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩), মো. মোজাম্মেল হকের ছেলে মো. নোমান ওরফে গালকাটা নোমান (২৮), নগরীর কালিবাড়ি গুদারাঘাট এলাকার মো. বিল্লাল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৬)।
জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের ৩ নম্বর লাইনে দাঁড়ায়। এসময় গোপাল পাল নামে এক যাত্রী ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনের অপর প্রান্তে পরিত্যক্ত বগির পেছনে প্রস্রাব করতে যান। সেখানে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) গোপালের স্ত্রী জবা রাণী বিশ্বাস বাদী হয়ে ময়মননিংহ রেলওয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। গোপাল পাল নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার পালবাড়ি এলাকার ললিত চন্দ্র পালের ছেলে।
মামলার পর ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকালে নগরীর কালিবাড়ি এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নেশা করার সময় মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে। এসময় তার দেখানো মতে ঝোপের ভেতর থেকে চাকু জব্দ করে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোহাম্মদ আলী স্বীকার করে যে, গোপাল পাল রেললাইন সংলগ্ন ফাঁকা স্থানে প্রস্রাব করতে গেলে ছিনতাইকারি মোহাম্মদ আলী ঝাপটে ধরে তার কাছ থেকে থাকা নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার সময় বাধা দিলে গোপাল পালকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও ছিনতাইয়ের ৫ মামলা রয়েছে।
ডিবি ওসি আরও বলেন, গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর সানকিপাড়া বাজার এলাকায় পুর্ব শত্রুতার জেরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী রাজিব আহমেদ রাজ ওরফে পিচ্চি রাজুকে (৩৩) কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত রাজিব আহমেদ রাজ ওরফে পিচ্চি রাজু নগরীর লিচু বাগান এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুস সালামের ছেলে।
এই ঘটনার পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারী নিহতের ভাই আল মামুন বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ওই দিন নেত্রকোনা জেলার আটপাড়ার মঙ্গলসিধ এলাকা থেকে ঘটনার সাথে জড়িত তিন আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিচ্চি রাজু হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং তাদের দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও দা জব্দ করে পুলিশ।
মো. ফারুক হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃত চার আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বিএনএ/ হামিমুর রহমান, ওজি /এইচমুন্নী