18 C
আবহাওয়া
২:০৩ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৭ (কক্সবাজার-৪)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৭ (কক্সবাজার-৪)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৭ (কক্সবাজার-৪)

বিএনএ, কক্সবাজার: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর।

আজ থাকছে কক্সবাজার-৪ আসনের হালচাল

কক্সবাজার-৪ সংসদীয় আসনটি দেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৯৭ তম আসন। এই আসনটি ১৯৮৬ সালে গঠিত হয়। পূর্বে এটি রামু উপজেলা-টেকনাফ উপজেলা-উখিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত অবিভক্ত চট্টগ্রাম-১৮ আসন নামে পরিচিত ছিল। ইয়াবা পাচারের রুট ও মিয়ানমারের নাগরিক শরনার্থী শিবিরের জন্য এই দুই উপজেলার নাম দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত।

YouTube player

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৭ শত ১১ জন। ভোট প্রদান করেন ৭৫ হাজার ৬ শত ৪২ জন। নির্বাচনে বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৩৬ হাজার ৮ শত ৭২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৩ হাজার ১ শত ৭৬ ভোট।

ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন: বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি, ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এই নির্বাচনে বিএনপির শাহজাহান চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯ শত ৬১ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৯ শত ৫৫ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৪ হাজার ৭ শত ৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৩০ হাজার ৫ শত ৯৪ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন: বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী হন

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ২ শত ৬৭ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪ শত ৮২ জন। নির্বাচনে বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৮৯ হাজার ৭ শত ৪৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৮ হাজার ৭ শত ৩৪ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের আবদুর রহমান বদি বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭ হাজার ৭ শত ৭৩ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫৬ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবদুর রহমান বদি বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩ হাজার ৬ শত ২৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৭৯ হাজার ৩ শত ১০ ভোট।

দশম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের আবদুর রহমান বদি বিজয়ী হন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবদুর রহমান বদি বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৫ হাজার ৪ শত ৮৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির তাহা ইয়াহিয়া। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৭ হাজার ২ শত ৭৪ ভোট। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে র্নিবাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের শাহীনা আকতার বিজয়ী হন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৬৬ হাজার ১ শত ৪৬ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ১ শত ৮৮ জন। নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৬ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের শাহীনা আকতার, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির আবুল মনজুর, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোহাম্মদ শোয়াইব, হারিকেন প্রতীকে মুসলিম লীগের সাইফুদ্দিন খালেদ, মিনার প্রতীকে ইসলামী ঐক্যজোটের রবিউল হোসাইন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শাহীনা আকতার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৯৬ হাজার ৯ শত ৭৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির শাহজাহান চৌধুরী। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান মাত্র ৩৭ হাজার ১৮ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পঞ্চম, ষষ্ঠ, অষ্টম সংসদে বিএনপি এবং সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।

দৈবচয়ন পদ্ধতিতে জরিপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর কক্সবাজার-৪ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, কক্সবাজার-৪ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৫৩.০০% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৩.৮৬%, বিএনপি ৪৮.৭৫%, জাতীয় পার্টি ১.২১%, জামায়াতে ইসলামী ০.৫২%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৫.৬৬% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৬৯.১৭% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৪.২৮%, বিএনপি ৩০.৩০%,জামায়াতে ইসলামী ১৭.৪৪%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৭.৯৮% ভোট পায়।

২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৩.১৭% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৫.১৯%, ৪ দলীয় জোট ৬৪.৮১%, ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৮.৫৮% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৫৬.৩০%, ৪ দলীয় জোট ৪৩.০৯%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.৬১% ভোট পায়।

কক্সবাজার-৪ আসনে আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় একাদশ সংসদে মনোনয়ন পাননি। তার সহধর্মিনী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীনা আক্তার চৌধুরী আবারও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাইবেন। শাহীনা আক্তার ছাড়া মনোনয়ন চাইবেন তার ছোট ভাই উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলম, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ ও অধ্যাপক হামিদুল হক চৌধুরী।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বদি-শাহীন দম্পতি ছাড়াও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি শাহ আলম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সমাজকর্মী মনোয়ারা বেগম মুন্নী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরী। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা নেতারা বেশির ভাগ বদির বিরোধী হিসেবে পরিচিত। সাজার কারণে এবারও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারবেন না বদি।

বিএনপি এখনও নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল। দলটির বেশিরভাগ নেতাকর্মী কারাগারে, অন্যরা গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সরকার পতনের দাবিতে ভিডিও বার্তা দিয়ে হরতাল- অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি নির্বাচনে এলে তফসিল ফের ঘোষিত হবে এমন ঈঙ্গিত দিয়েছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। সেক্ষেত্রে বিএনপি থেকে এই আসনে মনোনয়ন চাইতে পারেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ, জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, তার ছোট ভাই ও উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী।

জামায়াতে ইসলামী এখনো নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাহার কিংবা স্থগিত কোনটাই করেনি। নিবন্ধনহীন এই দলটি নির্বাচনে অংশ নিলে কক্সবাজার জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির শাহজালাল চৌধুরী অথবা হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের আমীর নুর আহমদ আনোয়ারী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, আলোচিত ও সমালোচিত এই আসনটি ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে এক ধরনের বিশ্বাসের প্রচলন রয়েছে- ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচন থেকে সর্বশেষ ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই আসনে যে দলের প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, সে দলই সরকার গঠন করেছে।

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া এবং টেকনাফ) আসনটি একক কোন রাজনৈতিক দলের ঘাটি নয়। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির আ হ আ গফুর চৌধুরী, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল গণি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির এবং ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির টিকেটে সংসদ সদস্য হন শাহজাহান চৌধুরী। ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী এবং ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবদুর রহমান বদি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। ফলে আওয়ামী লীগের আবদুর রহমান বদি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে নানা বির্তকিত কর্মকান্ডের কারণে আবদুর রহমান বদিকে মনোনয়ন দেয়নি। মনোনয়ন দেন বদির স্ত্রী শাহীনা আকতার চৌধুরীকে। নির্বাচনে শাহীনা আকতার সংসদ সদস্য হন।

আশির দশকে উখিয়া-টেকনাফের রাজনীতির নিয়ন্ত্রক ছিলেন এজাহার মিয়া কোম্পানি। এজাহার মিয়ার রাজনীতির শুরু জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। পরে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। একসময় এমন কথাও প্রচলিত ছিল, এজাহার কোম্পানি যেদিকে যান, সেদিকেই ঘোরে এ অঞ্চলের রাজনীতির চাকা। এই এজাহার মিয়ার দেখানো পথেই হাঁটা শুরু করেন তার বড় ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও মনোনয়ন পাননি তিনি। পরে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ১৯৯৮ সালের দিকে আওয়ামী লীগ নেতাদের সহায়তায় তিনি টেকনাফ পৌরসসভার প্রশাসক হন। ২০০২ সালে টেকনাফ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন বদি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই আব্দুর রহমান বদি হয়ে ওঠেন উখিয়া-টেকনাফের রাজনীতিতে অপ্রতিরোধ্য ও একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী।

গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতা বলয়ের বাহিরে থাকায় বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অনেকটা নড়বড়ে। তবে প্রচুর ভোট রয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর মাধ্যমে হারানো আসন পুনরুদ্ধার করতে চায়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ চায় ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বদি বনাম বদি বিরাধী গ্রুপে বিভক্ত। যা নির্বাচনে প্রভাব পড়বে। রক্ষণশীল আসন হিসাবে পরিচিত এই আসনে ভোট ব্যাংক আছে জামায়াতে ইসলামীর।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে এবং বিএনপি অংশগ্রহণ করলে জাতীয় সংসদের ২৯৭ তম সংসদীয় আসন (কক্সবাজার-৪) আসনটিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির হাড্ডাহাডি লড়াই হবে। বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে খুব সহজে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আরও পড়ুন: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-২৯৬ (কক্সবাজার-৩)

বিএনএনিউজ/ শাম্মী/ রেহানা/ বাবর/ ফরিদ/ ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ