বিএনএ, সাভার: পৌর শহরে অপরাধ প্রবণতা নির্মূলে এলাকাজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিছু যুবক। তার কিছুদিন পর থেকেই চিহ্নিত অপরাধীদের হুমকি-ধমকির শিকার হন তারা। শেষ পর্যন্ত ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে যুবকদের। এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার ধামরাইয়ে পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া এলাকায় ঘটেছে এমন ঘটনা। স্থানীয় সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা দীদার হোসেন ও তার গ্রুপের বিরুদ্ধে এই হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ৯ জনকে অভিযুক্ত করে মঙ্গলবার রাতে ধামরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে সুমন (৩৫) নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।
আহতরা হলেন, ইব্রাহীম ওরফে সুমন মোল্লা (৩২), মমিনুল ইসলাম টিটু (২৮), সোহেল (৩৫)। উভয় ধামরাই পৌর শহরের দক্ষিণ পাড়া এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের দক্ষিণ পাড়া এলাকায় অপরাধ প্রবণতা নির্মূলে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “দক্ষিণ পাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি। তবে সেই উদ্যোগের বিরোধিতা করে অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছিলো। পরে মঙ্গলবার রাতে ১ নং অভিযুক্তের হুকুমে ৪ নং অভিযুক্ত ভুক্তভোগীদেরকে দক্ষিণপাড়া থানা রোড ‘স’ মিলের সামনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে কথাবার্তার এক পর্যায়ে ২নং আসামি তার হাতের রামদা দিয়ে মমিনুল ইসলাম টিটুকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা বরাবরে স্বজোরে কোপ দেয়। এতে তার কপালে জখম হয়ে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এ সময় ৫নং আসামির হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ইব্রাহীম ওরফে সুমন মোল্লাকে মাথায় আঘাত করলে সেও জখম হয়। পরে ৩ নং আসামি ও ৮নং আসামি তাদের হাতে লোহার রড ও বাশের লাঠি দিয়ে সোহেলকে বেদম মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে।
এ সময় অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ৭৫ হাজার টাকা দামের আইফোন, নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে আশপাশের লোকজন আহতদেরকে উদ্ধার করতে আসলে এ ঘটনায় থানায় মামলা করলে বা কেউ সাক্ষী দিলে তাকেও মারধর করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে আহত সুমন মোল্লার বাবা মো. সোবহান মোল্লা বলেন, আমার ছেলেসহ বাকিরা একটা সামাজিক কাজ করছিলো। তবে এলাকার চিহ্নিত অপরাধ প্রবণ লোকজন তাদের এই ভালো উদ্যোগ ভালোভাবে নেয়নি। তারাই ওদেরকে মারধর করেছে। খবর পেয়ে আমি সেখানে গিয়ে আমার ছেলেসহ ৩ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। তবে দুজনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা ও স্থানীয় ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিনুল হাসান গার্নেল বলেন, আমি খবর পাওয়া মাত্র দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছাই মিমাংসা করার জন্য। কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই দিদারের লোকেরা আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
মামলার অভিযুক্ত দিদার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি মামলা হয়েছে। একজন আসামি আটক করা হয়েছে। যুব সমাজ এত সুন্দর একটি উদ্যোগ নিয়েছে এতে সবার প্রশংসা করা উচিত। এ ঘটনায় আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে এই সংস্থা দক্ষিণপাড়ার প্রত্যেক গলির মাথায় লেন নম্বর বাড়ি নম্বরসহ সাইনবোর্ড লাগিয়ে সর্বসাধারনের কাছে ব্যাপক বাহবা পায়। দক্ষিণ পাড়াবাসির সকল মুরুব্বীগণ এবং যুবসমাজ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ এবং আসামিদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি করছে।
বিএনএ/ ইমরান,এমএফ