22 C
আবহাওয়া
২:৪৩ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল সেই শিশু

অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল সেই শিশু

অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল সেই শিশু

বিএনএ, ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতের বৃষ্টির পর রাস্তায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ৯ মাসের শিশু হোসাইন।

স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পর জমে থাকা পানির মধ্য দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন মিজান (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা বেগম (২৫), মেয়ে লিমা (৭) ও ছেলে হোসাইন (৯ মাস)। এ সময় হঠাৎ পানিতে পড়ে গেলে তাদের তুলতে এগিয়ে আসেন অনিক নামে একজন অটোরিকশাচালক। তিনি হোসাইনকে পানি থেকে তুলতে পারলেও লিমাকে তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।

অনেকটা অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় শিশু হোসাইন। মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়ায় প্রাণে রক্ষা পায় শিশু হোসাইন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, নয় মাসের শিশু হোসেনকে পানি থেকে পা ধরে টেনে তুলছেন একজন। পরে পাশে থাকা মহিলাদের কোলে তুলে দেন তিনি।

শিশুটিকে উদ্ধার করে দেওয়া হয় তৃতীয় লিঙ্গের বৃষ্টি নামে একজন ও আমেনার কাছে। তারা বলেন, শিশুটি ভাসছিল, দেখতে পেয়ে তাকে একজন পা ধরে ওঠান। পরে আশপাশের মহিলারা তাকে বাসায় নিয়ে রসুনের তেল মাখায়, যখন তার নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল তখন তাকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বৃষ্টি বলেন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দায়িত্বরত ডাক্তার শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। রাতে তাকে সেখানে নিয়ে যাই, চিকিৎসকরা শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। চিকিৎসার পর সকালে ডাক্তার বলে হোসাইন এখন সুস্থ, তাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। পরে আমি জানতে পারি হোসাইনের দাদা ও নানা মিরপুর মডেল থানায় আছে, তখন আমি এখানে আসি।

আমেনা বেগম বলেন, হোসাইনকে অনিকের মাধ্যমে আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। না হলে একই ঘটনায় তার মা-বাবা ও বোন এবং অনিক মারা গেছে, তার তো বাঁচার কথা ছিল না। এখন হোসাইনকে কোলে নেওয়ার বা দেখাশোনার লোক নেই। হোসাইনের নানা ও দাদা তার মা, বাবা ও বোনের মরদেহ নেওয়ার জন্য থানা ও হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করছে। তাই আমি তাকে আপাতত দেখাশোনা করছি। তাদের কাজ শেষ হলে আমি হোসাইনকে তার নানা ও দাদার কাছে বুঝিয়ে দেব।

নিহত মিজানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের ঝালকাঠিতে। সে গত কয়েক বছর ধরে পরিবার নিয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডে ভাড়া বাসায় বসবাস করত। মিজান মিরপুর এলাকায় ভাসমান দোকানে শরবত বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গতকাল রাতে তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঝিলপাড় বস্তিতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নিজ বাসায় ফেরার পথে মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন:

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল:সংসদীয় আসন-২৩৪ (সিলেট-৬)

সত্যতা নিশ্চিত করেন ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। শিশুটির বাসা মিরপুরে কমার্স কলেজের কাছে ঝিলপাড় বস্তির বিপরীত পাশে বলেও জানান তিনি।

মিরপুর মডেল থানার ডিউটি অফিসার রুহুল আমিন বলেন, গতকাল রাতে বৃষ্টি চলাকালীন মিরপুর এগারোর শাহআলী থানাধীন কমার্স কলেজের বিপরীত পাশের রাস্তায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে চারজনের মৃত্যু হয়।

জানা যায়, ভারী বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ মিরপুরের সড়কও ডুবে যায়। পানিতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়লে বিদ্যুতায়িত হয়ে ওই চারজনের মৃত্যু হয়।

মিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পানিতে পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে একজন শিশু, একজন নারী ও দুইজন পুরুষ রয়েছে। চারজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বিএনএনিউজ/বিএম/এইচ এ মুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ