বিএনএ ডেস্ক: আমরা বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে ভিক্ষা নেই না। তারা কোন দাতা নয়, সুদসহ তাদের ঋণ ফেরত দিতে হয়। এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২২ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা জানান, ৯৬ সালে সরকারে আসার পর এই ‘দাতা’ শব্দটি বন্ধ করে দেন তিনি। কারণ এরা দাতা নয়, উন্নয়ন সহযোগী।
তিনি বলেন, এটা ঠিক ঋণটা স্বল্প সুদে পাই কিন্তু কেউ আমাদের করুণা করেনা। কাজেই আমার নামে বা বাংলাদেশের নামে যে টাকা সে টাকা তাকে দিতে হবে এবং দিতে সে বাধ্য। যে কারণে তাদের কোন আজ্ঞাবহ হয়ে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন না এবং অতীতে ঢাকায় এসে সভা করে যেন তারা অর্থ দিয়ে যায় সে পদক্ষেপও তিনি নিয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ বিষয়ক এক প্রশ্লের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতবড় সেতু করে (পদ্মা সেতু) টাকা খরচ করেছি, আগে টাকা উঠুক তারপর ওটা করব। সরকার প্রধান বলেন, কোনো প্রকল্প নেয়ার আগে সেখান থেকে রিটার্ন কি আসবে সেটা দেখতে হবে। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু আমার মাথায় আছে, যেটা হয়ত করা হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব ব্যাংক তহবিল প্রত্যাহার করে নেয়ার পরে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সেই অচলায়তন ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে পেরেছে, বাংলাদেশ যে পারে সেটা প্রমাণ করতে পেরেছি, এতেই আমি খুশী।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ বা এর কাজের গুণগত মান নিয়ে কোন আপোষ করা হয়নি। এই সেতু নির্মিত হয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে। পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৫ তারিখে আমরা পদ্মাসেতু উদ্বোধন করবো, আমি দেশবাসী সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। কেননা, তাদের সাহসে সাহসী হয়েই নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, উৎসব সবাই করবেন কিন্তু প্রত্যেকে একটু ধৈর্য্য ধারণ করবেন এবং নিয়ম মানবেন এবং কোথাও কোন দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ব্যাংকের একটা এমডি পদ এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে ওই ব্যক্তির কাছে (ড.ইউনুস)। পদটা চলে যাওয়ায় তিনি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করলেন। এছাড়া, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে একটি ফাউন্ডেশনকে (ক্লিনটন ফাউন্ডেশন) ৬ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়ার বিষয়ে তদন্ত শুরু ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকরা বিষয়টির তদন্ত করে দেখতে পারেন, এ বিষয়ে আরো অনেক কিছু পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে তিনিও তথ্য সরবরাহ করে সহায়তা করতে পারেন। আর তিনি তদন্ত করলে সেটাতে কথা উঠতে পারে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এটা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অনেক অর্থনীতিবিদ ও জ্ঞানীগুণী পদ্মা সেতু হবে না বলে সমালোচনা করে বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগের আমলে হবে না, সরকার যদি নিজস্ব অর্থ সংস্থানের মাধ্যমে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে যায়, তা হলে গুণগত মান ঠিক থাকবে না। যারা সমালোচনা করেছেন, তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব। সমালোচনাকারীদের আজ আমি বলব পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসেন, পদ্মা সেতু ঘুরে দেখে যান।
বিএনএ/ এ আর