বিএনএ, ঢাকা : বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে বিজিবি’র খেতাবপ্রাপ্ত ১১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীগণকে সংবর্ধনা, অনুদান ও উপহার প্রদান করা হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে বিজিবিতে বীরত্ব ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য ৫৬ জন সদস্যকে পদক ও পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বুধবার (২১ নভেম্বর) পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি মহাপরিচালকের (ডিজি) বিশেষ দরবার শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের অঞ্চলভিত্তিক এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারবর্গের বয়স বিবেচনা করে এবং আসা যাওয়ার সুবিধার্থে এবার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের অঞ্চল ভিত্তিক সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালকের দরবারে সকল রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ভিটিসি-এর মাধ্যমে সংযুক্ত ছিল। এছাড়াও সারাদেশের প্রত্যন্ত সীমান্তের ৪৫০টি বিওপি এমএস টিমস ও বিজিবি’র নিজস্ব রেডিও লিংকের মাধ্যমে দরবারে সংযুক্ত ছিল।
এদিকে মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবারের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
দরবারে বিজিবি ডিজি প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা কার্যক্রম, পারস্পরিক যোগাযোগ এবং খেলাধুলা ও শারীরিক উৎকর্ষতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সৈনিকদের জীবনমান উন্নয়নে সকল ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সময় তিনি সকলস্তরের বিজিবি সদস্যদেরকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি যে কোনো ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে নিজেকে দূরে রেখে পারিবারিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার নির্দেশনা দেন।
দরবার শেষে বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ এবং কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ অফিসারসহ মোট ৫৬ জন বিজিবি সদস্য এবং অসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ মেডেল (বিজিবিএম), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ মেডেল সেবা (বিজিবিএমএস), প্রেসিডেন্ট বর্ডার গার্ড মেডেল (পিবিজিএম), প্রেসিডেন্ট বর্ডার গার্ড মেডেল সেবা (পিবিজি এমএস) এবং বর্ডার গার্ড অবদান মেডেল (বিজিওএম) এই পাঁচ ক্যাটাগরিতে পদক প্রদান করা হয়।
এরপর অপারেশনাল কর্মকান্ড, চোরাচালান নিরোধ এবং মাদকদ্রব্য আটকের ক্ষেত্রে কৃতিত্ব অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ কোম্পানী-বিওপি কমান্ডার, শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণে অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনকারী সর্বমোট ৩২ জনকে ব্যক্তিগত পুরস্কার প্রদান করা হয়। একইসাথে ৪টি শ্রেষ্ঠ ব্যাটালিয়নকে ট্রফি প্রদান করা হয়। এরপর ৬৪ জনকে মহাপরিচালকের অপারেশনাল ও প্রশাসনিক প্রশংসাপত্র (ইনসিগনিয়াসহ) প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে ৪ জনকে অনারারী সুবেদার মেজর থেকে অনারারী সহকারী পরিচালক এবং ৪ জনকে অনারারী সহকারী পরিচালক থেকে অনারারী উপ-পরিচালক পদে পদোন্নতি প্রদান করে তাদেরকে র্যাংক ব্যাজ পরিধান করানো হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা অথবা উত্তরাধিকারীগণকে সংবর্ধনা, অনুদান ও উপহার প্রদান করেন। এসময় তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন ইপিআর এর সদস্যদের বীরত্বের কথা তুলে ধরেন এবং বিজিবি’র ৮১৭ জন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক এ সময় বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় বহুগুনে বৃদ্ধি করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার চাকুরির ক্ষেত্রেও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং তাঁদের উত্তরসূরীদের অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। একইভাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে চাকুরির ক্ষেত্রেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার এবং উত্তরসূরীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।