।।ইয়াসীন হীরা।।
২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপিস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করেন। ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আত্মসমর্পণ করেন আরও ২১ জন।ইয়াবা ব্যবসায়িদের এমন আত্মসমর্পণ সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ইয়াবা ব্যবসায়িরাও বেশ উৎসাহ নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের আত্মসমর্পেণর বিষয়টি ফলাও করে প্রকাশ করেন! সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া যে সব শর্ত পালনের জন্য অঙ্গীকার করেছিলেন আত্মসমর্পণকারিরা কেউ তা পালন করেননি। জামিনে বেরিয়ে এসে বেশির ভাগই আগের ব্যবসায় ফিরে গেছেন!
প্রথম দফায় আত্মসমার্পণকারিদের মধ্য ৯৮ জনের নাম জানা গেছে।
এরা হচ্ছেন ১. সাবরাং ইউনিয়নের মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে দানু মেম্বার, ২.শাহপরীর দ্বীপের রেজাউল করিম মেম্বার, ৩. সামশু মেম্বার, ৪.সাহেদ রহমান নিপু, ৫. সাহেদ কামাল, ৬. আলী আহমদ, ৭.মৌলভী বশির, ৮.হোসেন আহমদ, ৯. শওকত আলম, ১০. রাসেল, ১১.ডেইল পাড়ার নুরুল আমিন, ১২. মুণ্ডার ডেইলয়ের মনজুর, ১৩. আলীর ডেইলের জাফর আহমদ, ১৪.আবদুল হামিদ, ১৫.শামীম, ১৬.আলমগীর ফয়সাল, ১৭.ডেইল পাড়ার মো. সাকের মিয়া,১৮. নয়াপাড়ার মো. তৈয়ব,
১৯.টেকনাফ সদর ইউনিয়নের আবদু শুক্কুর, ২০.আমিনুর রহমান,২১. দিদার মিয়া,২২. আবদুল আমিন, ২৩.শফিকুল ইসলাম সফিক,২৪. ফয়সাল রহমান,২৫. আবদুর রহমান, ২৬.জিয়াউর রহমান, ২৭.পৌর কাউন্সিলর নুরুল বশর ওরফে নুরশাদ, ২৮. দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার ইমাম হোসেন, ২৯. বড় হাবিব পাড়ার ছিদ্দিক, ৩০.পুরনো পল্লানপাড়ার শাহ আলম, ৩১.অলিয়াবাদের মারুফ বিন খলিল বাবু,৩২. মৌলভী পাড়ার একরাম হোসেন, ৩৩.মধ্যম ডেইল পাড়ার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ৩৪. চৌধুরী পাড়ার মংমং ছেং ওরফে মমচি, ৩৫. দক্ষিণ জালিয়া পাড়ার জুবাইর হোসেন, ৩৬.মধ্যম জালিয়া পাড়ার মোজাম্মেল হক,
৩৭. ডেইল পাড়ার আবদুল আমিন, ৩৮. নাজির পাড়ার এনামুল হক মেম্বার, ৩৯. ভুট্টোর ভাগিনা আফসার, ৪০.আবদুর রহমান, ৪১.সৈয়দ হোসেন, ৪২. মোহাম্মদ রফিক, ৪৩ মোহাম্মদ হেলাল, ৪৪. মৌলভী পাড়ার মো. আলী, ৪৫.নাইটং পাড়ার মো. ইউনুস,৪৬. উত্তর লম্বরীর আবদুল করিম ওরফে করিম মাঝি, ৪৭. সদর কচুবনিয়ার বদিউর রহমান,৪৮. রাজার ছড়ার আবদুল কুদ্দুস,৪৯. জাহালিয়া পাড়ার মো. সিরাজ, ৫০ নতুন পল্লানপাড়ার মো. সেলিম,
৫১.পুরান পল্লান পাড়ার ইসমাইল, ৫২.নাইট্যংপাড়ার আইয়ুব,৫৩. নুর হাবিব, ৫৪. চৌধুরী পাড়ার মোহাম্মদ আলম ,৫৫. তুলাতলীর নুরুল বশর, ৫৬ হাতিয়ার ঘোনার দিল মোহাম্মদ,৫৭. মোহাম্মদ হাছন,৫৮. রাজার ছড়ার হোসেন আলী, ৫৯. উত্তর জালিয়াপাড়ার নুরুল বশর , ৬০. আবদুল গনি,
৬১. জালিয়া পাড়ার মো. হাশেম, ৬২. আলম, ৬৩. নুরুল আলম, ৬৪. শিলবনিয়াপাড়ার আইয়ুব,৬৫. বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজ পড়ার নুরুল আলম, ৬৬. শামলাপুর জুমপাড়ার শফি উল্লাহ, ৬৭. ছৈয়দ আলম, ৬৮. উত্তর শীলখালীর মো. আবু ছৈয়দ,৬৯. হ্নীলা ইউনিয়নের হ্নীলা পশ্চিম লেদার নুরুল হুদা মেম্বার, ৭০.আলী খালীর জামাল মেম্বার,৭১. শাহ আজম, ৭২.রশিদ আহমদ,
৭৩.পশ্চিম লেদার নুরুল কবীর,৭৪. পূর্ব লেদার জাহাঙ্গীর আলম, ৭৫.জাদিমোরার মোহাম্মদ হাসান আবদুল্লাহ,৭৬. লেদার ফরিদ আলম, ৭৭. মো. হোছন, ৭৮. জহুর আলম, ৭৯.আবু তাহের, ৮০ .বোরহান, ৮১ .হামিদ,৮২. রবিউল আলম, ৮৩.আলীখালীর হারুন,
৮৪.হ্নীলা পশ্চিম সিকদার পাড়ার মাহাবুব, ৮৫.বাজারপাড়ার মো. শাহ, ৮৬. পূর্ব পানখালীর নজরুল ইসলাম,৮৭. পশ্চিম পানখালীর নুরুল আবছার, ৮৮.ফুলের ডেইলের রুস্তম আলী,৮৯. আলী নেওয়াজ, ৯০. আবু তৈয়ব, ৯১.রমজান, শাহপরীর দ্বীপের নুরুল আমিন,৯২.ডেইলপাড়ার জামাল হোসেন, ৯৩. টেকনাফ সদরের নুরুল আমিন, ৯৪. নাইট্যং পাড়ার রহিম উল্লাহ, ৯৫. মাঠপাড়ার কামাল,৯৬.দক্ষিণ নয়াপাড়ার নূর মোহাম্মদ,৯৭পশ্চিম সিকদারপাড়ার ছৈয়দ আহমদ, ৯৮.কক্সবাজারের শাহজাহান আনসারী।
দ্বিতীয় দফা আত্মসমর্পণ করেছে যারা
২০২০ সালের ৩ ফেরুয়ারি টেকনাফের ২১ জন তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ি আত্মসমর্পণ করেন। এর মধ্য ২০ জনের নাম জানা গেছে। আত্মসমার্পনকারিরা ২১ হাজার ইয়াব, ১০ টি অবৈধ অস্ত্র, ৩০ রাউন্ড গুলি জমা দেন।
আত্মসমর্পণকারিরা হচ্ছে – ১. টেকনাফ মৌলভী পাড়ার আবুল কালাম প্রকাশ কালা সওদাগর , ২.আব্দুল আমিন প্রকাশ আবুল, ৩. সাবরাং লেজির পাড়ার মো. ইদ্রিস , ৪.টেকনাফ পৌর এলাকাস্থ চৌধুরী পাড়ার লামার বাজারের মো. ইসমাঈল, ৫.সাবরাং খয়রাতি পাড়ার মো. সাদ্দাম, ৬.মৌলভীপাড়ার বশির আহমদ , ৭. সাবরাং সিকদার পাড়ার আব্দুল গফুর , ৮. মৌলভীপাড়ার মো. রিদুয়ান ,৯. উত্তর লম্বরীর মোহাম্মদ তৈয়ব প্রকাশ মধু তৈয়ব (৩৮), ১০. হ্নীলা ফুলের ডেইলের নুর মোহাম্মদ ,১১. হ্নীলা সিকদার পাড়ার ঈমান হোছন (৩০), ১২.কক্সবাজার ঝিলংজাস্থ লারপাড়ার ঈমান হোছন , ১৩. টেকনাফ মৌলভী পাড়ার আব্দুর রাজ্জাক , ১৪. হোয়াইক্যং পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়ার শাহাদাত হোসেন , ১৫.টেকনাফ মৌলভীপাড়ার মোহাম্মদ রাসেল প্রকাশ হাজী রাসেল , ১৬.ফজল করিম , ১৭.পুরান পল্লান পাড়ার আব্দুল নুর ,১৮. টেকনাফ বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন মাঠ পাড়ার মো. জাহেদ উল্লাহ , ১৯. সাবরাং সিকদার পাড়ার মো. হোসেন প্রকাশ কালু ২০. হ্নীলা ঊলুচামরী কোনার পাড়ার মিজানুর রহমান ।
যে সব শর্তে আত্মসমার্পণ
১. নিজের হেফাজতে থাকা সব ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্র পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
২. আত্মসমর্পণের আগের মামলা ও বিচার কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
৩. ইয়াবা ব্যবসায় নিজের বা পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে অর্জিত সব সম্পদ দুদক, সিআইডির মানি লন্ডারিং শাখা ও এনবিআরের মাধ্যমে যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৪. আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় দায়ের হওয়া মামলায় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে সহায়তা দেয়া হবে।
৫. যেসব মাদক ব্যবসায়ী এখনও সক্রিয় তাদের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে।
৬. আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত হলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকায় মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড করতে হবে।
৭. ভবিষ্যতে কখনও মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত হওয়া যাবে না।
৮. আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় তাদের বিরুদ্ধে যে মামলাটি হবে, সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে তাদের আইনগত সুবিধা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
চলবে
আগের পর্বসমূহ :
আত্মসমর্পণকারিরা ফের ইয়াবা ব্যবসায়! পর্ব-৯
বদির ৫ ভাইসহ ২৫ স্বজন ইয়াবা ব্যবসায়ি! পর্ব-৮
রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ ও সাংবাদিকের সঙ্গে ইয়াবা ডন সাইফুলের সখ্য! পর্ব- ৬
সিআইপি সাইফুল ও বাংলাদেশে ইয়াবার আগমন! পর্ব-৫
টেকনাফের ৮০ শতাংশ মানুষ ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত! পর্ব-৪
টেকনাফের অর্ধশত রুটে আসে ইয়াবা!- পর্ব- ৩
মডেল-নায়িকা-শিল্পী ও শিক্ষার্থীরা কেন সেবন করে ইয়াবা? পর্ব-২
‘ইয়াবা’ কেন জনপ্রিয় মাদক? পর্ব-১
বিএনএনিউজ২৪,জিএন