24 C
আবহাওয়া
৬:২৩ পূর্বাহ্ণ - মে ৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » শীতকে সামনে নিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ!

শীতকে সামনে নিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ!


বিএনএ ডেস্ক : দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি না থাকলেও  শীত বাড়ার সাথে সাথে  এ ভাইরাসের নিয়ন্ত্রণহীন পড়ে তা নিয়ে শঙ্কিত  স্বাস্থ্য অধিদফতর ও দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের গতি ও মৃত্যু কমেছে ঠিকই, তবে ফের তা বেড়ে যাওয়া বিচিত্র কিছু নয়। স্বাস্থ্যবিধির প্রতি মানুষের অনীহা, নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘ডেল্টা প্লাস’ ও শীতের প্রভাবে করোনা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শীতে করোনা আবার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সংক্রমণ যাতে না বাড়তে পারে সেজন্য মাস্ক পরাসহ সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।

শুক্রবার(১৯ নভেম্বর ) স্বাস্থ্য  অধিদপ্তরের সর্বশেষ আপডেট থেকে জানা যায়, এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৭১১ জনের করোনা শনাক্ত হলো।মারা গেছে ২৭ হাজার ৯৪৬ জন।

বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার ২৪ ঘন্টায়  দেশে করোনায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৫৩ জনের শরীরে।

দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক তথ্য না থাকলেও অনেকেই আশঙ্কা করছেন, শীতকালের আবহাওয়ায় বাংলাদেশে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তবে গত বছর শীতে দেশে সংক্রমণ খুব একটা বাড়েনি। তারা বলছেন, শীতে আর্দ্রতা, সূর্যের তাপ, ভিটামিন ডিয়ের অভাব এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ শীতকালে অন্যান্য ভাইরাস ও ফ্লু জাতীয় শ্বাসকষ্টের রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ফলে এ সময় মানুষ করোনা ভাইরাস নিয়ে আরো বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে।

এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘শীতে সংক্রমণ বাড়বে কি না তা বলা যাচ্ছে না। তবে সামনের দিনগুলোতে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে করোনার সংক্রমণ আমাদের দেশে স্বস্তিজনক অবস্থায় রয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দেড় শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু আমাদের সতর্কতায় ঢিলে দেয়ার ন্যূনতম কোনো অবকাশ নেই। যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড, ইউক্রাইন এসব জায়গায় কিন্তু সংক্রমণ ফের বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘সংক্রমণের নিম্নগতি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক সংবাদ হলেও এতে আত্মতুষ্টির কোনো কারণ নেই| আমাদের অবশ্যই জনস্বাস্থ্য এবং জনস্বার্থ রক্ষায় সচেতন হতে হবে এবং দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত শতভাগ কার্যকর ভ্যাকসিন হাতে না পাওয়া যায় ততক্ষণ পর্যন্ত প্রচলিত সবরকমের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুল আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ‘আমাদের আশপাশের বিভিন্ন দেশে করোনার সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বগতি অবস্থায় রয়েছে। তাই আমাদের দেশ থেকে করোনা চলে গেছে—এটা বলা যাবে না। গত বছরের এই সময় আমাদের সংক্রমণ কিন্তু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের ৮ মার্চে দেশে প্রথম তিন জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে  তার ঠিক ১০ দিন পর প্রথম রোগীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়। এরপর থেকে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী-নিম্নমুখী হলেও ধারণা করা হচ্ছিল ওই বছরের শেষের দিকে দিকে শীত পড়লে বাড়বে করোনার প্রকোপ। কিন্তু ধারণা ভুল প্রমাণ করে উল্টো দেশে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে চলতি বছরের মার্চের শেষ দিক পর্যন্তও এই ধারা নিম্নমুখীই ছিল। কিন্তু করোনার চরিত্রটা বদলাতে থাকে মে মাসের দিকে—যা টানা কয়েক মাস দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে।

এ দিকে করোনার বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেখা যায়, করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আগামী সোমবার থেকে অস্ট্রিয়া পুরোপুরি লকডাউন শুরু করতে যাচ্ছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ বলেছেন, দেশটিতে পূর্ণ লকডাউন ২০ দিন চালু থাকবে। আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টিকা নিতে আইনি বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হবে।

এদিকে লকডাউনে অস্ট্রিয়ার জনগণকে বাড়িতে থেকে কাজ করতে হবে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া দোকানপাট বন্ধ থাকবে। শিশুদের জন্য স্কুল খোলা থাকবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর লকডাউনের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।

এছাড়া ইউরোপজুড়ে আবারও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় অনেক দেশই নানা বিধিনিষেধ জারি করছে।

বিএনএ/ ওজি

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ