22 C
আবহাওয়া
১১:০২ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » বিষধর রাসেলস ভাইপার কামড়ালে করণীয়

বিষধর রাসেলস ভাইপার কামড়ালে করণীয়


বিএনএ, ঢাকা: দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা হয়েছে। জলাবদ্ধতা, যোগাযোগ বন্ধ হয়ে বিপর্যস্ত অসংখ্য মানুষের জীবন। এমন অবস্থায় উপদ্রব বেড়েছে বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের। বিষধর এই সাপটির দেখা মিলছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এছাড়া বিষধর এ সাপটির আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বিশেষ করে ক্ষেতের ফসল কাটতে গেলে চাষিরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অন্তত ২৫টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে রাসেলস ভাইপার। প্রায়শই এসব এলাকায় এ সাপের দংশনে মৃত্যুর খবর আসছে।

ভারতে প্রতি বছর যে পরিমাণ সাপে কাটার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তার মধ্যে অন্তত ৪৩ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় প্রতি বছর মোট সাপে কাটার মৃত্যুর ঘটনার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ রাসেলস ভাইপারের কারণে হয়ে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এখনো এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে গত এক দশকে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে আক্রান্ত হন ২৩৫ জন, এর মধ্যে মারা যান ৫৯ জন। গত বছরই এই সাপের কামড়ে মারা যান ৫০ জন।

বাংলাদেশে যেসব সাপ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বিষাক্ত বলে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন।

সাধারণত কৃষি জমিতে থাকে বলে মানুষ অনেক সময়ই সাপের গায়ে পা দেন বা না জেনে একে বিরক্ত করেন। তখন রাসেলস ভাইপার বিপন্ন বোধ করলে আচমকা আক্রমণ করে বসে। এ জন্য ধানক্ষেত বা গমক্ষেতে কাজে নামার আগে লম্বা বাঁশ দিয়ে জায়গাটি নাড়িয়ে নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ক্ষেতে নামার সময় গামবুট পরে, জিনসের ট্রাউজার পরে কাজে নামতে হবে। এতে সাপের কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক মোহাম্মদ হাসান তারিক বলেন, রাসেল ভাইপারের দংশনের শিকার ব্যক্তির কিডনি দ্রুত অকেজো হতে শুরু করে। শরীর জ্বালাপোড়া করার পাশাপাশি দংশনের স্থানে পচন ধরে।

একইসঙ্গে দংশনের শিকার ব্যক্তির রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া না হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাঁচানো সম্ভব হয় না।

সাপটির দংশনের শিকার ব্যক্তিদের চিকিৎসার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে চিকিৎসক আরও বলেন, রাসেল ভাইপারের এন্টিভেনম থাকলেও সেটা খুব একটা কাজ করে না।

২০১৫ সালের দিকে আমরা প্রথম রাসেল ভাইপারে কামড়ানো রোগী পেয়েছিলাম। সে সময় আক্রান্ত হাত-পা কেটে ফেলেও রোগীকে বাঁচানো যায়নি। তাই সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ।

ভাইপার রাসেলস দংশন করলে করণীয় সম্পর্কে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সুপারনিউমেরারি অধ্যাপক মো. ফরিদ আহসান বলেন, কামড়ে যদি দাঁত বসে যায়, তাহলে ক্ষতস্থানের ওই জায়গাটিসহ ওপর-নিচের খানিকটা জায়গা নিয়ে হালকা করে ব্যান্ডেজ দিয়ে পেঁচিয়ে দিতে হবে। নড়াচড়া করা যাবে না। রোগীকে সাহস দিতে হবে। হাঁটা-চলাচল একেবারেই বন্ধ করে দিতে হবে। যাতে রক্ত চলাচলটা একটু কম হয়। এভাবে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

অধ্যাপক মো. ফরিদ আহসান আরও বলেন, গ্রামাঞ্চলের কোথাও যদি গাড়ি না পাওয়া যায়, তাহলে মোটরসাইকেলে রোগীকে চালক ও আরেক আরোহীর মাঝে বসিয়ে নিতে হবে। তাহলে একটু দ্রুত হবে।

ফরিদ আহসান জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া হয় না। অনেকটা দেরি হয়ে যায়। তখন এটা একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এই সাপের বিষ এমনই বেশি যে একসঙ্গে শরীরের অনেকগুলো অঙ্গ আক্রান্ত হয়ে যায়।

বিএনএ/এমএফ/হাসনা

Loading


শিরোনাম বিএনএ