বিএনএ, ঢাকা: সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম মাকসুদুল আলমকে কমিটির প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদ্ন্ত কমিটি গঠন করেছে হাইকোর্ট। রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানের মৃত্যুর কারণ জানতে এ কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কুমার দেবুল দে। আরও ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ বলেন, ‘আগামী ২০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রেখেছেন আদালত। এ সময়ের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি ‘লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরল না আয়ান : খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু’ শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপে একটি জাতীয় দৈনিক। প্রকাশিত এই প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ।
রিটে শিশুটির পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়। পরে রিটে আবেদনকারী হিসেবে শিশুটির বাবা মো. শামীম আহমেদকে আবেদনকারী হিসেবে যুক্ত করে সম্পূরক আবেদন করা হয়।
এ আবেদনে প্রাথমিক শুনানির পর গত ১৫ জানুয়ারি রুলসহ আদেশ দেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ। আয়ানের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে সাত দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সারা দেশে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত বা অনুমোদনহীন কতগুলো বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে, সে বিষয়েও একটি প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এক মাসের মধ্যে এ তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া গত ১৫ বছরে ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলাজনিত কারণে কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তিন মাসের মধ্যে সে তালিকাও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে দিতে বলা হয়।
আর শিশু আয়ানের মৃত্যুতে ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শিশুটির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে আদালত রুল জারি করেন। এ আদেশের পর আয়ানের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত ২৯ জানুয়ারি চার সদস্যবিশিষ্ট অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়। শুনানির সময় প্রতিবেদনের সুপারিশকে ‘খুবই হাস্যকর’ এবং প্রতিবেদনটিকে ‘এক ধরনের আইওয়াশ’ বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
আদালত এ-ও বলেন, ‘এতে (প্রতিবেদনে) নেগলিজেন্স (আয়ানের চিকিৎসায়) দেখা যাচ্ছে। শুনানির পর আদালত গত ১১ ফেব্রুয়ারি আদেশের জন্য রেখেছিলেন। এর মধ্যে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক নিয়ে প্রতিবেদন দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; যা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, দেশে অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকের সংখ্যা সংখ্যা এক হাজার ২৭টি। আর নিবন্ধিত হাসপাতাল-ক্লিনিক রয়েছে ১৫ হাজার ২৩৩টি।
বিএনএনিউজ/ রেহানা/ বিএম