বিএনএ, রাবি: ‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক দূরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’এই প্রতিপাদ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উদযাপিত হয়েছে ‘শেখ রাসেল দিবস’। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নানা আয়োজনে পালিত হয় দিবসটি।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮ টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং শেখ রাসেল মডেল স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক শোভাযাত্রা স্কুল প্রাঙ্গণে যায়। শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-উপাচার্য প্রফেসর মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর (অব.) মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য সেখানে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মোনাজাত ও স্কুল প্রাঙ্গণে ফুল গাছের চারা রোপণ করেন।
সকাল ৯টায় স্কুল প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ। স্কুলের অধ্যক্ষ লিসাইয়া মেহ্জবিনের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. আবদুস সালাম, ছাত্র-উপদেষ্টা এম তারেক নূর, প্রক্টর প্রফেসর মো. আসাবুল হক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর প্রদীপ কুমার পাণ্ডেসহ অনুষদ অধিকর্তা ও বিভাগীয় সভাপতি, সহকারী প্রক্টর, সিন্ডিকেট সদস্য ও প্রাধ্যক্ষ, বিশিষ্ট শিক্ষক ও কর্মকর্তা, স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘শেখ রাসেল ছিলো আদর্শ পিতার যোগ্য সন্তান। তিনি বেঁচে থাকলে আজ হয়তো জাতির নেতৃত্ব দিতেন, দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় কাজ করতেন। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য ৭৫’র ১৫ আগস্টে ঘাতকরা ১০ বছরের শিশু রাসেলকেও রেহাই দেয়নি, হত্যা করেছিল নির্মমভাবে। ঘাতকরা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারীদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে। কিন্তু তারা সফল হয়নি। রাসেল আজ বিশ্বে অধিকারবঞ্চিত শিশুদের প্রতীক ও মানবিক সত্ত্বা হিসেবে সবার মধ্যে বেঁচে আছে।’
উপাচার্য বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক কারণে বঙ্গবন্ধুকে জীবনের দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়েছে কারাগারে। এজন্য শিশু রাসেল পিতার সান্নিধ্য ও আদর-যত্ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু সে ছিল পরিবারের অন্যদের মতো বিনয়ী ও সহজ-সরল জীবন যাপনে অভ্যস্ত। উপাচার্য শেখ রাসেল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করা ও বিশেষ ট্রাইবুন্যালে তাদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী সকল শিশুর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
উপ-উপাচার্য ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, শেখ রাসেল ছিল এক হাস্যজ্জোল প্রাণচঞ্চল শিশু যাকে আমরা হারিয়েছি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে কালভোরে। সেদিন ছোট্ট শিশু রাসেলও খুনিদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। রাসেল তো বাঁচতে চেয়েছিল কিন্তু ঘাতকরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শেখ রাসেল আজ আর আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু আছে তার স্মৃতি। বাংলাদেশের সকল শিশুর মধ্যে আজও বেঁচে আছে শেখ রাসেল। রাসেলের চেতনায় শিশুরা যেন গড়ে উঠে এমনটি আশা করেন উপ-উপাচার্য।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান ও জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়। রাবি মতিহার উদ্যানে উপচার্য ও উপ-উপাচার্য দুটি বৃক্ষরোপণ করেন। পরবর্তীতে, উপাচার্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে ‘শেখ রাসেল দেয়ালিকা’র পাঠ উন্মোচন করেন।
প্রসঙ্গত, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২১ সন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।
বিএনএ/সাকিব, এমএফ