19 C
আবহাওয়া
৯:১৯ অপরাহ্ণ - জানুয়ারি ৯, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » আবারও ছুটির ঘণ্টা!

আবারও ছুটির ঘণ্টা!

ছাত্রী

বিএনএ চাঁদপুর: ১৯৮০ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমান পরিচালিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘ছুটির ঘণ্টা’। চলচ্চিত্রের গল্পে দেখা যায়, ঈদের ছুটি ঘোষণার দিন ১২ বছরের ছাত্র খোকন স্কুলের টয়লেটে আটকা পড়ে। টানা ১১ দিন ভয়াবহ কষ্টে কাটে তার। ক্ষুধার জ্বালায় বই-খাতা, টাকা আর টয়লেটে পড়ে থাকা কাগজও খেয়ে ফেলে। ১১ দিন পর খোকনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় প্রায় এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের হোসেনপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী শারমিন টয়লেটে আটকা পড়ে। সে কথা বলতে পারে না। এ কারণে বিদ্যালয়ের ছুটি শেষে টয়লেটে তালা লাগানোর সময় কেউ টের পায়নি। টানা ১১ ঘণ্টা বাথরুমে থাকার পর বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

শারমিনের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, পার্শ্ববর্তী কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর ইউনিয়নের আশ্রাফপুর দক্ষিণ পাড়া হাজী বাড়ির আনোয়ার হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তার। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুল ছুটির পর টয়লেটে ঢোকে। কিন্তু বের হওয়ার আগেই বিদ্যালয়ের আয়া শাহানারা আক্তার শানু বাইরে থেকে তালা মেরে দেন। কথা বলতে না পারায় কাউকে ডাকতেও পারেনি শারমিন।

এ সময় বারবার কথা বলার চেষ্টা করতে গিয়ে তার গলা ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। ছুটির পর বাড়ি না ফেরায় তার বাবা ওই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্রী ও আত্মীয়ের বাড়িতে খুঁজতে থাকেন। রাত ১০টার পর স্থানীয় আল আমিন বিদ্যালয়ের পাশে ঘুরতে আসলে টয়লেটে আওয়াজ শুনে শারমিনের উপস্থিতি টের পায়। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন তালা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে।

শারমিনের বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মেয়েকে খুঁজেছি। বিদ্যালয় ছুটির পর শারমিন বাড়ি না ফেরায় সহপাঠী ও স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নিয়েছি। আমার মেয়ে বারবার লোকজন ডাকার চেষ্টা করতে গিয়ে তার গলা ও মুখ রক্তাক্ত হয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আল আমিন জানান, রাতে পুলের ওপর ঘুরতে গিয়ে বিদ্যালয়ের টয়লেটে কারও শব্দ শুনতে পাই। মোবাইলের টর্চ জ্বেলে ভেন্টিলেটরের ফাঁকে মানুষের হাত দেখে প্রথমে ভূত ভেবে চমকে উঠি। পরে এলাকার লোকজনকে ডেকে এনে তালা ভেঙে শারমিনকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার মুখের মাস্ক রক্তে ভেজা ছিল।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আমীর হোসেন জানান, আমরা সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ছিলাম। শারমিনের ছুটি হয়েছে দুপুর ১২টায়। এরপর ওই টয়লেটে আমাদের দুই জন ম্যাডামও গিয়েছেন। কিন্তু তারা বলছেন সেখানে কাউকে দেখেননি। এমনকি দীর্ঘক্ষণ মেয়েটিকে না পাওয়ার বিষয়টি অভিভাবকও আমাদের জানাননি। তারা যদি আমাদেরকে জানাতেন তাহলে বিদ্যালয়ে খুঁজে দেখতাম। এ ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে। আমরা দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আগামী রবিবার সরেজমিন তদন্তে যাবো। দায়িত্ব পালনে কারও অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ